যোগাযোগ–১০ম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বাদলা করেছে। বিপ্রদাসের শরীরটা ভালো নেই। বালাপোশ-মুড়ি দিয়ে আধশোওয়া অবস্থায় খবরের কাগজ পড়ছে। কুমুর আদরের বিড়ালটা বালাপোশের একটা ফালতো অংশ দখল করে গোলাকার হয়ে নিদ্রামগ্ন। বিপ্রদাসের টেরিয়র কুকুরটা অগত্যা ওর স্পর্ধা সহ্য করে মনিবের পায়ের কাছে শুয়ে স্বপ্নে এক-একবার গোঁ গোঁ করে উঠছে। এমন সময়ে এল আর-এক ঘটক। “নমস্কার।” “কে তুমি?” “আজ্ঞে, কর্তারা আমাকে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১১তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সন্ধ্যার অন্ধকার মেঘের ছায়ায় বৃষ্টির জলে নিবিড়। কুমুর আসবাবপত্র বেশি কিছু নেই। এক পাশে ছোটো খাট, আলনায় গুটি-দুয়েক পাকানো শাড়ি আর চাঁপা-রঙের গামছা। কোণে কাঁঠাল-কাঠের সিন্দুক, তার মধ্যে ওর ব্যবহারের কাপড়। খাটের নীচে সবুজ-রঙ-করা টিনের বাক্সে পান সাজবার সরঞ্জাম, আর-একটা বাক্সে চুল বাঁধবার সামগ্রী। দেয়ালের খাঁজের মধ্যে কাঠের থাকে কিছু বই, দোয়াতকলম, চিঠির কাগজ, মায়ের … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১২তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিপ্রদাস আরো কয়েকবার কুমুদিনীকে বুঝিয়ে বলবার চেষ্টা করলে। কুমু কথার জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে আঁচল খুঁটতে লাগল। বিয়ের প্রস্তাব পাকা, কেবল একটা বিষয় নিয়ে দুই পক্ষে কিছু কথা-চালাচালি হল। বিয়েটা হবে কোথায়? বিপ্রদাসের ইচ্ছে কলকাতার বাড়িতে। মধুসূদনের একান্ত জেদ নুরনগরে। বরপক্ষের ইচ্ছেই বাহাল রইল। আয়োজনের জন্যে কিছু আগে থাকতেই নুরনগরে আসতে হল। বৈশেখ-জষ্টির … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৪তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  ঘোষালদিঘির ধারে জঙ্গল সাফ হয়ে গেল— চেনা যায় না। জমি নিখুঁতভাবে সমতল, মাঝে মাঝে সুরকি দিয়ে রাঙানো রাস্তা, রাস্তার ধারে ধারে আলো দেবার থাম। দিঘির পানা সব তোলা হয়েছে। ঘাটের কাছে তকতকে নতুন বিলিতি পাল-খেলাবার দুটি নৌকো, তাদের একটির গায়ে লেখা ‘মধুমতী’, আর-একটির গায়ে ‘মধুকরী’। যে তাঁবুতে রাজাবাহাদুর স্বয়ং থাকবেন তার সামনে ফ্রেমে হলদে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৫তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিপ্রদাস নবগোপালকে ডেকে বললে, “নবু, আড়ম্বরে পাল্লা দেবার চেষ্টা— ওটা ইতরের কাজ।” নবগোপাল বললে, “চতুর্মুখ তাঁর পা ঝাড়া দিয়েই বেশি মানুষ গড়েছেন; চারটে মুখ কেবল বড়ো বড়ো কথা বলবার জন্যেই। সাড়ে পনেরো-আনা লোক যে ইতর, তাদের কাছে সম্মান রাখতে হলে ইতরের রাস্তাই ধরতে হয়।” বিপ্রদাস বললে, “তাতেও তুমি পেরে উঠবে না। তার চেয়ে সাত্ত্বিকভাবে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–১৬তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

দুদিন পরেই নবগোপাল এসে বললে, “কী করি একটা পরামর্শ দাও।” বিপ্রদাস ব্যস্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করল, “কেন? কী হয়েছে?” “সঙ্গে গোটাকতক সাহেব— দালাল হবে, কিংবা মদের দোকানের বিলিতি শুঁড়ি— কাল পীরপুরের চরের থেকে কিছু না হবে তো দুশো কাদাখোঁচা পাখি মেরে নিয়ে উপস্থিত। আজ চলেছে চন্দনদহের বিলে। এই শীতের সময় সেখানে হাঁসের মরসুম— রাক্ষুসে ওজনের জীবহত্যা … বিস্তারিত পড়ুন

দুই বোন– শশাঙ্ক– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

কিছু কাল এইরকম যায়। লাগল চোখে ঘোর, মন উঠল আবিল হয়ে। নিজেকে সুস্পষ্ট বুঝতে ঊর্মির সময় লেগেছে, কিন্তু একদিন হঠাৎ চমকে উঠে বুঝলে। মথুরদাদাকে ঊর্মি কী জানি কেন ভয় করত, এড়িয়ে বেড়াত তাকে। সেদিন মথুর সকালে দিদির ঘরে এসে বেলা দুপুর পর্যন্ত কাটিয়ে গেল। তার পরে দিদি ঊর্মিকে ডেকে পাঠালে। মুখ তার কঠোর, অথচ শান্ত। … বিস্তারিত পড়ুন

বউ-ঠাকুরানীর হাট–ঊনত্রিংশ পরিচ্ছেদ– – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সন্ধ্যার পর বসন্ত রায় একাকী বহির্বাটীতে বসিয়া আছেন। এমন সময়ে সীতারাম তাঁহাকে আসিয়া প্রণাম করিল। বসন্ত রায় তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কী সীতারাম, কী খবর?” সীতারাম কহিল, “সে পরে বলিব, আপনাকে আমার সঙ্গে আসিতে হইবে।” বসন্ত রায় কহিলেন, “কেন, কোথায় সীতারাম?” সীতারাম তখন কাছে আসিয়া বসিল। চুপি চুপি ফিস ফিস করিয়া কী বলিল। বসন্ত রায় চক্ষু … বিস্তারিত পড়ুন

বউ-ঠাকুরানীর হাট–ত্রিংশ পরিচ্ছেদ– – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সীতারাম যুবরাজকে সঙ্গে করিয়া খালের ধারে লইয়া গেল। সেখানে একখানা বড়ো নৌকা বাঁধা ছিল, সেই নৌকার সম্মুখে উভয়ে গিয়া দাঁড়াইলেন। তাঁহাদের দেখিয়া নৌকা হইতে এক ব্যক্তি তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া আসিয়া কহিল, “দাদা আসিয়াছিস?” উদয়াদিত্য একেবারে চমকিয়া উঠিলেন–সেই চিরপরিচিত স্বর, যে স্বর বাল্যের স্মৃতির সহিত, যৌবনের সুখদুঃখের সহিত জড়িত, পৃথিবীতে যতটুকু সুখ কাছে, যতটুকু আনন্দ আছে … বিস্তারিত পড়ুন

বউ-ঠাকুরানীর হাট-দ্বাত্রিংশ পরিচ্ছেদ– – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রতাপাদিত্যের পূর্বেই মহিষী ও বিভা উদয়াদিত্যের পলায়ন-সংবাদ অবগত হইয়াছিলেন। উভয়েই ভয়ে অভিভূত হইয়া ভাবিতেছিলেন যে, মহারাজ যখন জানিতে পারিবেন, তখন না জানি কী করিবেন। প্রতিদিন মহারাজ যখন এক-একটি করিয়া সংবাদ পাইতেছিলেন, আশঙ্কায় উভয়ের প্রাণ ততই আকুল হইয়া উঠিতেছিল। এইরূপে সপ্তাহ গেল, অবশেষে মহারাজ বিশ্বাসযোগ্য যথার্থ সংবাদ পাইলেন। কিন্তু তিনি কিছুই করিলেন না। ক্রোধের আভাসমাত্র প্রকাশ … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!