মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত –একাদশ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

চাকরি ছাড়িয়া দিয়া মুচিরাম ভদ্রকালীকে বলিলেন, “প্রিয়ে!” (তিনি সে কালের যাত্রার বাছা বাছা সম্বোধন পদগুলি ব্যবহার করিতেন) “প্রিয়ে!” বিষয় যেমন আছে-তেমনি একটি বাড়ী নাই। একটা বাড়ীর মত বাড়ী করিলে হয় না?” ভদ্র। দাদা বলে, এখানে বড় বাড়ী করিলে, লোকে বল্‌বে, ঘুষের টাকায় বড় মানুষ হয়েছে। মুচি। তা, এখানেই বা বাড়ী করায় কাজ কি? এখানে বুক … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত –দ্বাদশ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ভদ্রকালী কলিকাতায় আসিয়া দেখিলেন, তাঁহার মনস্কামনা পূর্ণ হইবার কোন সম্ভাবনা নাই। কলিকাতার কুলকামিনী রাজপথ আলোকিত করা দূরে থাকুক, পল্লীগ্রাম অপেক্ষা কঠিনতর কারাগারে নিবদ্ধ। যাহারা রাজপথ কলুষিত করিয়া দাঁড়ায়, তাহাদিগের শ্রেণীভুক্ত হইবার ইচ্ছা ভদ্রকালী রাখেন না-সুতরাং তাঁহার কলিকাতায় আসা বৃথা হইল। বিশেষ দেখিলেন, তাঁহার অঙ্গের অলঙ্কার দেখিয়া কলিকাতার স্ত্রীলোক হাসে। ভদ্রকালীর অলঙ্কারের গর্ব্ব ঘুচিয়া গেল। মুচিরামের … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত –ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

তিনি নাগরিক জীবননির্ব্বাহে মুচিরামের শিক্ষাগুরু-কলিকাতারূপ গোচারণভূমে তাঁহার রাখাল-কালীঘাট হইতে চিতপুর পর্য্যন্ত, তখন মুচিরামবলদ সখের গাড়ি টানিয়া যায়, রামবাবু তখন তাহার গাড়োয়ান; সখের ছেকড়ায় এই খোঁড়া টাটুটি জুড়িয়া, রামচন্দ্র পাকা কোচমানের মত মিঠাকড়া চাবুক লাগাইতেন। তাঁহার হস্তে ক্রমে গ্রাম্য বানর সহুরে বানরে পরিণত হইল। কি গতিকের বানর, তাহা নিম্নোদ্ধৃত পত্রাংশ পড়িলেই বুঝা যাইতে পারে। এই সময় … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত –চতুর্দ্দশ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

বড় বাড়াবাড়িতে অনরেবল মুচিরাম রায়ের রুধির শুকাইয়া আসিল। ভজগোবিন্দ ফিকিরফন্দিতে অল্প দামে অধিক লাভের বিষয়গুলি কিনিয়া দিয়াছিলেন-তাঁহার কার্য্যদক্ষতায় ক্রীত সম্পত্তির আয় বাড়িয়াছিল-কিন্তু এখন তাহাতেও অনাটন হইয়া আসিল। দুই একখানি তালুক বাঁধা পড়িল-রামচন্দ্রবাবুর কাছে। রামচন্দ্রবাবুর সঙ্কল্প এতদিনে সিদ্ধ হইয়া আসিতেছিল-এই জন্য তিনি আত্মীয়তা করিয়া মুচিরামকে এত বড় বাবু করিয়া তুলিয়াছিলেন। রামচন্দ্র অর্দ্ধেক মূল্যে তালুকগুলি বাঁধা রাখিলেন-জানেন … বিস্তারিত পড়ুন

আশ্চর্য্য সৌরোৎপাত—-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়– প্রথম অংশ

১৮৭১ সালে সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা-নিবাসী অদ্বিতীয় জ্যোতির্ব্বিদ ইয়ঙ্ সাহেব যে আশ্চর্য্য সৌরোৎপাত দৃষ্টি করিয়াছিলেন, এরূপ প্রকাণ্ড কাণ্ড মনুষ্যচক্ষে প্রায় আর কখন পড়ে নাই। তত্তুলনায় এট্‌না বা বিসিউবিয়াসের অগ্নিবিপ্লব, সমুদ্রোচ্ছ্বাসের তুলনায় দুগ্ধ-কটাহে দুগ্ধোচ্ছ্বাসের তুল্য বিবেচনা করা যাইতে পারে। যাঁহারা আধুনিক ইউরোপীয় জ্যোতির্ব্বিদ্যার সবিশেষ অনুশীলন করেন নাই, এই ভয়ঙ্কর ব্যাপার তাঁহাদের বোধগম্য করার জন্য সূর্য্যের প্রকৃতিসম্বন্ধে দুই … বিস্তারিত পড়ুন

কমলাকান্তের জোবানবন্দী—–বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়–তৃতীয় অংশ

প্রসন্ন দেখিল, উকীলকে টাকা দেওয়া সার্থক হয় নাই –তখন আপনার হাতে হাল লইবার ইচ্ছায়, উকীলের কাণে কাণে বলিয়া দিল, “ও বামুন সে সব কিছুর সাক্ষী নয়-ও কেবল গোরু চেনে |” উকীল মহাশয় তখন কূল পাইলেন। গর্জ্জিয়া উঠিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি গোরু চেন?” কমলাকান্ত মধুর হাসিয়া বলিল, “আহা চিনি বই কি-নহিলে কি আপনার সঙ্গে এত মিষ্টালাপ … বিস্তারিত পড়ুন

আশ্চর্য্য সৌরোৎপাত—-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়– দ্বিতীয় অংশ

কথিত সময়ে প্রফেসর ইয়ঙ্ দূরবীক্ষণে দেখিতেছিলেন যে, সূর্য্যের উপরি ভাগে একখানি মেঘবৎ পদার্থ দেখা যাইতেছে। অন্যান্য উপায় দ্বারা সিদ্ধান্ত হইয়াছে যে, পৃথিবী যেরূপ বায়বীয় আবরণে বেষ্টিত, সূর্য্যমণ্ডলও তদ্রূপ। ঐ মেঘবৎ পদার্থ সৌর বায়ূর উপরে ভাসিতেছিল। পাঁচটি স্তম্ভের ন্যায় আধারের উপরে উহা আরূঢ় দেখা যাইতেছিল। প্রফেসর ইয়ঙ্ পূর্ব্বদিন বেলা দুই প্রহর হইতে ঐ রূপই দেখিতেছিলেন। তদবধি … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত — প্রথম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরাম গুড় মহাশয় এই জগৎ পবিত্র করিবার জন্য, কোন্ শকে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন, ইতিহাস তাহা লেখে না। ইতিহাস এরূপ অনেকপ্রকার বদমাইশি করিয়া থাকে। এ দেশে ইতিহাসের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় না, নচেৎ উচিত ব্যবস্থা করা যাইত। যশোদা দেবীর গর্ভে সাফলরাম গুড়ের ঔরসে তাঁহার জন্ম। ইহা দুঃখের বিষয় সন্দেহ নাই; কেন-না, উচ্চবংশের কথা কিছুই বলিতে পারা গেল না। … বিস্তারিত পড়ুন

আকাশে কত তারা আছে? —বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়– প্রথম অংশ

ঐ যে নীল নৈশ নভোমণ্ডলে অসংখ্য বিন্দু জ্বলিতেছে, ওগুলি কি? ওগুলি তারা। তারা কি? প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিলে পাঠশালার ছাত্র মাত্রেই তৎক্ষণাৎ বলিবে যে, তারা সব সূর্য্য। সব সূর্য্য! সূর্য্য ত দেখিতে পাই বিশ্বদাহকর, প্রচণ্ডকিরণমালার আকর; তৎপ্রতি দৃষ্টিনিক্ষেপ করিবারও মনুষ্যের শক্তি নাই; কিন্তু তারা সব ত বিন্দু মাত্র; অধিকাংশ তারাই নয়নগোচর হইয়া উঠে না। এমন বিসদৃশের … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

যশোদার আর দিন যায় না। যজমানদিগের পৌরাহিত্য কে করে? কৈবর্ত্তেরা আর এক ঘর বামন আনিল। যশোদা অন্নকষ্টে-ধান ভানিতে আরম্ভ করিলেন। যখন মুচিরামের বয়স দশ বৎসর, কৈবর্ত্তেরা চাঁদা করিয়া একটা বারোইয়ারি পূজা করিল। যাত্রা দিবার জন্য বারোইয়ারি; কৈবর্ত্তেরা শস্তা দরে হারাণ অধিকারীকে তিন দিনের জন্য বায়না করিয়া আনিয়া, কলাগাছের উপর সরা জ্বালিয়া, তিন রাত্রি যাত্রা শুনিল। … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!