দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––একাদশ পরিচ্ছেদ

খাওয়া প্রায় শেষ হইয়া আসিলে নরেন্দ্র পুনরায় সেই কথাই বলিল, কহিল, এত বেলা পর্যন্ত উপোস করে আমাকে সুমুখে বসিয়ে খাওয়াবার কোন দরকার ছিল না। অন্য দেশে এ প্রথা নেই। বিজয়া হাসিমুখে জবাব দিল, বাবা বলতেন, সে দেশের ভারী দুর্ভাগ্য, যে দেশের মেয়েরা অভুক্ত থেকে পুরুষদের খাওয়াতে পায় না, সঙ্গে বসে খেতে হয়। আমিও ঠিক তাই … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ

বিলাসবিহারীর প্রচণ্ড কীর্তি—পল্লীগ্রামে ব্রাহ্মমন্দির প্রতিষ্ঠার শুভদিন আসন্ন হইয়া আসিল। একে একে অতিথিগণের সমাগম ঘটিতে লাগিল। শুধু কলিকাতার নয়, আশপাশ হইতেও দুই-চারিজন সস্ত্রীক আসিয়া উপস্থিত হইলেন। কাল সেই শুভদিন। আজ সন্ধ্যায় রাসবিহারী তাঁহার আবাস-ভবনে একটি প্রীতিভোজের আয়োজন করিয়াছিলেন। সংসারে স্বার্থহানির আশঙ্কা কোন কোন বিষয়ী লোককে যে কিরূপ কুশাগ্রবুদ্ধি ও দূরদর্শী করিয়া তুলে, তাহা নিম্নলিখিত ঘটনা হইতে … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

এমন একদিন ছিল, যখন বিলাসের হাতে আত্মসমর্পণ করা বিজয়ার পক্ষে কিছুমাত্র কঠিন ছিল না। কিন্তু আজ শুধু বিলাস কেন, এতবড় পৃথিবীর এত কোটি লোকের মধ্যে কেবল একটিমাত্র লোক ছাড়া আর কেহ তাহাকে স্পর্শ করিয়াছে ভাবিলেও তাহার সর্বাঙ্গ ঘৃণায় লজ্জায় এবং কি-একটা গভীর পাপের ভয়ে ত্রস্ত সশঙ্কিত হইয়া ওঠে। এই জিনিসটাকেই সে রাসবিহারীর নিমন্ত্রণ সারিয়া পালকিতে … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

পোড়া তুবড়ির খোলাটার ন্যায় তুচ্ছ বস্তুর মত এই ব্রাহ্মমন্দির হইতেও পাছে সমারোহশেষে লোকের দৃষ্টি অবজ্ঞায় অন্যত্র সরিয়া যায়, এই আশঙ্কায় বিলাসবিহারী উৎসবের জেরটা যেন কিছুতেই আর নিকাশ করিতে চাহিতেছিল না। কিন্তু যাঁহারা নিমন্ত্রণ লইয়া আসিয়াছিলেন, তাঁহাদের বাড়িঘর আছে, কাজকর্ম আছে, পরের খরচে কেবল আনন্দে মাতিয়া থাকিলেই চলে না, সুতরাং শেষ একদিন তাহাদের করিতেই হইল। সেদিন … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– ষোড়শ পরিচ্ছেদ

নরেন অবাক হইয়া চাহিয়া রহিল—বিজয়ার প্রশ্নের জবাব দেওয়া হইল না। চোখের হিংস্র-দৃষ্টি শুধু মানুষ কেন, অনেক জানোয়ার পর্যন্ত বুঝিতে পারে। সুতরাং এই লোকটি যত সোজা মানুষ হোক, এবং সংসারের অভিজ্ঞতা তাহার যতই অল্প থাকুক, এ কথাটা সে একনিমেষেই টের পাইল যে ওই চেয়ারে আসীন পিতা-পুত্রের চোখের চাহনিতে আর যে ভাবই প্রকাশ করুক,হৃদয়ের প্রীতি প্রকাশ করে … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

এক টুকরা কাগজের উপর নরেন নিজের নামের সঙ্গে তাহার বিলাতী ডাক্তারী খেতাবটা জুড়িয়া দিয়া ভিতরে পাঠাইয়া দিয়াছিল। সেইটা পাঠ করিয়া দয়াল অত্যন্ত সন্ত্রস্ত হইয়া উঠিলেন। এতবড় একটা ডাক্তার পায়ে হাঁটিয়া তাহাকে দেখিতে আসিয়াছে ইহা তাঁহার নিজেরই যেন একটা অশোভন স্পর্ধা ও অপরাধের মত ঠেকিল এবং ইহাকেই বঞ্চিত করিয়া নিজে এই বাটীতে বাস করিতেছেন এই লজ্জায় … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ

পাঁচ-ছয় দিনের মধ্যেই বিজয়ার রোগ সারিয়া গেল বটে, কিন্তু শরীর সারিতে দেরি হইতে লাগিল। বিলাস ভাল ডাক্তার দিয়া বলকারক ঔষধ ও পথ্যের বন্দোবস্ত করিতে ত্রুটি করিল না, কিন্তু দুর্বলতা যেন প্রতিদিন বাড়িয়াই যাইতে লাগিল। এদিকে ফাল্গুন শেষ হইতে চলিল, মধ্যে শুধু চৈত্র মাসটা বাকী; বৈশাখের প্রথম সপ্তাহেই ছেলের বিবাহ দিবেন রাসবিহারীর ইহাই সঙ্কল্প। কিন্তু পাত্র … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ

ছেলের মুখে ব্যাপারটা শুনিয়া ক্রোধে,বিরক্তিতে ও আশাভঙ্গের নিদারুণ হতাশ্বাসে রাসবিহারীর ব্রহ্ম-জ্ঞান ও আনুষঙ্গিক ইত্যাদির খোলস একমুহূর্তে খসিয়া পড়িয়া গেল। তিনি তিক্ত-কটুকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, আরে বাপু, হিঁদুরা যে আমাদের ছোটলোক বলে, সেটা ত আর মিছে কথা নয়। ব্রাহ্মই হই, আর যাই হই—কৈবর্ত ত? বামুন-কায়েতের ছেলে হলে ভদ্রতাও শিখতিস, নিজের ভালমন্দ কিসে হয়, না হয়, সে কাণ্ডজ্ঞানও … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– বিংশ পরিচ্ছেদ

প্রাচীরের ধারে যে কয়টা ঘর লইয়া বিজয়ার জমিদারির কাজকর্ম চলিত, তাহার সম্মুখেই এক সার ঘন-পল্লবের লিচুগাছ থাকায় বসতবাটীর উপরের বারান্দা হইতে ঘরগুলার কিছুই প্রায় দেখা যাইত না। তা ছাড়া, পূর্বদিকের প্রাচীরের গায়ে যে ছোট দরজাটা ছিল তাহা দিয়া যাতায়াত করিলে কর্মচারীদের কে কখন আসিতেছে যাইতেছে তাহার কিছুই জানিবার জো ছিল না। সেই অবধি দয়াল বাড়ির … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––চতুর্থ পরিচ্ছেদ

বহুকাল-পরিত্যক্ত জমিদার-বাটী বিলাসের তত্ত্বাবধানে মেরামত হইতে লাগিল। কলিকাতা হইতে অদৃষ্টপূর্ব বিচিত্র আসবাব-সকল গরুর গাড়ি বোঝাই হইয়া নিত্য আসিতে লাগিল। জমিদারের একমাত্র কন্যা দেশে বাস করিতে আসিবেন, এই সংবাদ প্রচারিত হইবামাত্র শুধু কেবল কৃষ্ণপুরের নয়, রাধাপুর, ব্জ্রপুর, দিঘ্ড়া প্রভৃতি আশপাশের পাঁচ-সাতটা গ্রামের মধ্যে হৈচৈ পড়িয়া গেল। এমনই ত ঘরের পাশে জমিদারের বাস চিরদিনই লোকের অপ্রিয়, তাহাতে … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!