জীবিত ও মৃত–দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সকলেই জানেন , জীবনের যখন কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না তখনো অনেক সময় জীবন প্রচ্ছন্নভাবে থাকে , এবং সময়মতো পুনর্বার মৃতবৎ দেহে তাহার কার্য আরম্ভ হয় । কাদম্বিনীও মরে নাই — হঠাৎ কী কারণে তাহার জীবনের ক্রিয়া বন্ধ হইয়া গিয়াছিল । যখন সে সচেতন হইয়া উঠিল , দেখিল, চতুর্দিকে নিবিড় অন্ধকার । চিরাভ্যাসমতো যেখানে শয়ন … বিস্তারিত পড়ুন

লালু-২ — শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

তার ডাকনাম ছিল লালু। ভাল নাম অবশ্য একটা ছিলই, কিন্তু মনে নেই। জানো বোধ হয়, হিন্দীতে ‘লাল’ শব্দটার অর্থ হচ্ছে—প্রিয়। এ-নাম কে তারে দিয়েছিল জানিনে, কিন্তু মানুষের সঙ্গে নামের এমন সঙ্গতি কদাচিৎ মেলে। সে ছিল সকলের প্রিয়। ইস্কুল ছেড়ে আমরা গিয়ে কলেজে ভর্তি হলাম, লালু বললে, সে ব্যবসা করবে। মায়ের কাছে দশ টাকা চেয়ে নিয়ে … বিস্তারিত পড়ুন

লালু-৩ — শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

আমাদের শহরে তখন শীত পড়েছে, হঠাৎ কলেরা দেখা দিলে। তখনকার দিনে ওলাউঠার নামে মানুষে ভয়ে হতজ্ঞান হতো। কারও কলেরা হয়েছে শুনতে পেলে সে-পাড়ায় মানুষ থাকতো না। মারা গেলে দাহ করার লোক মেলা দুর্ঘট হতো। কিন্তু সে দুর্দিনেও আমাদের ওখানে একজন ছিলেন যাঁর কখনো আপত্তি ছিল না। গোপালখুড়ো তাঁর নাম, জীবনের ব্রত ছিল মড়া-পোড়ানো। কারও অসুখ … বিস্তারিত পড়ুন

চোরাই ধন– ১ম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মহাকাব্যের যুগে স্ত্রীকে পেতে হত পৌরুষের জোরে ; যে অধিকারী সেই লাভ করত রমণীরত্ন । আমি লাভ করেছি কাপুরুষতা দিয়ে , সে কথা আমার স্ত্রীর জানতে বিলম্ব ঘটেছিল । কিন্তু , সাধনা করেছি বিবাহের পরে, যাকে ফাঁকি দিয়ে চুরি করে পেয়েছি তার মূল্য দিয়েছি দিনে দিনে । দাম্পত্যের স্বত্ব সাব্যস্ত করতে হয় প্রতিদিনই নতুন করে … বিস্তারিত পড়ুন

চোরাই ধন– ২য় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বাড়িতে । শৈলেন এল , তার অকস্মাৎ আবির্ভাব সুনেত্রার পছন্দ নয় , সেটা বোঝা কঠিন ছিল না । আমি শৈলেনকে বললেম , “ গণিতে আমার যেটুকু দখল তাতে হাল আমলের ফিজিক্সের তল পাই নে , তাই তোমাকে ডেকে পাঠানো ; কোয়ান্টম থিওরিটা যথাসাধ্য বুঝে নিতে চাই , আমার সেকেলে বিদ্যেসাধ্যি অত্যন্ত বেশি অথর্ব হয়ে … বিস্তারিত পড়ুন

চোরাই ধন– ৩য় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

হাওয়ার বেগ বাড়তে চলল , বৃষ্টির বিরাম নেই । সুনেত্রাকে বললেম , “ আলোটা লাগছে চোখে , নিবিয়ে দিই । ” নিবিয়ে দিলেম । বৃষ্টিধারার মধ্যে দিয়ে রাস্তার ল্যাম্পের ঝাপসা আভা এল অন্ধকার ঘরে । সোফার উপরে সুনেত্রাকে বসালেম আমার পাশে । বললেম , “ সুনি , আমাকে তোমার যথার্থ দোসর বলে মান তুমি ? … বিস্তারিত পড়ুন

কর্মফল–অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সতীশ। বড়োসাহেব হিসাবের খাতাপত্র কাল দেখবেন। মনে করেছিলেম, ইতিমধ্যে ‘গাণি’র টাকাটা নিশ্চয় পাওয়া যাবে, তহবিল পূরণ করে রাখব— কিন্তু বাজার নেমে গেল। এখন জেল ছাড়া গতি নেই। ছেলেবেলা হতে সেখানে যাবারই আয়োজন করা গেছে। কিন্তু, অদৃষ্টকে ফাঁকি দেব। এই পিস্তলে দুটি গুলি পুরেছি — এই যথেষ্ট। নেলি— না না, ও নাম নয়, ও নাম নয়— … বিস্তারিত পড়ুন

খাতা– ১ম অংশ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

লিখিতে শিখিয়া অবধি উমা বিষম উপদ্রব আরম্ভ করিয়াছে । বাড়ির প্রত্যেক ঘরের দেয়ালে কয়লা দিয়া বাঁকা লাইন কাটিয়া বড়ো বড়ো কাঁচা অক্ষরে কেবলই লিখিতেছে — জল পড়ে , পাতা নড়ে । তাহার বউঠাকুরানীর বালিশের নিচে ‘ হরিদাসের গুপ্তকথা ‘ ছিল , সেটা সন্ধান করিয়া বাহির করিয়া তাহার পাতায় পাতায় পেনসিল দিয়া লিখিয়াছে — কালো জল … বিস্তারিত পড়ুন

খাতা– ২য় অংশ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজকাল বালিকার সংক্ষিপ্ত রচনার মধ্যে মধ্যে দীর্ঘ বিচ্ছেদ নাই । পূর্বোদ্ ধৃত পদটির পরেই দেখা যায় লেখা আছে — দাদা যদি একবার বাড়ি নিয়ে যায় তাহলে দাদার লেখা আর কখনো খারাপ করে দেব না । শুনা যায় , উমার পিতা উমাকে প্রায় মাঝে মাঝে বাড়ি আনিতে চেষ্টা করেন । কিন্তু, গোবিন্দলাল প্যারীমোহনের সঙ্গে যোগ দিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

গুপ্তধন– ১ম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

অমাবস্যার নিশীথ রাত্রি। মৃত্যুঞ্জয় তান্ত্রিক মতে তাহাদের বহুকালের গৃহদেবতা জয়কালীর পূজায় বসিয়াছে। পূজা সমাধা করিয়া যখন উঠিল তখন নিকটস্থ আমবাগান হইতে প্রত্যুষের প্রথম কাক ডাকিল। মৃত্যুঞ্জয় পশ্চাতে ফিরিয়া চাহিয়া দেখিল, মন্দিরের দ্বার রূদ্ধ রহিয়াছে। তখন সে একবার দেবীর চরণতলে মস্তক ঠেকাইয়া তাঁহার আসন সরাইয়া দিল। সেই আসনের নীচে হইতে একটি কাঁঠালকাঠের বাক্স বাহির হইল। পৈতায় … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!