মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —চতুর্থ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ঈশানবাবু একজন সৎকুলোদ্ভূত কায়স্থ। অতি ক্ষুদ্র লোক-কেন না, বেতন এক শত টাকা মাত্র-কোন জেলার ফৌজদারী আপিসের হেড কেরাণী। বাঙ্গালাদেশে মনুষ্যত্ব বেতনের ওজনে নির্ণীত হয়-কে কত বড় বাঁদর, তার লেজ মাপিয়া ঠিক করিতে হয়। এমন অধঃপতন আর কখন কোন দেশের হয় নাই। বন্দী চরণ-শৃঙ্খলের দৈর্ঘ্য দেখাইয়া বড়াই করে। ঈশানবাবু ক্ষুদ্র ব্যক্তি-ল্যাজ খাটো, বানরত্নে খাটো-কিন্তু মনুষ্যত্বে নহে। … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —পঞ্চম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

এদিকে, যশোদানন্দন, শ্রীশ্রীমুচিরাম শর্ম্মা-ঈশানমন্দিরে সুবিরাজমান-সম্পূর্ণরূপে মাতৃবিস্মৃত। যদি কখন মাকে মনে পড়িত, তবে সে আহারের সময়-ঈশানবাবুর ঘরের প্রফুল্ল-মল্লিকাসন্নিভ সিদ্ধান্ন, দানাদার গব্য ঘৃত, সুগন্ধি ঝোলে নিমগ্ন রোহিতমৎস্য, পৃথিবীর ন্যায় নিটোল গোলাকার সদ্যভর্জ্জিত লুচির রাশি-এই সকল পাতে পাইলে মুচিরাম মনে করিতেন, “মা বেটী কি ছাই-ই আমাকে খাওয়াইত!” সে সময়ে মাকে মনে পড়িত-অন্য সময়ে নহে। মুচিরামের পাঠশালার লেখা পড়া … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

পোয়া বারো-মুচিরাম জেলা লুঠিতে লাগিল। প্রথম লোকের কাছে চাহিয়া চিন্তিয়া দুই চারি আনা লইত। তার পর দাঁও শিথিল। ফেলু সেখের ধানগুলি জমীদার জোর করিয়া কাটিয়া লইতে উদ্যত, সাহেব দয়া করিয়া পুলিশকে হুকুম দিলেন, ফেলুর সম্পত্তি রক্ষা করিবে। সাহেব হুকুম দিলেন, কিন্তু পুলিশের নামে পরওয়ানাখানি লেখা আর হয় না। পরওয়ানা লেখা মুচিরামের হাত। পরওয়ানা যাইতে যাইতে … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —সপ্তম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরাম দুই তিন বৎসর মীর মুন্সীগিরি করিল-তার পর কালেক্টরীর পেস্কারি খালি হইল। পেস্কারিতে বেতন পঞ্চাশ টাকা-আর উপার্জ্জনের ত কথাই নাই। মুচিরাম ভাবিল, কপাল ঠুকিয়া একখানা দরখাস্ত করিব।তখন কালেক্টর ও ম্যাজিষ্ট্রেট পৃথক্ পৃথক্ ব্যক্তি হইত। সেখানে সে সময়ে হোম নামা এক সাহেব কালেক্টর ছিলেন। তিনি অতিশয় বুদ্ধিমান্ ও কর্ম্মঠ লোক ছিলেন, কিন্তু একটা দোষ ছিল-কিছু মিষ্ট … বিস্তারিত পড়ুন

একটি গীত —– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

“শোন্ প্রসন্ন, তোকে একটি গীত শুনাইব।”প্রসন্ন গোয়ালিনী বলিল, “আমার এখন গান শুনিবার সময় নয়-দুধ যোগাবার বেলা হলো।” কমলাকান্ত। “এসো এসো বঁধু এসো।” প্রসন্ন। “ছি ছি ছি! আমি কি তোমার বঁধু?” কমলাকান্ত। “বালাই! ষাট, তুমি কেন বঁধু হইতে যাইবে? আমার গীতে আছে”- এসো এসো বঁধু এসো আধ আঁচরে বসো- সুর করিয়া আমি কীর্ত্তন ধরাতে প্রসন্ন দুধের … বিস্তারিত পড়ুন

বিড়াল—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

আমি শয়নগৃহে, চারপায়ীর উপর বসিয়া, হুঁকা হাতে ঝিমাইতেছিলাম। একটু মিট্ মিট্ করিয়া ক্ষুদ্র আলো জ্বলিতেছে-দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া, প্রেতবৎ নাচিতেছে। আহার প্রস্তুত হয় নাই-এজন্য হুঁকা হাতে, নিমীলিতলোচনে আমি ভাবিতেছিলাম যে, আমি যদি নেপোলিয়ন্ হইতাম, তবে ওয়াটার্লু জিতিতে পারিতাম কি না। এমত সময়ে একটি ক্ষুদ্র শব্দ হইল, “মেও!” চাহিয়া দেখিলাম-হঠাৎ কিছু বুঝিতে পারিলাম না। প্রথমে মনে … বিস্তারিত পড়ুন

ঢেঁকি—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

আমি ভাবি কি, যদি পৃথিবীতে ঢেঁকি না থাকিত, তবে খাইতাম কি? পাখীর মত দাঁড়ে বসিয়া ধান খাইতাম? না লাঙ্গুলকর্ণদুল্যমানা গজেন্দ্রগামিনী গাভীর মত মরাইয়ে মুখ দিতাম? নিশ্চয় তাহা আমি, পারিতাম না। নবযুবা কৃষ্ণকায় বস্ত্রশূন্য কৃষাণ আসিয়া আমার পঞ্জরে যষ্টিপাত করিত, আর আমি ফোঁস্ করিয়া নিঃশ্বাস ফেলিয়া শৃঙ্গ লাঙ্গুল লইয়া পলাইতাম। আর্য্যসভ্যতার অনন্ত মহিমায় সে ভয় নাই-ঢেঁকি … বিস্তারিত পড়ুন

কমলাকান্তের পত্র—পলিটিক্‌স্—– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

শ্রীচরণেষু, আফিঙ্গ পাইয়াছি। অনেকটা আফিঙ্গ পাঠাইয়াছেন- শ্রীচরণকমলেষু। আপনার শ্রীচরণকমলযুগলেষু-আরও কিছু আফিঙ্গ পাঠাইবেন। কিন্তু শ্রীচরণকমলযুগল হইতে কমলাকান্তের প্রতি এমন কঠিন আজ্ঞা কি জন্য হইয়াছে, বুঝিতে পারিলাম না। আপনি লিখিয়াছেন যে, এক্ষণে নয় আইনে অন্যত্র কিছু পলিটিক্‌স্ কম পড়িবে-তুমি কিছু পলিটিক্‌স্ ঝাড়িলে ভাল হয়। কেন মহাশয়? আমি কি দোষ করিয়াছি যে পলিটিক্‌স্ সব্জেক্টরূপী ঝামা ইট মাথায় মারিব? … বিস্তারিত পড়ুন

হনূমাদ্বাবুসংবাদ—– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

কদা প্রাতঃসূর্য্যকিরণোদ্ভাসিত কদলীকুঞ্জে শ্রীমান্ হনূমান বায়ু সেবনার্থ পরিভ্রমণ করিতেছিলেন। তাঁহার পরম রমনীয় লাঙ্গুলবল্লী চক্রে চক্রে কুণ্ডলীকৃত হইয়া কখন পৃষ্ঠে, কখন স্কন্ধে, কখন বৃক্ষশাখায় শোভিত হইতেছিল। চারি পাশে মর্ত্তমান, চাঁপা, কাঁঠালি প্রভৃতি নানাজাতীয় সুপক্ক এবং অপক্ক রম্ভা বৃক্ষ হইতে থরে থরে, কাঁদিতে কাঁদিতে শোভা পাইয়া সুগন্ধে দিক্ আমোদিত করিয়াছিল। বীরবর, কখন কোন গাছ হইতে এক আধটা … বিস্তারিত পড়ুন

কমলাকান্তের পত্র—বাঙ্গালীর মনুষ্যত্ব—– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মহাশয়! আপনাকে পত্র লিখিব কি-লিখিবার অনেক অনেক শত্রু। আমি এখন যে কুঁড়ে ঘরে বাস করি, দুর্ভাগ্যবশতঃ তাহার পাশে গোটা দুই তিন ফুলগাছ পুঁতিয়াছি। মনে করিয়াছিলাম, কমলাকান্তের কেহ নাই-এই ফুলগুলি আমার সখা সখী হইবে। খোশামোদ করিয়া ইহাদের ফুটাইতে হইবে না-টাকা ছড়াইতে হইবে না, গহনা দিতে হইবে না, মনযোগান গোছ কথা বলিতে হইবে না, আপনার সুখে উহারা … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!