প্রায়শ্চিত্ত-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

কলিকাতার ধনীগৃহে এবং পল্লীগ্রামের গৃহস্থঘরে বিস্তর প্রভেদ। কিন্তু, বিন্ধ্যবাসিনী একদিনের জন্যও ভাবে অথবা আচরণে অসন্তোষ প্রকাশ করিল না। প্রফুল্লচিত্তে গৃহকার্যে শাশুড়ির সহায়তা করিতে লাগিল। তাহাদের দরিদ্র অবস্থা জানিয়া পিতা নিজ ব্যয়ে কন্যার সহিত একটি দাসী পাঠাইয়াছিলেন। বিন্ধ্যবাসিনী স্বামীগৃহে পৌঁছিয়াই তাহাকে বিদায় করিয়া দিল। তাহার শ্বশুরঘরের দারিদ্র্য দেখিয়া বড়ো-মানুষের ঘরের দাসী প্রতি মুহূর্তে মনে মনে নাসাগ্র … বিস্তারিত পড়ুন

প্রায়শ্চিত্ত-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-তৃতীয় পরিচ্ছেদ

অপমান এবং অবসাদে অবনত হইয়া বিন্ধ্য শ্বশুরবাড়ি ফিরিয়া আসিল। সেখানে পুত্রবিচ্ছেদকাতরা বিধবা শাশুড়ির সহিত পতিবিরহবিধুরা বধূর ঘনিষ্ঠতর যোগ স্থাপিত হইল। উভয়ে পরস্পর নিকটবর্তী হইয়া নীরব শোকের ছায়াতলে সুগভীর সহিষ্ণুতার সহিত সংসারের সমস্ত তুচ্ছতম কার্যগুলি পর্যন্ত স্বহস্তে সম্পন্ন করিয়া যাইতে লাগিল। শাশুড়ি যে পরিমাণে কাছে আসিল পিতামাতা সেই পরিমাণে দূরে চলিয়া গেল। বিন্ধ্য মনে মনে অনুভব … বিস্তারিত পড়ুন

নিশীথে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৩য় অংশ

তখন বনচ্ছায়াতলে পাণ্ডুর বর্ণে অঙ্কিত সেই শিথিল-অঞ্চল শ্রান্তকায় রমণীর আবছায়া মূর্তিটি আমার মনে এক অনিবার্য আবেগের সঞ্চার করিল। মনে হইল, ও যেন একটি ছায়া,ওকে যেন কিছুতেই দুই বাহু দিয়া ধরিতে পারিব না। এমন সময় অন্ধকার ঝাউগাছের শিখরদেশে যেন আগুন ধরিয়া উঠিল; তাহার পরে কৃষ্ণপক্ষের জীর্ণপ্রান্ত হলুদবর্ণ চাঁদ ধীরে ধীরে গাছের মাথার উপরকার আকাশে আরোহণ করিল; … বিস্তারিত পড়ুন

পাত্র ও পাত্রী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

ইতিপূর্বে প্রজাপতি কখনো আমার কপালে বসেন নি বটে, কিন্তু একবার আমার মানসপদ্মে বসেছিলেন। তখন আমার বয়স ষোলো। তার পরে, কাঁচা ঘুমে চমক লাগিয়ে দিলে যেমন ঘুম আর আসতে চায় না, আমার সেই দশা হল। আমার বন্ধুবান্ধবরা কেউ কেউ দারপরিগ্রহ ব্যাপারে দ্বিতীয় এমন-কি, তৃতীয় পক্ষে প্রোমোশন পেলেন; আমি কৌমার্যের লাস্ট বেঞ্চিতে বসে শূন্য সংসারের কড়িকাঠ গণনা … বিস্তারিত পড়ুন

পাত্র ও পাত্রী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় অংশ

আমার পরিণয়ের পথে গোড়াতেই এই বিঘ্ন— তার পরে আমার প্রতি বারেবারেই প্রজাপতির ব্যর্থ-পক্ষপাত ঘটেছে। তার বিস্তারিত বিবরণ দিতে ইচ্ছা করি নে— আমার এই বিফলতার ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত নোট দুটো-একটা রেখে যাব। বিশ বছর বয়সের পূর্বেই আমি পুরা দমে এম. এ. পরীক্ষা পাস করে চোখে চশমা পরে এবং গোঁফের রেখাটাকে তা দেবার যোগ্য করে বেরিয়ে এসেছি। বাবা … বিস্তারিত পড়ুন

পাত্র ও পাত্রী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৩য় অংশ

না, মানুষ চলে। সেই জীবাণুর পরিবর্ধিত সংস্করণের সঙ্গেই কি বিধাতা হতভাগ্য পুরুষমানুষের বিবাহের সম্বন্ধ পাতিয়েছেন। এ দিকে বয়স যত বাড়তে চলল বিবাহ সম্বন্ধে দ্বিধাও তত বেড়ে উঠল। মানুষের একটা বয়স আছে যখন সে চিন্তা না করেও বিবাহ করতে পারে। সে বয়সে পেরোলে বিবাহ করতে দুঃসাহসিকতার দরকার হয়। আমি সেই বেপরোয়া দলের লোক নই। তা ছাড়া … বিস্তারিত পড়ুন

পাত্র ও পাত্রী-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৪র্থ অংশ

আপনাকে উৎসর্গ করতে কিছুমাত্র কৃপণতা করবে। যে মেয়ের বড়ো রকমের আশা আছে তারই আশার অন্ত থাকে না। কিন্তু, এই দীপালির দীপটি মাটির, তাই আমার মতো মেটে ঘরের কোণে তার শিখাটির অমর্যাদা হবে না। সন্ধ্যার সময় আলো জ্বেলে বিলিতি কাগজ পড়ছি, এমন সময় খবর এল, একটি মেয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছে। বাড়িতে স্ত্রীলোক কেউ নেই, … বিস্তারিত পড়ুন

প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

এই কলেজে ছেলেমেয়েদের মেলামেশা বরঞ্চ কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। এরা প্রায় সবাই ধনী ঘরের—এরা পয়সার ফেলাছড়া করতে ভালোবাসে। নানারকম বাজে খরচ করে মেয়েদের কাছে দরাজ হাতের নাম কিনত। মেয়েদের মনে ঢেউ তুলত, তারা বুক ফুলিয়ে বলত—‘আমাদেরই কলেজের ছেলে এরা’। সরস্বতী পুজো তারা এমনি ধূম করে করত যে, বাজারে গাঁদা ফুলের আকাল পড়ে যেত। এ ছাড়া চোখ-টেপাটেপি … বিস্তারিত পড়ুন

প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় অংশ

এই রকম কথা-কাটাকাটির পালা চলত যখন তখন। সুরীতি অস্থির হয়ে উঠল—তার স্বাভাবিক গাম্ভীর্য আর টেকে না। সে ঠাট্টা করতে জানে না, অথচ কড়া জবাব করবার ভাষাও তার আসে না। সে মনে মনে জ্বলে পুড়ে মরে। সুরীতির এই দুর্গতিতে দয়া হয় এমন পুরুষও ছিল ওদের মধ্যে, কিন্তু তারা ঠাঁই পায় না। আর-একদিন হঠাৎ কী খেয়াল গেল, … বিস্তারিত পড়ুন

প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৩য় অংশ

হাসিমুখে মেনে নেবেন। ওঁরা তো আর ইংরেজ নন, ইংরেজরা বিদেশীদের কাছ থেকেও নিজেদের আদবকায়দার স্খলন সইতে পারেন না, এমন ওঁদের অহংকার। কিন্তু ফরাসীদের তা নয়, বরঞ্চ যদি কিছু অসম্পূর্ণ থাকে সেটা হেসে গ্রহণ করবে। দেখা যাক্‌-না—নীহাররঞ্জনের বিদ্যের দৌড় কতদূর। শুনেছি ও ঘরে বসে বসে ফরাসী পড়ার চর্চা করে।” নীহাররঞ্জনের বাড়ি চন্দননগরে। প্রথম বয়সে ফরাসী স্কুলে … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!