উদ্ধার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গৌরী প্রাচীন ধনীবংশের পরমাদরে পালিতা সুন্দরী কন্যা। স্বামী পরেশ হীনাবস্থা হইতে সম্প্রতি নিজের উপার্জনে কিঞ্চিৎ অবস্থার উন্নতি করিয়াছে; যতদিন তাঁহার দৈন্য ছিল ততদিন কন্যার কষ্ট হইবে ভয়ে শ্বশুর শাশুড়ি স্ত্রীকে তাঁহার বাড়িতে পাঠান নাই। গৌরী বেশ-একটু বয়স্থা হইয়াই পতিগৃহে আসিয়াছিল। বোধ করি এই-সকল কারণেই পরেশ সুন্দরী যুবতী স্ত্রীকে সম্পূর্ণ নিজের আয়ত্তগম্য বলিয়া বোধ করিতেন না … বিস্তারিত পড়ুন

উলুখড়ের বিপদ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বাবুদের নায়েব গিরিশ বসুর অন্তঃপুরে প্যারী বলিয়া একটি নূতন দাসী নিযুক্ত হইয়াছিল। তাহার বয়স অল্প; চরিত্র ভালো। দূর বিদেশ হইতে আসিয়া কিছুদিন কাজ করার পরেই একদিন সে বৃদ্ধ নায়েবের অনুরাগদৃষ্টি হইতে আত্মরক্ষার জন্য গৃহিণীর নিকট কাঁদিয়া গিয়া পড়িল। গৃহিণী কহিলেন, “বাছা, তুমি অন্য কোথাও যাও; তুমি ভালোমানুষের মেয়ে, এখানে থাকিলে তোমার সুবিধা হইবে না।” বলিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

একটি ক্ষুদ্র পুরাতন গল্প-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গল্প বলিতে হইবে? কিন্তু আর তো পারি না। এখন এই পরিশ্রান্ত অক্ষম ব্যক্তিটিকে ছুটি দিতে হইবে। এ পদ আমাকে কে দিল বলা কঠিন। ক্রমে ক্রমে একে একে তোমরা পাঁচজন আসিয়া আমার চারি দিকে কখন জড়ো হইলে, এবং কেন যে তোমরা আমাকে এত অনুগ্রহ করিলে এবং আমার কাছে এত প্রত্যাশা করিলে, তাহা বলা আমার পক্ষে দুঃসাধ্য। … বিস্তারিত পড়ুন

একরাত্রি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সুরবালার সঙ্গে একত্রে পাঠশালায় গিয়াছি, এবং বউ-বউ খেলিয়াছি। তাহাদের বাড়িতে গেলে সুরবালার মা আমাকে বড়ো যত্ন করিতেন এবং আমাদের দুইজনকে একত্র করিয়া আপনা-আপনি বলাবলি করিতেন, “আহা, দুটিতে বেশ মানায়।” ছোটো ছিলাম, কিন্তু কথাটার অর্থ একরকম বুঝিতে পারিতাম। সুরবালার প্রতি যে সর্বসাধারণের অপেক্ষা আমার কিছু বিশেষ দাবি ছিল, সে ধারণা আমার মনে বদ্ধমূল হইয়া গিয়াছিল। সেই … বিস্তারিত পড়ুন

ঘুমের ঘোরে-কাজী নজরুল ইসলাম-১ম অংশ

সাহারা মরূদ্যান-সন্নিহিত ক্যাম্প আফ্রিকা ঘুম ভাঙল। ঘুমের ঘোর তবু ভাঙল না। … নিশি আমার ভোর হলে, সে স্বপ্নও ভাঙল, আর তার সঙ্গে ভাঙল আমার বুক! কিন্তু এই যে তার শাশ্বত চিরন্তন স্মৃতি, তার আর ইতি নেই। না – না, মরুর বুকে ক্ষীণ একটু ঝরনা-ধারার মতো এই অম্লান স্মৃতিটুকুই তো রেখেছে আমার শূন্য বক্ষ স্নিগ্ধ-সান্ত্বনায় ভরে। … বিস্তারিত পড়ুন

অসম্ভব কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এক যে ছিল রাজা। তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্যক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না। রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোন্‌খানটিতে তাঁহার রাজত্ব, এ-সকল ইতিহাস ভূগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল; আসল যে … বিস্তারিত পড়ুন

ঘুমের ঘোরে-কাজী নজরুল ইসলাম-২য় অংশ

সে ছিল এমনই এক চাঁদনী-চর্চিত যামিনী, যাতে আপনি দয়িতের কথা মনে হয়ে মর্মতলে দরদের সৃষ্টি করে! মদির খোশ-বুর মাদকতায় মল্লিকা-মালতীর মঞ্জুল মঞ্জরিমালা মলয় মারুতকে মাতিয়ে তুলেছিল। উগ্র রজনিগন্ধার উদাস সুবাস অব্যক্ত অজানা একটা শোক-শঙ্কায় বক্ষ ভরে তুলেছিল। … সে এল মঞ্জীর-মুখর-চরণে সেই মুকুলিত লতাবিতানে! তার বাম করে ছিল চয়িত ফুলের ঝাঁপি। কবরী-ভ্রষ্ট আমের মঞ্জরি শিথিল … বিস্তারিত পড়ুন

আপদ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-প্রথম অংশ

সন্ধ্যার দিকে ঝড় ক্রমশ প্রবল হইতে লাগিল। বৃষ্টির ঝাপট, বজ্রের শব্দ এবং বিদ্যুতের ঝিক্‌মিকিতে আকাশে যেন সুরাসুরের যুদ্ধ বাধিয়া গেল। কালো কালো মেঘগুলো মহাপ্রলয়ের জয়পতাকার মতো দিগ্বিদিকে উড়িতে আরম্ভ করিল, গঙ্গার এ পারে ও পারে বিদ্রোহী ঢেউগুলো কলশব্দে নৃত্য জুড়িয়া দিল, এবং বাগানের বড়ো বড়ো গাছগুলো সমস্ত শাখা ঝট্পট্ করিয়া হাহুতাশসহকারে দক্ষিণে বামে লুটোপুটি করিতে … বিস্তারিত পড়ুন

পরির কথা-কাজী নজরুল ইসলাম

ময়ূরেশ্বর – বীরভূম সব ছাপিয়ে আমার মনে পড়ছে তাঁরই গাওয়া অনেক আগের একটা গানের সান্ত্বনা, – অনেক পাওয়ার মাঝে মাঝে কবে কখন একটুখানি পাওয়া সেইটুকুতেই জাগায় দখিন হাওয়া, দিনের পরে দিন চলে যায় যেন তারা পথের স্রোতেই ভাসা, বাহির হতেই তাদের যাওয়া আসা; কখন আসে একটি সকাল সে যেন মোর ঘরেই বাঁধে বাসা, সে যেন … বিস্তারিত পড়ুন

আপদ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় অংশ

কিরণ এই কঠোর উক্তির জন্য সতীশকে র্ভৎসনা করিলেন। সতীশ কহিল, “তুমি বোঝ না বউদিদি, তুমি সকলকেই বড়ো বেশি বিশ্বাস করো; কোথাকার কে তার ঠিক নাই, এখানে আসিয়া দিব্য রাজার হালে আছে। আবার পুনর্মূষিক হইবার আশঙ্কায় আজ মায়াকান্না জুড়িয়াছে – ও বেশ জানে যে, দুফোঁটা চোখের জল ফেলিলেই তুমি গলিয়া যাইবে।” নীলকান্ত তাড়াতাড়ি চলিয়া গেল। কিন্তু … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!