রামকানাইয়ের নির্বুদ্ধিতা–দ্বিতীয় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ভদ্রলোকটি ব্যাগ ও ছাতা হাতে যথাসময়ে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। এমন-কি, কিঞ্চিৎ রসালাপ করিবারও চেষ্টা করিলেন, জোড়হস্তে সহাস্যে বলিলেন, “গোলাম হাজির, এখন মহারানীর কী অনুমতি হয়।” গৃহিণী মাথা নাড়িয়া বলিলেন, “নেও নেও, আর রঙ্গ করতে হবে না। এতদিন ছুতো করে কাশীতে কাটিয়ে এলেন, একদিনের তরে তো মনে পড়ে নি।” ইত্যাদি। এইরূপে উভয় পক্ষে অনেকক্ষণ ধরিয়া পরস্পরের … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–প্রথম পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  নিবারণের সংসার নিতান্তই সচরাচর রকমের, তাহাতে কাব্যরসের কোনো নামগন্ধ ছিল না। জীবনে উক্ত রসের যে কোনো আবশ্যক আছে এমন কথা তাহার মনে কখনো উদয় হয় নাই। যেমন পরিচিত পুরাতন চটি-জোড়াটার মধ্যে পা-দুটো দিব্য নিশ্চিন্তভাবে প্রবেশ করে, এই পুরাতন পৃথিবীটার মধ্যে নিবারণ সেইরূপ আপনার চিরাভ্যস্ত স্থানটি অধিকার করিয়া থাকে, সে সম্বন্ধে ভ্রমেও কোনোরূপ চিন্তা তর্ক … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একটি নোলক-পরা অশ্রুভরা ছোটোখাটো মেয়ের সহিত নিবারণের বিবাহ হইল, তাহার নাম শৈলবালা। নিবারণ ভাবিল, নামটি বড়ো মিষ্ট এবং মুখখানিও বেশ ঢলোঢলো। তাহার ভাবখানা, তাহার চেহারাখানি, তাহার চলাফেরা একটু বিশেষ মনোযোগ করিয়া চাহিয়া দেখিতে ইচ্ছা করে, কিন্তু সে আর কিছুতেই হইয়া উঠে না। উল্‌টিয়া এমন ভাব দেখাইতে হয় যে, ‘ঐ তো একফোঁটা মেয়ে, উহাকে লইয়া তো … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–তৃতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

হায়, আজ কোথায় সে বল যে বলে হরসুন্দরী মনে করিয়াছিল স্বামীর জন্য চিরজীবনকাল সে আপনার প্রেমের দাবির অর্ধেক অংশ অকাতরে ছাড়িয়া দিতে পারিবে। হঠাৎ একদিন পূর্ণিমার রাত্রে জীবনে যখন জোয়ার আসে, তখন দুই কূল প্লাবিত করিয়া মানুষ মনে করে, আমার কোথাও সীমা নাই। তখন যে একটা বৃহৎ প্রতিজ্ঞা করিয়া বসে, জীবনের সুদীর্ঘ ভাঁটার সময় সে … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–চতুর্থ পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একদিন ঘনঘোর মেঘ করিয়া আসিয়াছে। এমনি অন্ধকার করিয়াছে যে, ঘরের মধ্যে কাজকর্ম করা অসাধ্য। বাহিরে ঝুপ্ ঝুপ্ করিয়া বৃষ্টি হইতেছে। কুলগাছের তলায় লতাগুল্মের জঙ্গল জলে প্রায় নিমগ্ন হইয়া গিয়াছে এবং প্রাচীরের পার্শ্ববর্তী নালা দিয়া ঘোলা জলস্রোত কল্ কল্ শব্দে বহিয়া চলিয়াছে। হরসুন্দরী আপনার নূতন শয়নগৃহের নির্জন অন্ধকারে জানলার কাছে চুপ করিয়া বসিয়া আছে। এমন সময় … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–পঞ্চম পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এক-একজন লোক স্বপ্নাবস্থায় নির্ভীকভাবে অত্যন্ত সংকটের পথ দিয়া চলিয়া যায়, মুহূর্তমাত্র চিন্তা করে না। অনেক জাগ্রত মানুষেরও তেমনি চিরস্বপ্নাবস্থা উপস্থিত হয়; কিছুমাত্র জ্ঞান থাকে না, বিপদের সংকীর্ণ পথ দিয়া নিশ্চিন্তমনে অগ্রসর হইতে থাকে, অবশেষে নিদারুণ সর্বনাশের মধ্যে গিয়া জাগ্রত হইয়া উঠে। আমাদের ম্যাক্‌মোরান কোম্পানির হেডবাবুটিরও সেই দশা। শৈলবালা তাহার জীবনের মাঝখানে একটা প্রবল আবর্তের মতো … বিস্তারিত পড়ুন

মধ্যবর্তিনী–ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ছোটোবউয়ের অসন্তোষ এবং অসুখের আর শেষ নাই। সে কিছুতেই বুঝিতে চায় না তাহার স্বামীর ক্ষমতা নাই। ক্ষমতা নাই যদি তো বিবাহ করিল কেন। উপরের তলায় কেবল দুটিমাত্র ঘর। একটি ঘরে নিবারণ ও শৈলবালার শয়নগৃহ। আর-একটি ঘরে হরসুন্দরী থাকে। শৈলবালা খুঁতখুত করিয়া বলে, “আমি দিনরাত্রি শোবার ঘরে কাটাইতে পারি না।” নিবারণ মিথ্যা আশ্বাস দিয়া বলিত, “আমি … বিস্তারিত পড়ুন

মাল্যদান–প্রথম অংশ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  সকালবেলায় শীত-শীত ছিল । দুপুরবেলায় বাতাসটি অল্প একটু তাতিয়া উঠিয়া দক্ষিণ দিক হইতে বহিতে আরম্ভ করিয়াছে । যতীন যে বারান্দায় বসিয়া ছিল, সেখান হইতে বাগানের এক কোণে এক দিকে একটি কাঁঠাল ও আর-একদিকে একটি শিরীষগাছের মাঝখানের ফাঁক দিয়া বাহিরের মাঠ চোখে পড়ে । সেই শূন্য মাঠ ফাল্গুনের রৌদ্রে ধূধূ করিতেছিল । তাহারই এক প্রান্ত … বিস্তারিত পড়ুন

মাল্যদান–দ্বিতীয় অংশ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রাত্রে শোবার ঘরে জানলা-দরজা খুলিয়া দিয়া যতীন অনেক কথা ভাবিল । যে মেয়ে আপনার বাপ-মাকে না খাইতে পাইয়া মরিতে দেখিয়াছে, তাহার জীবনের উপর কী ভীষণ ছায়া পড়িয়াছে । এই নিদারুণ ব্যাপারে সে কত বড়ো হইয়া উঠিয়াছে — তাহাকে লইয়া কি কৌতুক করা যায় । বিধাতা দয়া করিয়া তাহার বুদ্ধিবৃত্তির উপরে একটা আবরণ ফেলিয়া দিয়াছেন — … বিস্তারিত পড়ুন

মাল্যদান–তৃতীয় অংশ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আনিয়াছে । যতীন তাহাকে দেখিতে গেল। মেয়েটির মুখের অধিকাংশ চাদরে ঢাকা ছিল। যতীন প্রথমেই তাহার হাত তুলিয়া লইয়া নাড়ী দেখিল। নাড়ীতে জ্বর অধিক নাই, কিন্তু দুর্বলতা অত্যন্ত। তখন পরীক্ষার জন্য মুখের চাদর সরাইয়া দেখিল, সেই কুড়ানি । ইতিমধ্যে পটলের কাছ হইতে যতীন কুড়ানির সমস্ত বিবরণ জানিয়াছিল । অব্যক্ত হৃদয়ভাবের দ্বারা ছায়াচ্ছন্ন তাহার সেই হরিণচক্ষুদুটি কাজের … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!