মামলার ফল– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –প্রথম অংশ

বুড়া বৃন্দাবন সামন্তর মৃত্যুর পরে তাহার দুই ছেলে শিবু ও শম্ভু সামন্ত প্রত্যহ ঝগড়া-লড়াই করিয়া মাস-ছয়েক একান্নে এক বাটীতে কাটাইল, তাহার পরে একদিন পৃথক হইয়া গেল। গ্রামের জমিদার চৌধুরীমশাই নিজে আসিয়া তাহাদের চাষবাস, জমিজমা, পুকুর-বাগান সমস্ত ভাগ করিয়া দিলেন। ছোটভাই সুমুখের পুকুরের ওধারে খান-দুই মাটির ঘর তুলিয়া ছোটবৌ এবং ছেলেপুলে লইয়া বাস্তু ছাড়িয়া উঠিয়া গেল। … বিস্তারিত পড়ুন

মামলার ফল– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –দ্বিতীয় অংশ

জ্যাঠাইমা সভয়ে চীৎকার করিয়া উঠিলেন, গয়া ! হারামজাদা দস্যি! বাড়বাড়ি করিস নে বলচি! দু’দিন হয়নি আমি নতুন হাঁড়িকুঁড়ি কেড়েচি, একটা-কিছু ভাঙলে তোর জ্যাঠাকে দিয়ে তোর একখানা পা যদি না ভাঙাই ত তখন বলিস, হাঁ। গয়ারাম রান্নাঘরের শিকলটায় গিয়া হাত দিয়াছিল, হঠাৎ একটা নূতন কথা মনে পড়ায় সে অপেক্ষাকৃত শান্তভাবে ফিরিয়া আসিয়া বলিল, আচ্ছা, ভাত না … বিস্তারিত পড়ুন

মামলার ফল– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –তৃতীয় অংশ

শিবু ক্রুদ্ধস্বরে প্রশ্ন করিল, ব্যাপার কি ? গঙ্গামণি কাঁদিয়া কহিল, গয়া আমার সর্বস্ব ভেঙ্গে দিয়ে হাতে আমার এক ঘা বসিয়ে দিয়ে পালিয়েছে—এই দেখ ফুলে উঠেছে। বলিয়া সে স্বামীকে হাতটা দেখাইল। শিবুর পশ্চাতে তার ছোট-সম্বন্ধী ছিল। হুঁশিয়ার এবং লেখাপড়া জানে বলিয়া জমিদার-বাটীতে যাইবার যময় শিবু তাহাকে ও-পাড়া হইতে ডাকিয়া লইয়া গিয়াছিল। সে কহিল, সামন্তমশাই, এ সমস্ত … বিস্তারিত পড়ুন

মামলার ফল– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –চতুর্থ অংশ

বিমাতার নামে গয়া চক্ষের পলকে আগুন হইয়া উঠিল। বলিল, সে আবাগীর নাকি আমি আর মুখ দেখব? শুধু ঘরে আমার ছিপটা আনতে গেছি, বলে, দূর! দূর! এইবার জেলের ভাত খে গে যা! আমি বললুম, তোদের ভাত আমি খেতে আসিনি—আমি জ্যাঠাইমার কাছে যাচ্চি। পোড়ারমুখী কম শয়তান! ঐ গিয়ে লাগিয়েচে বলেই ত বাবা তোর হাত থেকে বাঁশপাতা কেড়ে … বিস্তারিত পড়ুন

মামলার ফল– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –পঞ্চম অংশ

শিবু বিস্ময়ে হতবুদ্ধি হইয়া শুধু কহিল, তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? সেদিন সন্ধ্যার পর পাঁচু সদর হইতে ফিরিয়া আসিয়া শ্রান্তভাবে ধপ করিয়া বসিয়া পড়িল। শিবু গরুর জন্য খড় কুচাইতেছিল, অন্ধকারে তাহার মুখের চোখের চাপা হাসি লক্ষ্য করিল না—সভয়ে জিজ্ঞাসা করিল, কি হ’লো ? পাঁচু গাম্ভীর্যের সহিত একটু হাস্য করিয়া কহিল, পাঁচু থাকলে যা হয় … বিস্তারিত পড়ুন

মেজদিদি– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –প্রথম অংশ

কেষ্টার মা মুড়ি-কড়াই ভাজিয়া, চাহিয়া-চিন্তিয়া, অনেক দুঃখে কেষ্টধনকে চোদ্দ বছরেরটি করিয়া মারা গেলে, গ্রামে তাহার আর দাঁড়াইবার স্থান রহিল না। বৈমাত্র বড় বোন কাদম্বিনীর অবস্থা ভাল। সবাই কহিল, যা কেষ্ট, তোর দিদির বাড়িতে গিয়ে থাক গে। সে বড়মানুষ, বেশ থাকবি যা। মায়ের দুঃখে কেষ্ট কাঁদিয়া-কাটিয়া জ্বর করিয়া ফেলিল। শেষে ভাল হইয়া, ভিক্ষা করিয়া শ্রাদ্ধ করিল। … বিস্তারিত পড়ুন

মেজদিদি– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –দ্বিতীয় অংশ

পৈতৃক বাড়িটা দুই ভায়ে ভাগ করিয়া লইয়াছিল। পাশের দোতলা বাড়িটা মেজভাই বিপিনের। ছোটভায়ের অনেকদিন মৃত্যু হইয়াছিল। বিপিনেরও ধান-চালের কারবার। তাহার অবস্থাও ভাল, কিন্তু বড়ভাই নবীনের সমান নয়। তথাপি ইহার বাড়ীটাই দোতলা। মেজবৌ হেমাঙ্গিনী শহরের মেয়ে। সে দাসদাসী রাখিয়া, লোকজন খাওয়াইয়া, জাঁকজমকে থাকিতে ভালবাসে। পয়সা বাঁচাইয়া গরিবী চালে চলে না বলিয়াই বছর-চারেক পূর্বে দুই জায়ে কলহ … বিস্তারিত পড়ুন

মেজদিদি– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –তৃতীয় অংশ

সন্ধ্যার সময় কাদম্বিনী প্রশ্ন করিলেন, কি খেয়ে এলি রে কেষ্ট? কেষ্ট সলজ্জ নতমুখে কহিল, লুচি। কি দিয়ে খেলি? কেষ্ট তেমনিভাবে বলিল, রুইমাছের মুড়োর তরকারি, সন্দেশ, রসগোল্লা। ইস্‌! বলি মেজ-ঠাকরুন মুড়োটা কার পাতে দিলেন? হঠাৎ এই প্রশ্নে কেষ্টর মুখখানি পাণ্ডুর হইয়া গেল। উদ্যত প্রহরণের সম্মুখে রজুবদ্ধ জানোয়ারের প্রাণটা যেমন করিয়া উঠে, কেষ্টর বুকের ভিতরটায় তেমনিধারা করিতে … বিস্তারিত পড়ুন

মেজদিদি– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –চতুর্থ অংশ

সর্দি উপলক্ষ করিয়া হেমাঙ্গিনীর মাঝে মাঝে জ্বর হইত, দিন-দুই থাকিয়া আপনি ভাল হইয়া যাইত। দিন-কয়েক পরে এমনি একটু জ্বর বোধ হওয়ায় সন্ধ্যার পর বিছানায় পড়িয়া ছিলেন। ঘরে কেহ নাই, হঠাৎ মনে হইল, কে যেন অতি সন্তর্পণে কবাটের আড়ালে দাঁড়াইয়া উঁকি মারিয়া দেখিতেছে। ডাকিলেন, কে রে ওখানে দাঁড়িয়ে, ললিত? কেহ সাড়া দিল না। আবার ডাকিতে, আড়াল … বিস্তারিত পড়ুন

মেজদিদি– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –পঞ্চম অংশ

পরদিন সকালেই কেষ্ট হঠাৎ গুটিগুটি ঘরে ঢুকিয়া হেমাঙ্গিনীর পায়ের কাছে বিছানার একপাশে আসিয়া বসিল। হেমাঙ্গিনী পা দুইটি একটু গুটাইয়া লইয়া সস্নেহে বলিলেন, দোকানে যাসনি কেষ্ট? এইবার যাব। দেরি করিস নে দাদা, এইবেলা যা, নইলে এক্ষুনি আবার গালাগালি করবে। কেষ্টর মুখ একবার আরক্ত, একবার পাণ্ডুর হইল। যাই, বলিয়া সে উঠিয়া দাঁড়াইল। একবার ইতস্তত করিয়া কি একটা … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!