জীবিত ও মৃত–প্রথম পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রানীহাটের জমিদার শারদাশংকরবাবুদের বাড়ির বিধবা বধূটির পিতৃকুলে কেহ ছিল না ; সকলেই একে একে মারা গিয়াছে । পতিকুলেও ঠিক আপনার বলিতে কেহ নাই , পতিও নাই পুত্রও নাই । একটি ভাশুরপো , শারদাশংকরের ছোটো ছেলেটি , সেই তাহার চক্ষের মণি । সে জন্মিবার পর তাহার মাতার বহুকাল ধরিয়া শক্ত পীড়া হইয়াছিল , সেইজন্য এই বিধবা … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সকলেই জানেন , জীবনের যখন কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না তখনো অনেক সময় জীবন প্রচ্ছন্নভাবে থাকে , এবং সময়মতো পুনর্বার মৃতবৎ দেহে তাহার কার্য আরম্ভ হয় । কাদম্বিনীও মরে নাই — হঠাৎ কী কারণে তাহার জীবনের ক্রিয়া বন্ধ হইয়া গিয়াছিল । যখন সে সচেতন হইয়া উঠিল , দেখিল, চতুর্দিকে নিবিড় অন্ধকার । চিরাভ্যাসমতো যেখানে শয়ন … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–তৃতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কাপড়ে কাদা মাখিয়া , অদ্ভুত ভাবের বশে ও রাত্রিজাগরণে পাগলের মতো হইয়া , কাদম্বিনীর যেরূপ চেহারা হইয়াছিল তাহাতে মানুষ তাহাকে দেখিয়া ভয় পাইতে পারিত এবং ছেলেরা বোধ হয় দূরে পালাইয়া গিয়া তাহাকে ঢেলা মারিত । সৌভাগ্যক্রমে একটি পথিক ভদ্রলোক তাহাকে সর্বপ্রথমে এই অবস্থায় দেখিতে পায় । সে আসিয়া কহিল , “ মা , তোমাকে ভদ্রকুলবধূ … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–চতুর্থ পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রাত্রি প্রায় যখন দশটা তখন শ্রীপতি রানীহাট হইতে ফিরিয়া আসিলেন । মুষলধারে বৃষ্টিতে পৃথিবী ভাসিয়া যাইতেছে । ক্রমাগতই তাহার ঝর্ ঝর্ শব্দে মনে হইতেছে , বৃষ্টির শেষ নাই , আজ রাত্রিরও শেষ নাই । যোগমায়া জিজ্ঞাসা করিলেন , “ কী হইল । ” শ্রীপতি কহিলেন , “ সে অনেক কথা । পরে হইবে । ” … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–পঞ্চম পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কাদম্বিনী যে কেমন করিয়া রানীহাটে ফিরিয়া গেল , তাহা বলা কঠিন । কিন্তু প্রথমে কাহাকেও দেখা দিল না । সমস্ত দিন অনাহারে একটা ভাঙা পোড়ো মন্দিরে যাপন করিল । বর্ষার অকাল সন্ধ্যা যখন অত্যন্ত ঘন হইয়া আসিল এবং আসন্ন দুর্যোগের আশঙ্কায় গ্রামের লোকেরা ব্যস্ত হইয়া আপন আপন গৃহ আশ্রয় করিল তখন কাদম্বিনী পথে বাহির হইল … বিস্তারিত পড়ুন

তপস্বিনী– প্রথম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বৈশাখ প্রায় শেষ হইয়া আসিল। প্রথমরাত্রে গুমট গেছে, বাঁশগাছের পাতাটা পর্যন্ত নড়ে না, আকাশের তারাগুলো যেন মাথা-ধরার বেদনার মতো দব্‌ দব্‌ করিতেছে। রাত্রি তিনটের সময় ঝির্‌‍ঝির্ করিয়া একটুখানি বাতাস উঠিল। ষোড়শী শূন্য মেঝের উপর খোলা জানালার নীচে শুইয়া আছে, একটা কাপড়ে-মোড়া টিনের বাক্স তার মাথার বালিশ। বেশ বোঝা যায়, খুব উৎসাহের সঙ্গে সে কৃচ্ছ্রসাধন করিতেছে। … বিস্তারিত পড়ুন

তপস্বিনী– দ্বিতীয় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

ইংরেজি-বাংলা ডিক্সনারি, হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভারতবর্ষের ইতিহাসের কতকগুলা পাতা, এবং মলাটে রানী ভিক্টোরিয়ার মুখ-আঁকা অনেকগুলো এক্সেসাইজ বই। এই খাতা ঝাড়িয়া দেখিলে ইহার অধিকাংশ হইতেই অগ্‌‍ডেন কোম্পানির সিগারেট-বাক্স-বাহিনী বিলাতি নটীদের মূর্তি ঝরিয়া পড়িবে। সন্ন্যাস-আশ্রয়ের সময় পথের সান্ত্বনার জন্য এগুলো যে বরদা সঙ্গে লয় নাই, তাহা হইতে বুঝা যাইবে, তার মন প্রকৃতিস্থ ছিল না। আমাদের নায়কের তো এই … বিস্তারিত পড়ুন

তপস্বিনী– তৃতীয় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তার আভাস দিবার জো কী! বিশেষত জটাধারীরা যখন আহার-আরামের অপরিহার্য ত্রুটি লইয়া গালি দেয়, অভিশাপ দিতে ওঠে, তখন এক-একদিন ইচ্ছা হইত, তাদের ঘাড়ে ধরিয়া বিদায় করিতে। কিন্তু ষোড়শীর মুখ চাহিয়া তাহাদের পায়ে ধরিতে হইত। এই ছিল তাঁর কঠোর প্রায়শ্চিত্ত। সন্ন্যাসী আসিলেই প্রথমে অন্তঃপুরে একবার তার তলব পড়িত। পিসি তাকে লইয়া বসিতেন, ষোড়শী দরজার আড়ালে দাঁড়াইয়া … বিস্তারিত পড়ুন

তপস্বিনী– চতুর্থ অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  হইতেছিল ষোড়শী তাহা পূরণ করিয়া দিল। ষোড়শীর গহনা আর বড়োকিছু বাকি রহিল না, এবং তার মাসহারার টাকা প্রতি মাসে সেই অন্তর্হিত গহনাগুলোর অনুসরণ করিল।বাড়ির ডাক্তার অনাদি আসিয়া মাখনকে কহিলেন, “দাদা, করছ কী। মেয়েটা যে মারা যাবে।” মাখন উদ্‌বিগ্ন মুখে বলিলেন, “তাই তো, কী করি।” ষোড়শীর কাছে তাঁর আর সাহস নাই। এক সময়ে অত্যন্ত মৃদুস্বরে … বিস্তারিত পড়ুন

দর্পহরণ– প্রথম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  কী করিয়া গল্প লিখিতে হয়, তাহা সম্প্রতি শিখিয়াছি । বঙ্কিমবাবু এবং সার ওয়াল্‌টার স্কট পড়িয়া আমার বিশেষ ফল হয় নাই । ফল কোথা হইতে কেমন করিয়া হইল , আমার এই প্রথম গল্পেই সেই কথাটা লিখিতে বসিলাম । আমার পিতার মতামত অনেকরকম ছিল ; কিন্তু বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কোনো মত তিনি কেতাব বা স্বাধীনবুদ্ধি হইতে গড়িয়া … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!