নামঞ্জুর গল্প– তৃতীয় অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজ নিশ্চয় তোদের মীটিং আছে।” অমিয়া বলে, “তা হোক-না, দাদা, এখনো আর-কিছুক্ষণ—” আমি বলি, “না, না, সে কি হয়। কর্তব্য সব আগে।” কিন্তু প্রায়ই তো দেখতে পাই, কর্তব্যের অনেক আগেই অনিল এসে উপস্থিত হয়। তাতে অমিয়ার কর্তব্য-উৎসাহের পালে যেন দমকা হাওয়া লাগে, আমাকে বড়ো বেশি-কিছু বলতে হয় না। শুধু অনিল নয়, বিদ্যালয়-বর্জক আরও অনেক উৎসাহী … বিস্তারিত পড়ুন

নামঞ্জুর গল্প– চতুর্থ অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রশ্নটা শেষ করতে না দিয়ে ফস্‌ করে বলে ফেললেম, “পায়ে বড়ো ব্যথা করছিল।” পুলিস-সার্জেন্টের হাতে একটি মেয়ের অপমান বাঁচাতে গিয়ে জেলখানায় গিয়েছিলেম। আজ এক মেয়ের আক্রোশ থেকে আর-এক মেয়েকে আচ্ছাদন করবার জন্যে মিথ্যে কথা বলে ফেললেম। এবারেও শাস্তি শুরু হল। অমিয়া আমার পায়ের কাছে বসল। হরিমতি তাকে কুণ্ঠিত মৃদুকণ্ঠে কী একটা বললে, সে ঈষৎ মুখ … বিস্তারিত পড়ুন

পয়লা নম্বর–প্রথম অংশ–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি তামাকটা পর্যন্ত খাই নে। আমার এক অভ্রভেদী নেশা আছে, তারই আওতায় অন্য সকল নেশা একেবারে শিকড় পর্যন্ত শুকিয়ে মরে গেছে। সে আমার বই-পড়ার নেশা। আমার জীবনের মন্ত্রটা ছিল এই—                                 যাবজ্জীবেৎ নাই-বা জীবেৎ                                 ঋণং কৃত্বা বহিং পঠেৎ। যাদের বেড়াবার সখ বেশি অথচ পাথেয়ের অভাব, তারা যেমন ক’রে টাইম্‌টেব্‌ল্‌ পড়ে, অল্প বয়সে আর্থিক অসদ্ভাবের দিনে আমি … বিস্তারিত পড়ুন

পয়লা নম্বর–দ্বিতীয় অংশ–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

তাঁর জমানো টাকা প্রায় সাড়ে সাত হাজার দিয়ে গেলেন। বললেন, “এ টাকা সুদে খাটাবার দরকার নেই— নগদ খরচ করে এর থেকে তুমি সরোজের লেখাপড়ার ব্যবস্থা করে দিয়ো।” আমি এই ঘটনায় কিছু আশ্চর্য হয়েছিলুম। আমার শ্বশুর কেবল বুদ্ধিমান ছিলেন তা নয়, তিনি ছিলেন যাকে বলে বিজ্ঞ। অর্থাৎ, ঝোঁকের মাথায় কিছুই করতেন না, হিসেব করে চলতেন। তাই … বিস্তারিত পড়ুন

পয়লা নম্বর–তৃতীয় অংশ–রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আস্তাবলের কাঠের মেঝের উপর বিনা সংগীতের যে-তাল দিতে থাকে তাতে আমার ঘুম সর্বাঙ্গে টোল খেয়ে তুবড়ে যায়। তার উপর ভোরবেলায় সেই আট-দশটা ঘোড়াকে আট-দশটা সহিস যখন সশব্দে মলতে থাকে তখন সৌজন্য রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তার পরে তাঁর উড়ে বেহারা, ভোজপুরি বেহারা, তাঁর পাঁড়ে তেওয়ারি দরোয়ানের দল কেউই স্বরসংযম কিম্বা মিতভাষিতার পক্ষপাতী নয়। তাই … বিস্তারিত পড়ুন

দিদি– তৃতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

নীলমণির সমস্ত শরীরের মধ্যে মাথাটাই সর্বপ্রধান ছিল। দেখিলে মনে হইত, বিধাতা যেন একটা সরু কাঠির মধ্যে ফুঁ দিয়া তাহার ডগার উপরে একটা বড়ো বুদ্‌‌বুদ্ ফুটাইয়া তুলিয়াছেন। ডাক্তাররাও মাঝে মাঝে আশঙ্কা প্রকাশ করিত, ছেলেটি এইরূপ বুদ্‌বুদের মতোই ক্ষণভঙ্গুর ক্ষণস্থায়ী হইবে। অনেকদিন পর্যন্ত সে কথা কহিতে এবং চলিতে শেখে নাই। তাহার বিষন্ন গম্ভীর মুখ দেখিয়া বোধ হইত, … বিস্তারিত পড়ুন

দিদি– চতুর্থ পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

শীতকালে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব মফঃস্বল পর্যবেক্ষণে বাহির হইয়া শিকার সন্ধানে গ্রামের মধ্যে তাঁবু ফেলিয়াছেন। গ্রামের পথে সাহেবের সঙ্গে নীলমণির সাক্ষাৎ হয়। অন্য বালকেরা তাঁহাকে দেখিয়া চাণক্যশ্লোকের কিঞ্চিৎ পরিবর্তনপূর্বক নখী দন্তী শৃঙ্গী প্রভৃতির সহিত সাহেবকেও যোগ করিয়া যথেষ্ট দূরে সরিয়া গেল। কিন্তু, সুগম্ভীরপ্রকৃতি নীলমণি অটল কৌতূহলের সহিত প্রশান্তভাবে সাহেবকে নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিল। সাহেব সকৌতুকে কাছে আসিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–প্রথম পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রানীহাটের জমিদার শারদাশংকরবাবুদের বাড়ির বিধবা বধূটির পিতৃকুলে কেহ ছিল না ; সকলেই একে একে মারা গিয়াছে । পতিকুলেও ঠিক আপনার বলিতে কেহ নাই , পতিও নাই পুত্রও নাই । একটি ভাশুরপো , শারদাশংকরের ছোটো ছেলেটি , সেই তাহার চক্ষের মণি । সে জন্মিবার পর তাহার মাতার বহুকাল ধরিয়া শক্ত পীড়া হইয়াছিল , সেইজন্য এই বিধবা … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সকলেই জানেন , জীবনের যখন কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় না তখনো অনেক সময় জীবন প্রচ্ছন্নভাবে থাকে , এবং সময়মতো পুনর্বার মৃতবৎ দেহে তাহার কার্য আরম্ভ হয় । কাদম্বিনীও মরে নাই — হঠাৎ কী কারণে তাহার জীবনের ক্রিয়া বন্ধ হইয়া গিয়াছিল । যখন সে সচেতন হইয়া উঠিল , দেখিল, চতুর্দিকে নিবিড় অন্ধকার । চিরাভ্যাসমতো যেখানে শয়ন … বিস্তারিত পড়ুন

জীবিত ও মৃত–তৃতীয় পরিচ্ছেদ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কাপড়ে কাদা মাখিয়া , অদ্ভুত ভাবের বশে ও রাত্রিজাগরণে পাগলের মতো হইয়া , কাদম্বিনীর যেরূপ চেহারা হইয়াছিল তাহাতে মানুষ তাহাকে দেখিয়া ভয় পাইতে পারিত এবং ছেলেরা বোধ হয় দূরে পালাইয়া গিয়া তাহাকে ঢেলা মারিত । সৌভাগ্যক্রমে একটি পথিক ভদ্রলোক তাহাকে সর্বপ্রথমে এই অবস্থায় দেখিতে পায় । সে আসিয়া কহিল , “ মা , তোমাকে ভদ্রকুলবধূ … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!