মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —তৃতীয় পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরাম অল্পদিনেই জানিল যে, যাত্রাওয়ালার জীবন সুখের নয়। যাত্রাওয়ালা কেবল কোকিলের মত গান করিয়া ডালে ডালে মুকুল ভোজন করিয়া বেড়ায় না। অল্পদিনে মুচিরামের শরীর শীর্ণ হইল। এ গ্রাম ও গ্রাম ছুটাছুটি করিতে সকল দিন আহার হয় না; রাত্রি জাগিয়া প্রাণ ওষ্ঠাগত; চুলের ভারে মাথায় উকুনে ঘা করিল; গায়ে খড়ি উড়িতে লাগিল; অধিকারীর কাণমলায় কাণমলায় দুই … বিস্তারিত পড়ুন

ধূলা—-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ধূলার মত সামান্য পদার্থ আর সংসারে নাই। কিন্তু আচার্য্য টিণ্ডল ধূলা সম্বন্ধে একটি দীর্ঘ প্রস্তাব লিখিয়াছেন। আচার্য্যের ঐ প্রবন্ধটি দীর্ঘ এবং দুরূহ, তাহা সংক্ষেপে এবং সহজে বুঝান অতি কঠিন কর্ম্ম। আমরা কেবল টিণ্ডল সাহেবকৃত সিদ্ধান্তগুলিই এ প্রবন্ধে সন্নিবেশিত করিব, যিনি তাঁহার প্রমাণ জিজ্ঞাসু হইবেন, তাঁহাকে আচার্য্যর প্রবন্ধ পাঠ করিতে হইবে। ১। ধূলা, এই পৃথিবীতলে এক … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —চতুর্থ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ঈশানবাবু একজন সৎকুলোদ্ভূত কায়স্থ। অতি ক্ষুদ্র লোক-কেন না, বেতন এক শত টাকা মাত্র-কোন জেলার ফৌজদারী আপিসের হেড কেরাণী। বাঙ্গালাদেশে মনুষ্যত্ব বেতনের ওজনে নির্ণীত হয়-কে কত বড় বাঁদর, তার লেজ মাপিয়া ঠিক করিতে হয়। এমন অধঃপতন আর কখন কোন দেশের হয় নাই। বন্দী চরণ-শৃঙ্খলের দৈর্ঘ্য দেখাইয়া বড়াই করে। ঈশানবাবু ক্ষুদ্র ব্যক্তি-ল্যাজ খাটো, বানরত্নে খাটো-কিন্তু মনুষ্যত্বে নহে। … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —পঞ্চম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

এদিকে, যশোদানন্দন, শ্রীশ্রীমুচিরাম শর্ম্মা-ঈশানমন্দিরে সুবিরাজমান-সম্পূর্ণরূপে মাতৃবিস্মৃত। যদি কখন মাকে মনে পড়িত, তবে সে আহারের সময়-ঈশানবাবুর ঘরের প্রফুল্ল-মল্লিকাসন্নিভ সিদ্ধান্ন, দানাদার গব্য ঘৃত, সুগন্ধি ঝোলে নিমগ্ন রোহিতমৎস্য, পৃথিবীর ন্যায় নিটোল গোলাকার সদ্যভর্জ্জিত লুচির রাশি-এই সকল পাতে পাইলে মুচিরাম মনে করিতেন, “মা বেটী কি ছাই-ই আমাকে খাওয়াইত!” সে সময়ে মাকে মনে পড়িত-অন্য সময়ে নহে। মুচিরামের পাঠশালার লেখা পড়া … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

পোয়া বারো-মুচিরাম জেলা লুঠিতে লাগিল। প্রথম লোকের কাছে চাহিয়া চিন্তিয়া দুই চারি আনা লইত। তার পর দাঁও শিথিল। ফেলু সেখের ধানগুলি জমীদার জোর করিয়া কাটিয়া লইতে উদ্যত, সাহেব দয়া করিয়া পুলিশকে হুকুম দিলেন, ফেলুর সম্পত্তি রক্ষা করিবে। সাহেব হুকুম দিলেন, কিন্তু পুলিশের নামে পরওয়ানাখানি লেখা আর হয় না। পরওয়ানা লেখা মুচিরামের হাত। পরওয়ানা যাইতে যাইতে … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —সপ্তম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরাম দুই তিন বৎসর মীর মুন্সীগিরি করিল-তার পর কালেক্টরীর পেস্কারি খালি হইল। পেস্কারিতে বেতন পঞ্চাশ টাকা-আর উপার্জ্জনের ত কথাই নাই। মুচিরাম ভাবিল, কপাল ঠুকিয়া একখানা দরখাস্ত করিব।তখন কালেক্টর ও ম্যাজিষ্ট্রেট পৃথক্ পৃথক্ ব্যক্তি হইত। সেখানে সে সময়ে হোম নামা এক সাহেব কালেক্টর ছিলেন। তিনি অতিশয় বুদ্ধিমান্ ও কর্ম্মঠ লোক ছিলেন, কিন্তু একটা দোষ ছিল-কিছু মিষ্ট … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —অষ্টম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরামবাবু-এখন তিনি একটা ভারি রকম বাবু, এখন তাঁহাকে শুধু মুচিরাম বলা যাইতে পারে না-মুচিরামবাবু পেস্কারি পাইয়া বড় ফাঁফরে পড়িলেন। বিদ্যাবুদ্ধিতে পেস্কারি পর্য্যন্ত কুলায় না-কাজ চলে কি প্রকারে? “ভাগ্যবানের বোঝা ভগবানে বয়”-মুচিরামবাবুর বোঝা বাহিত হইল। ভজগোবিন্দ চক্রবর্ত্তী নামে একজন তাইদনবীশ সেই কালেক্টরী আপিসে থাকে। ভজগোবিন্দ বার বৎসর তাইদনবীশ আছে। সে বুদ্ধিমান্, কর্ম্্ঠ, কালেক্টরীর সকল কর্ম্ম কাজ … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —নবম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

ভদ্রকালীর দ্বাদশ বৎসর বয়সে বিবাহ হয়-মুচিরামের এমনই অদৃষ্ট-বিবাহের পর দুই বৎসরের মধ্যে, ভদ্রকালী চৌদ্দ বৎসরের হইল। চৌদ্দ বৎসরের হইয়াই ভদ্রকালী ভজগোবিন্দের একটি চাকরির জন্য মুচিরামের উপর দৌরাত্ম্য আরম্ভ করিল, সুতরাং মুচিরাম চেষ্টা চরিত্র করিয়া ভজগোবিন্দের একটি মুহুরিগিরি করিয়া দিলেন। ইহাতে মুচিরাম কিছু বিপন্ন হইলেন। এক্ষণে ভজগোবিন্দের নিজের কাজ হইল-সে মনোযোগ দিয়া নিজের কাজ করে; মুচিরামের … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত —দশম পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

মুচিরামের মাথায় বজ্রাঘাত হইল। তিনি পেস্কারিতে ঘুষ লইয়া অসংখ্য টাকা রোজগার করেন-আড়াই শত টাকার ডিপুটিগিরিতে তাঁহার কি হইবে? মুচিরাম সিদ্ধান্ত করিলেন-ডিপুটিগিরি অস্বীকার করিবেন। কিন্তু ভজগোবিন্দ বুঝাইলেন যে, অস্বীকার করিলে রীড সাহেব নিশ্চয় বুঝিবে যে, মুচিরাম ঘুষের লোভে পেস্কারি ছাড়িতেছে না-তাহা হইলে শীঘ্রই তাড়াইয়া দিবে। তখন দুই দিক যাইবে। অগত্যা মুচিরাম ডিপুটিগিরি স্বীকার করিলেন।মুচিরাম ডিপুটি হইয়া … বিস্তারিত পড়ুন

মুচিরাম গুড়ের জীবনচরিত –একাদশ পরিচ্ছেদ—- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

চাকরি ছাড়িয়া দিয়া মুচিরাম ভদ্রকালীকে বলিলেন, “প্রিয়ে!” (তিনি সে কালের যাত্রার বাছা বাছা সম্বোধন পদগুলি ব্যবহার করিতেন) “প্রিয়ে!” বিষয় যেমন আছে-তেমনি একটি বাড়ী নাই। একটা বাড়ীর মত বাড়ী করিলে হয় না?” ভদ্র। দাদা বলে, এখানে বড় বাড়ী করিলে, লোকে বল্‌বে, ঘুষের টাকায় বড় মানুষ হয়েছে। মুচি। তা, এখানেই বা বাড়ী করায় কাজ কি? এখানে বুক … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!