ভিক্ষুক

সবুজ গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনা। বাংলাদেশের অন্যতম নদীগুলোর মধ্যে মেঘনা একটি বৃহৎ নদী। এই গ্রামেই বসবাস করে সুসানের দাদা। এখানেই তার বাবার জন্ম। সুসান তার বাবার সাথে ঢাকায় বসবাস করে। সে মাঝে মাঝে বাবা-মায়ের সাথে গ্রামের বাড়ি বেড়াতে আসে। গত দুইদিন হয় গ্রীষ্মের ছুটি কাটাতে সুসান গ্রামে এসেছে। এখন সুসানের বয়স ১১ […]

জননী —- হাসান আজিজুল হক

কয়েক বছর আগে আমাদের ফ্ল্যাটবাড়িতে যে মেয়েটি কাজ খুঁজতে আসে, তার রূপ দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। চোদ্দ-পনেরো বছর বয়েস হবে তার, গায়ের রঙ ধপধপে ফর্সা, টানা টানা টলটলে বিশাল দুটি চোখ, ঈষৎ লম্বাটে মুখে টিকলো ছোটো নাক, তাতে শাদা পাথর বসানো এতটুকু একটা নাকফুল। আমার স্ত্রী তাকে জিগগেস করলেন, নাম কি তোর? আয়েশা। কাজ […]

গল্পঃ গোলাপ ফুলের গল্প

আমার মায়ের শখ বাগান করা। প্রতিদিন নিয়মমতো বাগানের ফুলগাছগুলোর তিনি যেভাবে যত্ন নিতেন তাতে মাঝে মাঝে মনে হত তিনি আমার মা না হয়ে এই গাছগুলোর মা হলে বেশি ভাল হত। আমাদের বাগানের গাছগুলোর মধ্যে লাল, গোলাপী,সাদা গোলাপ ছিল। এছাড়াও বেলী,হাসনাহেনা এবং আরও কিছু ফুল যার নাম আমি জানি না। এছাড়াও রক্তজবা, হলুদ জবা ছিল বাসার […]

বসকোম ভ্যালির রহস্য

শার্লক হোমসের টেলিগ্রামটাই এল সকাল বেলা— আমি তখন স্ত্রীকে নিয়ে প্রাতরাশ খেতে বসেছি। ‘দিন দুয়েকের জন্য বসকোম ভ্যালি যাবে? এইমাত্র টেলিগ্রাম পেলাম। তলব পড়েছে। প্যাডিংটন থেকে সওয়া এগারোটায় গাড়ি আছে।’ স্ত্রী-র উৎসাহে যাওয়াই মনস্থ করলাম। আফগানিস্তানে সামরিক জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো রপ্ত করেছি। ঝট করে জিনিসপত্র গুছিয়ে রওনা হতে পারি। তাই যথাসময়ে স্টেশনে পৌছে […]

দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসীন

গৃহকর্তা ঘরেই ছিল। এমন সময় গৃহে প্রবেশ করল এক চোর। ঘরের সব কিছু নিতে লাগলো হাতিয়ে। সহসা ঘুম ভেঙে গেল গৃহকর্তার। তিনি জেগে ওঠে দেখলেন চোর তাঁর ঘরের সব জিনিষপত্র নিয়ে যাচ্ছে। জেগে উঠে তিনি চোরকে ধরে ফেললেন হাতে নাতে। চোর ধরা পড়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করে দিলেন। গৃহকর্তার পা ধরে কাঁদলেন। আর বলল […]

হালালে হারাম

গাড়িগুলো বাড়ি ফিরছে পিচঢালা পথের বুক ছুয়ে পাখির মত উড়ে উড়ে ।পেছনের গাড়ির আলো যত দূর অতি সহজে চলে যায় ঠিক সেখানটাই অতিক্রম করা যেন গাড়ি গুলোর এক নেশা । ব্রিটেনের এই শহরটা সবসময় এতই চুপচাপ থাকে যে কয়েকটা খাল নালা তাদের বুকের পানি নিয়ে সারাক্ষন খেলা করেও চারদিক মুখর করে তুলতে পারে না । […]

শামসুরা এবং হতভাগ্য করিম মিয়ার গল্প

করিম মিয়ার পুত্র হইল। দাদী শখ কইরা নাম রাখল শামসুর রহমান। ডাকনাম শামসু। করিম মিয়া গরিব গ্রাম্য কৃষক, অভাবের অন্ত নাই। তার ভাঙ্গা ছনের ঘরে শামসুর মা রে নিয়া তার যুদ্ধ চলে অভাবের সাথে প্রতিনিয়ত। শামসু পড়াশোনায় ভাল। ক্লাস ফাইভের বৃত্তি সে পাইসে। করিম মিয়া শুরু করল অন্য স্বপ্ন দেখতে। সন্তান শিক্ষিত হবে, বিদ্যান হবে […]

লালসা

ওয়াজেদ সাহেবের মেজাজ আজ খুব ফুরফুরে ।মনের ভিতর উৎফুল্ল ভাব আজ পরীর সাথে দেখা হবে । আজ পরীর সাথে সারারাত এক অপার্থিব আনন্দে মেতে উঠতে পারবে । ৫০ বছর বয়সেও ২০ বছরের একটা তরুনীকে একান্তে পাওয়ার মজাই আলাদা। পরীকে পাওয়ার জন্য বেশ কায়দা করতে হয়েছে , একটু টাকা পয়সাও খরচ হয়েছে তাতে কি প্রেম ও […]

অদ্ভূত সকাল

বিয়ের অনুষ্ঠানে আকিব সচরাচর যায় না। হুই হুল্লোড় তার কাছে বিরক্তিকর লাগে। তবে ত্রপা আসতে বলেছে তাই এসেছে। ত্রপা কোন অনুরোধ করলে ফেলতে পারে না আকিব। আকিবের বন্ধু বান্ধব বেশি নাই। সে এক কোণায় দাঁড়িয়ে গেইট দিয়ে ঢোকা মানুষগুলোকে লক্ষ্য করছে। তার মনে বড় প্রশ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে, মানুষ এত সাজতে পারে কিভাবে! বেশিরভাগ মেয়েই […]

যাত্রা – বাসু আচার্য — পঞ্চম পর্ব

  “এক কাজ করলে পারিস তো,” সুরজিৎ গম্ভীর গলায় বলল। “কী করব?” জিজ্ঞাসু দৃষ্টি প্রজ্ঞার। “তোর শাশুড়িকে ফোন কর একটা,” বলেই চোখ টিপল সুরজিৎ। প্রজ্ঞা বিরক্তি-মাখানো গলায় বলল, “দেখ সুরজিৎ, তুই আমার বন্ধু, খুব ভাল বন্ধু। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সব ব্যাপারে ইয়ার্কি মারবি। প্রায় একমাসের ওপর হয়ে গেল ওর কোনও খবর নেই…” […]

যাত্রা – বাসু আচার্য — চতুর্থ পর্ব

শংকরের চা বানানো দেখছিল বাবলু। পুরনো নারকেল তেলের টিন কেটে বানানো ছাঁকনির জাল দিয়ে কাঁচের গ্লাসে লালচে তরল গড়িয়ে পড়ছে। সেই ভোর থেকে শুরু করেছে, এখন শেষ বিকেল। একটু আগে দু-এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। মাটি আলতো ভিজে, সোঁদা গন্ধ উঠছে। রাস্তার ঝুলে-পড়া বৈদুতিক তারে জমে থাকা জলের ফোঁটাগুলো ব্যালকনিতে দাঁড়ানো ইস্কুল ছাত্রের মত নীচের […]

যাত্রা – বাসু আচার্য — তৃতীয় পর্ব

গত একমাস ধরে উত্তীয় এই গ্রামে আছে। দেখেছে, যা ও কখনও দেখেনি, শোনেওনি। যারা শুধু গালভারি পত্রিকায় বিভিন্ন পরিসংখ্যান ঘেঁটে কৃষি উৎপাদনে পুঁজিবাদ এল কি এল না, বা ভারত রাষ্ট্রের গণতন্ত্রের স্বরূপ ইত্যাদি নিয়ে চুলচেরা গবেষণা করে, তাদের প্রতি একটা অদ্ভুত ঘৃণা জেগে উঠছিল ওর মনে। Extortion আর exploitation, এই শব্দ দুটোর আসল মানে বোঝা […]

যাত্রা – বাসু আচার্য — দ্বিতীয় পর্ব

মহাবোধি সোসাইটির সামনে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে প্রজ্ঞা। ঘন ঘন চোখ চলে যাচ্ছে হাত-ঘড়ির দিকে। কখন যে আসবে লোকটা! এদেশে বিপ্লবটা হবে কী করে? যারা লড়াইয়ের ঠেকা নিয়েছে তাদের কোনও সময়জ্ঞানই নেই। সুরজিৎ-কে ডাকবে একবার? নাহ, লাভ নেই। নির্ঘাৎ ক্যান্টিনে বসে ফিলজফির ওই নতুন মেয়েটার সাথে বকর-বকর করছে। পারেও বটে! ও কী যেন একটা ইয়ার্কি […]

যাত্রা – বাসু আচার্য — প্রথম পর্ব

  বেশ কয়েক মাইল হেঁটে পূর্ব বিহারের এক প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছল উত্তীয়। তাকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পার্টির কৃষক-কমরেড সুদামা। বাংলা থেকে বিহার আসার সময় উচ্চতর নেতৃত্ব বলে দিয়েছে সে যেন কোনওভাবেই স্টেশন চত্ত্বর থেকে সিগারেট বা বিড়ি না কেনে, চা না খায়। গলা শুকিয়ে কাঠ। জলের বোতলটাও শেষ হওয়ার মুখে। মূল শহর থেকে গ্রাম […]

কুমারডুবির সূর্যাস্ত

ট্রেনটা ভোঁ বাজিয়ে চলে গেল আর দেখলাম একটা খাঁ খাঁ প্ল্যাটফর্মে আমরা তিনজন দাঁড়িয়ে আছি। আমি বাবা আর মা।   মাথা নিচু করে দেখলাম প্ল্যাটফর্মের ধুলোর নিচে প্রায় চাপাই পড়ে গেছে গোলাপি রঙের স্ট্র্যাপওয়ালা পুজোয় পাওয়া আমার নতুন জুতো। হঠাৎ বাবা বলে উঠল, ‘ওই তো!’ মুখ তুলে দেখলাম একটা লম্বা লোক হেঁটে আসছে আমাদের দিকে। […]

সিংহাসন (রহস্য – রোমাঞ্চ গল্প)

আজ আপনাকে এক অদ্ভুত গল্প শোনাবো। যদি ও জানি আপনি এর এক দন্ড ও বিশ্বাস করবেন না। ভাববেন আমি পাগল কিনবা বদ্ধ উন্মাদ। কিনবা মানসিক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসা কেউ।কিন্তু বিশ্বাস করেন আমি আজ যে কথা গুলো বলবো তাতে বিন্দু মাত্র মিথ্যা লুকানো নেই। আমি লেখক হতে পারি, বানিয়ে বানিয়ে প্রচুর গল্প লিখতে পারি – […]

বহুরাজকতা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সাবেক কালের সঙ্গে এখনকার কালের তুলনা করিতে আমরা ছাড়ি না। সাবেক কাল যখন হাজির নাই তখন একতরফা বিচারে যাহা হইতে পারে তাহাই ঘটিয়া থাকে, অর্থাৎ বিচারকের মেজাজ অনুসারে কখনো-বা সেকালের ভাগ্যে যশ জোটে, কখনো-বা একালের জিত হয়। কিন্তু এমন বিচারের উপরে ভরসা রাখা যায় না।আমাদের পক্ষে মোগলের আমল সুখের ছিল কি ইংরাজের আমল সুখের, গোটাকতক […]

নৈশপ্রহরী

প্রতিদিনের মতো মনিরার গৃহে রাত নেমে আসে নিঃসঙ্গতা আর একাকিত্বের কাঁধে ভর দিয়ে। নিদ্রাহীন রাত বিছানায় এপাশ-ওপাশ করে পার হয়ে যায়। ফজরের আজান শোনা গেলে মনিরা বিছানা ত্যাগ করে। এ সময় তার স্বামী নিয়ামত ঘরে ফেরে ডিউটি শেষ করে। ঘরের বেড়ায় লাগানো পেরেকে গায়ের শার্টটা খুলে ঝুলিয়ে রাখে। লুঙ্গি পরে হাই তুলতে তুলতে যায় শৌচাগারের […]

ডাকাতের হাতে – তারাপদ রায়

এতক্ষণ ভদ্রলোককে কেউই লক্ষ করেনি। ভদ্রলোক মেজের এক প্রান্তে দেয়াল ঘেঁষে গালে হাত দিয়ে বসে ছিলেন। ঘরময় দুরন্ত উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা। পুলিসের লোক, খবরের কাগজের লোক—কে কাকে লক্ষ করে! একটু আগে বাজারের পেছনে ব্যাঙ্কের এই একতলার ঘরে ডাকাতি হয়ে গেছে। পুলিসের কর্তারা ব্যাঙ্কের এজেন্ট ও ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে ডাকাতির বিবরণ ও অপহূত অর্থের পরিমাণ জেনে […]

একমাত্র পথ – আনাতোলি ত্রুশকিন

—এই যে ভাই, ছাদের ওপর কী করছেন? —আত্মহত্যা করব। —ওহ্, আচ্ছা। তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু সঙ্গে ক্যানেস্তারা কেন? —গায়ে আগুন লাগিয়ে তারপর ঝাঁপ দেব; পুরোপুরি নিশ্চিত হতে এই ব্যবস্থা। —খুব সম্ভব কাজ হবে না। পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার উপায় এখন নেই রে ভাই। সময়টাই যে ও-রকম। —ভাবছেন, আমার কাজে বাধা পড়বে? —হ্যাঁ। ধরুন, ঝাঁপ দেওয়ার পর […]

একটি তুলসীগাছের কাহিনী – সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ

ধনুকের মতো বাঁকা কংক্রিটের পুলটার পরেই বাড়িটা। দোতলা, উঁচু এবং প্রকাণ্ড বাড়ি। তবে রাস্তা থেকেই সরাসরি দণ্ডায়মান। এদেশে ফুটপাত নাই বলে বাড়িটারও একটু জমি ছাড়ার ভদ্রতার বালাই নাই। তবে সেটা কিন্তু বাইরের চেহারা। কারণ, পেছনে অনেক জায়গা। প্রথমত প্রশস্ত উঠান। তারপর পায়খানা-গোসলখানার পরে আম-জাম-কাঁঠালগাছে ভরা জঙ্গলের মতো জায়গা। সেখানে কড়া সূর্যালোকেও সূর্যাস্তের ম্লান অন্ধকার এবং […]

দুটি বাজে গল্প – সুকুমার রায়

দুই বন্ধু ছিল। একজন অন্ধ আর একজন কালা। দুইজনে বেজায় ভাব। কালা বিজ্ঞাপনে পড়িল, আর অন্ধ লোকমুখে শুনিল, কোথায় যেন যাত্রা হইবে, সেখানে সঙরা নাচগান করিবে। কালা বলিল, ‘অন্ধ ভাই, চল যাত্রায় গিয়া দেখি।’ অন্ধ হাত নাড়িয়া গলা খেলাইয়া কালাকে বুঝাইয়া দিল, ‘কালা ভাই, চল যাত্রায় নাচগান শুনিয়া আসি।’ দুইজনে যাত্রার আসরে গিয়া বসিল। রাত […]

জীবনের অঙ্ক ও কোকাকোলার গাড়ি

“মানুষের জীবন অঙ্কনির্ভর। জীবনের অঙ্ক ভুল হওয়া মানেই কর্মক্ষেত্রে বিপর্যটা ঘটা। যার জীবনের অঙ্ক যতো নির্ভুল তার জীবন ততো স্বচ্ছো ও নির্মল।” হাটখোলার মোড় থেকে প্রকাশিত দৈনিকটির একটি বিজ্ঞাপনের ভাষ্য থেকে ওপরের অংশটুকু নেয়া। বিজ্ঞাপনের শিরোনাম ‘জীবনের অঙ্ক’। পাঠকরা ইতিমধ্যেই টের পেয়েছেন, এটি একজন জ্যোতিষ বাবাজির বিজ্ঞাপন। তিনি অভয় দিয়ে জানাচ্ছেন, যাদের জীবনের অঙ্ক মিলছে […]

শিয়াল পণ্ডিত–উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী

কুমির দেখলে, সে শিয়ালের সঙ্গে কিছুতেই পেরে উঠছে না। তখন ভাবলে, ‘ ও ঢের লেখাপড়া জানে, তাতেই খালি আমাকে ফাঁকি দেয়। আমি মূর্খ লোক, তাই তাকে আঁটতে পারি না।’ অনেকক্ষণ ভেবে কুমির ঠিক করল যে, নিজের সাতটা ছেলেকে শিয়ালের কাছে দিয়ে খুব করে লেখাপড়া শেখাতে হবে। তার পরের দিনই সে ছানা সাতটাকে সঙ্গে করে শিয়ালের […]

তিন কিশোরের কাণ্ড —স্বপন বুড়ো

তিনটি কিশোর এক সাথে পরীক্ষা দিতে বসেছিল।কিন্তু পরীক্ষার আগে ওরা পাকাপোক্ত ব্যাবস্থা করে গিয়েছিল।সুতো ঝুলিয়ে পরীক্ষার প্রশ্ন বাইরে চালান দেবে।সেখানে ভাই ব্রাদাররা হাতাহাতি প্রশ্ন-পত্রের জবাব লিখে আবার ফেরত পাঠাবে।সুতোধরে তোলা হবে দোতালার হল ঘরে সেই লিখিত জবাবগুলি।কিন্তু এমন সুন্দর পরিকল্পনা একে বারে ভেঙে গেল।যে পরিদর্শক হল ঘুরে বেরিয়েছিলেন,তিনি হঠাৎ জানালা দিয়ে দেখলেন,কতগুল ভুতরে কাগজ দেয়াল […]

চাঁদা –বিশু মুখোপাধ্যায়

এর পর আর কোন দিন চাঁদা দেবে না ঠিক করে ফেললেন দীনদয়াল।এ পাড়ায় নতুন বারী করে অতিষ্ট হয়ে গেল চাঁদা দিতে দিতে!দুই,টাকা,এক টাকা করে দশটাকা বার আনা চাঁদা দিতে হয়েছে তাকে একবারের সরস্বতী পুজোয়।একই পারাড় মুধ্যে বড়দের ছোটদের,তস্য ছোটদের করে শেষ আট আনা,চার আনা এমন কি দুই আনা পর্যন্ত দিয়ে রেহায় পেয়েছেন।ক,দিন চাদার জ্বালায় ভোরের […]

গজুখুড়োর বনে গমন –লীলা মজুমদার

একটা মানুষের আর কত সয়।শেষ পর্যন্ত গজুখুড়ো কার কয়েকবার একটা ভাঙ্গা ছাতার ন্যাড়া বাটের আগায়,একটা ছোট পুঁটলি বেধে রেগেমেগে সত্যি সত্যি বনে চলে গেলেন।যাবার আগে সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলে গেলেন,আমি চললাম হয়ত তোমাদের সাথে আমার শেষ দেখা।যদি কোন ফালতু সম্পতি থাকত,সে সব তোমাদের মধ্যে ভাগ রকে দিয়ে জেতাম।কিন্তু সে শব বলাই রাখার কোনো সুযোগ দাওনি,তখন […]

ত্রিশষ্কুর নকল স্বর্গ–বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র

লোকে কোথায় বলে আমার অবস্থা ত্রিশষ্কুর মত।মানে-না এ-দিক,না ও-দিক।মধ্যিখানে ভ্যাবাগঙ্গারাম হয়ে বসে থাকে।যেমন আজকাল বড়লোকের অবস্থা হয়েছে-তারা না বড়োলোক না একে বারে শ্রমিক।সমাজে মধ্যিখানে বসে তারা দুইদিকের ধাক্কাখাচ্ছে।ত্রিশষ্কুর অবস্থাও একদিক তাই হয়েছিল।ত্রিশষ্কুর ছিলেন একজন সেকালের মস্ত বড় রাজা।দু,তিন বছর পড়ে তিনি একটা না একটা যজ্ঞ করতেন।আর সেই উপলক্ষে ব্রাক্ষণ ও প্রজাদের যেমনি খাওয়াতেন-দাওয়াতেন,তেমনি দক্ষিনাও দিতেন। […]

সুবর্ণগোলক—-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

কৈলাসশিখরে, নবমুকুলশোভিত দেবদারুতলায় শার্দ্দুলচর্ম্মাসনে বসিয়া হরপার্ব্বতী পাশা খেলিতেছিলেন। বাজি একটি স্বর্ণগোলক। মহাদেবের খেলায় দোষ এই-আড়ি মারিতে পারেন না-তাহা পারিলে সমুদ্রমন্থনের সময়ে বিষের ভাগটা তাঁহার ঘাড়ে পড়িত না। গৌরী আড়ি মারিতে পটু-প্রমাণ, পৃথিবীতে তাঁহার তিন দিন পূজা। আর খেলায় যত হউক না হউক, কান্নাইয়ে অদ্বিতীয়া, কেন না, তিনিই আদ্যাশক্তি। মহাদেবের ভাল দান পড়িলে কাঁদিয়া হাট বাঁধান-আপনার […]

বসন্ত এবং বিরহ—-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

রামী। সখি, ঋতুরাজ বসন্ত আসিয়া ধরাতলে উদয় হইয়াছেন। আইস, আমরা বসন্ত বর্ণনা করি। বিশেষ আমরা উভয়েই বিরহিণী; পূর্ব্বগামিনী বিরহিণীগণ চিরকাল বসন্তবর্ণনা করিয়া আসিয়াছেন, আইস আমরাও তাই করি। বামী। সই, ভাল বলিয়াছ। আমরা বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শিখিয়া কেবল কুটনো কুটিয়া মরিলাম, আইস অদ্য কাব্যালোচনা করি। রামী। সই! তবে আরম্ভ করি। সখি‌! ঋতুরাজ বসন্তের সমাগম হইয়াছে। দেখ, […]

গর্দ্দভ– বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

হে গর্দ্দভ! আমার প্রদত্ত, এই নবীন সকল ভোজন করুন।১ , আমি বহুযত্নে, গোবৎসাদির অগম্য প্রান্তর সকল হইতে, নবজলকণানিষেকসুরভি তৃণাগ্রভাগ সকল আহরণ করিয়া আনিয়াছি, আপনি সুন্দর বদনমণ্ডলে গ্রহণ করিয়া, মুক্তানিন্দিত দন্তে ছেদনপূর্ব্বক আমার প্রতি কৃপাবান্ হউন। হে মহাভাগ! আপনার পূজা করিব ইচ্ছা হইয়াছে; কেন না, আপনাকেই সর্ব্বত্র দেখিতে পাই। অতএব হে বিশ্বব্যাপিন্! আমার পূজা গ্রহণ করুন। […]

বাবু–বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

জনমেজয় কহিলেন, হে মহর্ষে! আপনি কহিলেন যে, কলিযুগে বাবু নামে এক প্রকার মনুষ্যেরা পৃথিবীতে আবির্ভূত হইবেন। তাঁহারা কি প্রকার মনুষ্য হইবেন এবং পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া কি কার্য্য করিবেন, তাহা শুনিতে বড় কৌতূহল জন্মিতেছে। আপনি অনুগ্রহ করিয়া সবিস্তারে বর্ণন করুন। বৈশম্পায়ন কহিলেন, হে নরবর! আমি সেই বিচিত্রবুদ্ধি; আহারনিদ্রাকুশলী বাবুগণকে আখ্যাত করিব, আপনি শ্রবণ করুন। আমি সেই […]

হাম্মামখানা –শামসুদ্দোহা চৌধুরী

প্যাচপেচে গরমে ঘামাচির মহোৎসব শরীরে। জ্যৈষ্ঠের রোদের ঝাঁজালো আগুনের পরশমণিতে হুল ফুটানো উৎসবে মেতে উঠছে প্রকৃতি। মেঘমুক্ত সুনীল আকাশ। শ্রান্তি হরণের জন্য বটচ্ছায়া আছে ঠিকই, কিন্তু প্যাচপেচে গরমের ক্লান্তি মুছে যাওয়ার জন্য একচিলতে ফুরফুরে বাতাসের বড্ড অভাব। সহসা বারি প্রস্রবণের চিহ্নটুকুও নেই। ঠিক এ সময়ে রক্তরোদ্রের বর্শাকে ফাঁকি দেয়ার জন্য আমি ও বাঁশমতি বেগম হন্যে […]

সরকার সাহেবের গাধা || হুমায়ূন কবীর ঢালী

হেলাল সরকারের একটা পোষা কুকুর আর একটা গাধা আছে। কুকুরটা খুবই স্নেহবৎসল। বিশ্বস্তস্ন। সব সময় হেলাল সরকারের কাছাকাছি থাকে। হেলাল সরকার যেখানেই যান, প্রিয় কুকুরটাও সাথে যায়। তিনি গোসল করতে গেলে কুকুরটা পুকুরঘাটে দাঁড়িয়ে থাকে। রাতে হেলাল সরকার যে ঘরে ঘুমান, কুকুরটা সে ঘরের দরজায় বসে থাকে। অচেনা কাউকে দেখলে ঘেউঘেউ করে ডেকে ওঠে। হেলাল […]

সাতরঙের দরোজা || উত্তম সেন

এখানে কী করে এলো সে! একেবারে অচেনা জায়গা। এর আগে কোনোদিন এসেছিল বলে মনে পড়ে না তার। তবে রঙগুলো খুব চেনা তার। রঙধনুর সাত রঙ। সাতটা দরোজাই খোলা। প্রত্যেক খোলা দরোজার ভেতর থেকে সাত রকমের আলোর দ্যুতি বেরুচ্ছে। কোথাও কোনো সাড়া-শব্দ নেই। এবার আরেকটু সামনে এগিয়ে গেল ছেলেটা; একেবারে সাত দরোজার সামনে। প্রথমেই সে এসে […]

বাদল বরিষনে-কাজী নজরুল ইসলাম-দ্বিতীয় অংশ

[চির-জনমের ছাড়াছাড়ি] তার পর-বছরের কথা। কাজরিয়ার সঙ্গে আবার আমার দেখা হল মির্জাপুরের পাহাড়ের বুকে বিরহী নামক উপত্যকায়। সেদিন ছিল ভাদ্রের কৃষ্ণা-তৃতীয়া। সেদিনও মেঘে আঁধারে কোলাকুলি করছিল। সেদিন ছিল কাজরি উৎসবের শেষ দিন। সেদিন বাদল মেঘ ধানের খেতে তার শেষ বিদায়-বাণী শোনাচ্ছিল, আর নবীন ধানও তার মঞ্জরি দুলিয়ে কেঁপে কেঁপে বাদলকে তার শেষ অভিনন্দন জানাচ্ছিল। হায়, […]

বাদল বরিষনে-কাজী নজরুল ইসলাম-প্রথম অংশ

[এক নিমেষের চেনা] বৃষ্টির ঝম-ঝমানি শুনতে শুনতে সহসা আমার মনে হল, আমার বেদনা এই বর্ষার সুরে বাঁধা!… সামনে আমার গভীর বন। সেই বনে ময়ূরে পেখম ধরেছে, মাথার উপর বলাকা উড়ে যাচ্ছে, ফোটা কদম ফুলে কার শিহরণ কাঁটা দিয়ে উঠছে, আর কীসের ঘন-মাতাল-করা সুরভিতে নেশা হয়ে সারা বনের গা টলছে!… এটা শ্রাবণ মাস, না? – আহা, […]

হেনা-কাজী নজরুল ইসলাম

ভার্দুন ট্রেঞ্চ, ফ্রান্স ওঃ! কী আগুন-বৃষ্টি! আর কী তার ভয়ানক শব্দ! – গুড়ুম – দ্রুম – দ্রুম! – আকাশের একটুও নীল দেখা যাচ্ছে না, যেন সমস্ত আশমান জুড়ে আগুন লেগে গেছে! গোলা আর বোমা ফেটে ফেটে আগুনের ফিনকি এত ঘন বৃষ্টি হচ্ছে যে, অত ঘন যদি জল ঝরত আসমানের নীলচক্ষু বেয়ে, তা হলে এক দিনেই […]

সয়ফুল-মুলকের কথা-কাজী নজরুল ইসলাম

আমি সেই শয়তান, আমি সেই পাপী, যে এক দেবীকে বিপথে চালিয়েছিল। – ভাবলুম, এই ভুবনব্যাপী যুদ্ধে যে-কোনো দিকে যোগ দিয়ে যত শিগগির পারি এই পাপ-জীবনের অবসান করে দিই। তারপর? তারপর আর কী? যা সব পাপীদের হয়, আমারও হবে। পাপী যদি সাজা পায়, তা হলে সে এই বলে শান্তি পায় যে তার উপর অবিচার করা হচ্ছে […]

মিথ্যা তুমি দশ পিঁপড়া

যুবকের তিনটি চিঠি আমদের হাতে। প্রথম চিঠিটি তার মায়ের কাছে। সম্ভবত তখন প্রশিক্ষনের সবেমাত্র শুরু। যুবকের বিহ্বলতা। মা/ তোমাকে সশস্ত্র সালাম। এখানে এসে এই নতুন রকমে সালাম দেওয়া বেশ কায়দা করে শিখছি। সকাল বিকাল মাথা উচু ,শিরদাড়া সোজা আর সিনা টান করে কুচকাওয়াজ করে চলেছি। একবার ডান পা তুলছি আর একবার বাম পা। মাটির উপর […]

ইমামসাহেব — নীহারুল ইসলাম

রশিদ মেম্বারের কাছে শোনার পরও খবরটা বিশ্বাস হয় না আত্তাব মৌলবীর। সরকার নাকি ইমামদের মাসে মাসে ভাতা দেবে! বাপ জন্মে কেউ কখনো শুনেছে এমন কথা? রশিদ মেম্বার রাজনীতি করে। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। সেই কারণে যত সব ভুজুং ভাজুং কথা বলে হয়ত তাকে হাতে রাখতে চাইছে। স্বভাবতই সে রশিদ মেম্বারের কথার পাত্তা দিচ্ছে না। আনাকানি দিচ্ছে। […]

আপদ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-প্রথম অংশ

সন্ধ্যার দিকে ঝড় ক্রমশ প্রবল হইতে লাগিল। বৃষ্টির ঝাপট, বজ্রের শব্দ এবং বিদ্যুতের ঝিক্‌মিকিতে আকাশে যেন সুরাসুরের যুদ্ধ বাধিয়া গেল। কালো কালো মেঘগুলো মহাপ্রলয়ের জয়পতাকার মতো দিগ্বিদিকে উড়িতে আরম্ভ করিল, গঙ্গার এ পারে ও পারে বিদ্রোহী ঢেউগুলো কলশব্দে নৃত্য জুড়িয়া দিল, এবং বাগানের বড়ো বড়ো গাছগুলো সমস্ত শাখা ঝট্পট্ করিয়া হাহুতাশসহকারে দক্ষিণে বামে লুটোপুটি করিতে […]

অসম্ভব কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এক যে ছিল রাজা। তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্যক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না। রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনোজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোন্‌খানটিতে তাঁহার রাজত্ব, এ-সকল ইতিহাস ভূগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল; আসল যে […]

পরীক্ষা || সুমন্ত আসলাম

বাতেন সাহেব অফিস থেকে বাসায় ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে রাবিদ বলল, ‘বাবা, জরুরি কিছু কথা আছে তোমার সঙ্গে। তুমি জামা-কাপড় খুলে ফ্রেশ হয়ে নাও। আমি কম্পিউটারটা বন্ধ করে আসি।’ কিছু বললেন না বাতেন সাহেব। ছেলের চঞ্চলতা দেখে সামান্য হাসলেন। ঘরে ঢুকে সোফায় বসে জুতোর ফিতা খুলতে খুলতে স্ত্রীকে বললেন, ‘নিতু, তোমার ছেলের কী হয়েছে বলো তো?’ […]

সূর্য ও পাতার গল্প || হোসেন শওকত

লোকটা নাকি জাদুকর। দেখতে রবীন্দ্রনাথের মতো। বড় বড় চুল আর দাড়ি। সকালে ঘুম থেকে উঠে চুল শুকাতে দেয়। সেই চুল এতো বড় যে, পৃথিবী অব্দি চলে আসে। পৃথিবী একটা সবুজ গ্রহ। সেটার প্রতি সবার লোভ। সেখানে মানুষের বাস। ওই গ্রহের সবাই ভাবে, পৃথিবীটা দখল করার জন্যই বুঝি বুড়োর এই পাঁয়তারা, ফন্দি-ফিকির। চুলের মায়াজাল ফেলে পৃথিবীকে […]

জলবায়ুর বিপর্যয় রোধ কি সম্ভব?

কঠিন, তবে সম্ভব, যদি কয়েকটি শর্ত পূরণ হয়। প্রথম হলো, কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনতে হবে। এখানেই সমস্যা। শিল্পোন্নত দেশগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ক্রমাগত উত্পাদন বাড়িয়ে চলেছে। সম্প্রতি চীন, ভারত, ব্রাজিল প্রভৃতি উদীয়মান অর্থনীতির দেশের প্রবৃদ্ধিও দ্রুত হারে বাড়ছে। উন্নয়নের জন্য তেল-গ্যাস-কয়লা প্রভৃতি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বেড়ে যায়। এগুলো পোড়ালে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস বা গ্রিনহাউস […]

রাখী — সিক্তা দাস

“দিদি, দাও না বানিয়ে, আর ত মাত্র কয়েকটা দিন” সামনের সোমবারই রাখীপূর্ণিমা। মিমির একটাও রাখী তৈরী হয় নি। অথচ পঁচিশটা রাখী তো বানাতেই হবে কম করে। প্রত্যেকবার মিমির দিদি সুমি অনেক আগে থেকেই রাখী বানানো শুরু করে দেয় বোনের জন্য, ছোট্ট ছোট্ট মিষ্টি রঙিন সব রাখী। মিমি মহানন্দে ছোট্ট ব্যাগে ভরে সব রাখী নিয়ে চলে […]

অধ্যাপক-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-প্রথম পরিচ্ছেদ

কলেজে আমার সহপাঠীসম্প্রদায়ের মধ্যে আমার একটু বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল। সকলেই আমাকে সকল বিষয়েই সমজদার বলিয়া মনে করিত। ইহার প্রধান কারণ, ভুল হউক আর ঠিক হউক সকল বিষয়েই আমার একটা মতামত ছিল। অধিকাংশ লোকই হাঁ এবং না জোর করিয়া বলিতে পারে না, আমি সেটা খুব বলিতাম। কেবল যে আমি মতামত লইয়া ছিলাম তাহা নহে, নিজেও রচনা […]

রক্তাক্ত শৈশব”—শুচিস্মিতা দাস

ছোট্ট চারাগাছ টা ধীরে ধীরে ডাল পালা ছড়িয়ে বেড়ে উঠছে। পাতা গুলো সবুজ, আরও সবুজ হয়ে উঠছে দিনে দিনে। আমার শিশু সন্তানও সেইভাবেই একটু একটু করে বড়ো হয়ে উঠছে। প্রথমে বসতে শিখলো সে, তারপর দাঁড়াতে শিখলো। দেখতে দেখতে হাঁটতেও শিখে গেল একদিন। আমার ছোট্ট ছেলে যত বড় হল আমার মাথার মধ্যে একটাই চিন্তা সারাক্ষণ ঘুরপাক […]

অধ্যাপক-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বাবা বিবাহ দিবার জন্য আমাকে দেশ হইতে ডাকিয়া পাঠাইলেন। আমি কিছুদিন সময় লইলাম। বামাচরণবাবুর সমালোচনায় আমার নিজের মধ্যে একটা আত্মবিরোধ, নিজের প্রতি নিজের একটা বিদ্রোহভাব জন্মিয়াছিল। আমার সমালোচক অংশ আমার লেখক অংশকে গোপনে আঘাত দিতেছিল। আমার লেখক অংশ বলিতেছিল, আমি ইহার পরিশোধ লইব; আবার একবার লিখিব এবং তখন দেখিব, আমি বড়ো না আমার সমালোচক বড়ো। […]

দুঃখিত!!