একটি চাউনি— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  গাড়িতে ওঠবার সময় একটুখানি মুখ ফিরিয়ে সে আমাকে তার শেষ চাউনিটি দিয়ে গেছে। এই মস্ত সংসারে ঐটুকুকে আমি রাখি কোন্‌খানে। দণ্ড পল মুহূর্ত অহরহ পা ফেলবে না, এমন একটু জায়গা আমি পাই কোথায়। মেঘের সকল সোনার রঙ যে সন্ধ্যায় মিলিয়ে যায় এই চাউনি কি সেই সন্ধ্যায় মিলিয়ে যাবে। নাগকেশরের সকল সোনালি রেণু যে বৃষ্টিতে … বিস্তারিত পড়ুন

কর্তার ভূত– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বুড়ো কর্তার মরণকালে দেশসুদ্ধ সবাই বলে উঠল, “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।” শুনে তারও মনে দুঃখ হল। ভাবলে, “আমি গেলে এদের ঠাণ্ডা রাখবে কে?” তা ব’লে মরণ তো এড়াবার জো নেই। তবু দেবতা দয়া করে বললেন, “ভাবনা কী। লোকটা ভূত হয়েই এদের ঘাড়ে চেপে থাক্‌-না। মানুষের মৃত্যু আছে, ভূতের তো মৃত্যু নেই।” ২ দেশের … বিস্তারিত পড়ুন

গলি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমাদের এই শানবাঁধানো গলি, বারে বারে ডাইনে বাঁয়ে এঁকে বেঁকে একদিন কী যেন খুঁজতে বেরিয়েছিল। কিন্তু, সে যে দিকেই যায় ঠেকে যায়। এ দিকে বাড়ি, ও দিকে বাড়ি, সামনে বাড়ি। উপরের দিকে যেটুকু নজর চলে তাতে সে একখানি আকাশের রেখা দেখতে পায়— ঠিক তার নিজেরই মতো সরু, তার নিজেরই মতো বাঁকা। সেই ছাঁটা আকাশটাকে জিজ্ঞাসা … বিস্তারিত পড়ুন

শেষ কথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর– পঞ্চম অংশ

অচিরা বলে উঠল, “দাদু, সাধে তোমাকে বলি ছেলেমানুষ। যখন-তখন নেমন্তন্ন করে তুমি আমাকে মুশকিলে ফেল। এই দণ্ডকারণ্যে ফিরপির দোকান পাব কোথায়। ওঁরা বিলেতের ডিনার খাইয়ে জাতের সর্বগ্রাসী মানুষ,কেন তোমার নাতনির বদনাম করবে। অন্তত ভেটকিমাছ আর ভেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে তো।” “আচ্ছা, আচ্ছা, তা হলে কবে আপনার সুবিধে হবে বলুন।” “সুবিধে আমার কালই হতে পারবে। কিন্তু … বিস্তারিত পড়ুন

শেষ কথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর– ষষ্ঠ অংশ

অচিরার সঙ্গে স্পষ্ট কথা বলার যুগ এল সংক্ষেপেই। সেদিন চড়িভাতি হয়েছিল তনিকা নদীর তীরে। অধ্যাপক ছেলেমানুষের মতন হঠাৎ আমাকে জিগ্‌গেসা করে বসলেন, “নবীন, তোমার কি বিবাহ হয়েছে।” প্রশ্নটা এতই সুস্পষ্ট ভাবব্যঞ্জক যে, আর কেউ হলে ওটা চেপে যেত। আমি উত্তর করলুম, “না, এখনো তো হয় নি।” অচিরার কাছে কোনো কথাই এড়ায় না। সে বললে, “দাদু, … বিস্তারিত পড়ুন

শেষ কথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর– সপ্তম অংশ

ওর ঘরের কাছে ওর সহাস্যমুখরতা রোধ করে দেয় আমার তরফের এক পা অগ্রগতি। আর ওর নিভৃত বনচ্ছায়ায় আমার সমস্ত চাঞ্চল্য ঠেকিয়ে রেখেছে নির্বাক নিঃশব্দতায়। কোনো-কোনোদিন ওদের ওখানে চায়ের নিমন্ত্রণসভার একটা কোনো সীমানায় মন খোলবার সুযোগ পাওয়া যায়, অচিরা বুঝতে পারে আমি বিপদমণ্ডলীর কাছাকাছি আসছি, সেদিনই ওর বাক্যবাণবর্ষণের অবিরলতা অস্বাভাবিক বেড়ে ওঠে। একটুও ফাঁক পাই নে, … বিস্তারিত পড়ুন

শেষ কথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর– অষ্টম অংশ

তার বিশ হাত দিনে দিনে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। তখনই বিছানা ফেলে ছুটে গিয়ে ঝরনার মধ্যে ঝাঁপিয়ে প’ড়ে আমি স্নান করেছি।” এই কথা বলতে বলতে অচিরা ডাক দিলে, “দাদু।” অধ্যাপক তাঁর পড়া ফেলে রেখে কাছে এসে মধুর স্নেহে বললেন, “কী দিদি।” “তুমি সেদিন বলছিলে না, মানুষের সত্য তার তপস্যার ভিতর দিয়ে অভিব্যক্ত হয়ে উঠছে?— তার … বিস্তারিত পড়ুন

অস্পষ্ট– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

জানলার ফাঁকে ফাঁকে দেখা যায় সামনের বাড়ির জীবনযাত্রা। রেখা আর ছেদ, দেখা আর না-দেখা দিয়ে সেই ছবি আঁকা। একদিন পড়ার বই পড়ে রইল, বনমালীর চোখ গেল সেই দিকে। সেদিন দেখে, সে বাড়ির ঘরকন্নার পুরোনো পটের উপর দুজন নতুন লোকের চেহারা। একজন বিধবা প্রবীণা, আর-একটি মেয়ের বয়স ষোলো হবে কি সতেরো। সেই প্রবীণা জানলার ধারে বসে … বিস্তারিত পড়ুন

আগমনী– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আয়োজন চলেইছে। তার মাঝে একটুও ফাঁক পাওয়া যায় না যে ভেবে দেখি, কিসের আয়োজন। তবুও কাজের ভিড়ের মধ্যে মনকে এক-একবার ঠেলা দিয়ে জিজ্ঞাসা করি, “কেউ আসবে বুঝি?” মন বলে, “রোসো। আমাকে জায়গা দখল করতে হবে, জিনিসপত্র জোগাতে হবে, ঘরবাড়ি গড়তে হবে, এখন আমাকে বাজে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কোরো না।” চুপচাপ করে আবার খাটতে বসি। ভাবি, জায়গা-দখল … বিস্তারিত পড়ুন

উপসংহার– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভোজরাজের দেশে যে মেয়েটি ভোরবেলাতে দেবমন্দিরে গান গাইতে যায় সে কুড়িয়ে-পাওয়া মেয়ে। আচার্য বলেন, “একদিন শেষরাত্রে আমার কানে একখানি সুর লাগল। তার পরে সেইদিন যখন সাজি নিয়ে পারুলবনে ফুল তুলতে গেছি তখন এই মেয়েটিকে ফুলগাছতলায় কুড়িয়ে পেলেম।” সেই অবধি আচার্য মেয়েটিকে আপন তম্বুরাটির মতো কোলে নিয়ে মানুষ করেছে; এর মুখে যখন কথা ফোটে নি এর … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!