প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

এই কলেজে ছেলেমেয়েদের মেলামেশা বরঞ্চ কিছু বাড়াবাড়ি ছিল। এরা প্রায় সবাই ধনী ঘরের—এরা পয়সার ফেলাছড়া করতে ভালোবাসে। নানারকম বাজে খরচ করে মেয়েদের কাছে দরাজ হাতের নাম কিনত। মেয়েদের মনে ঢেউ তুলত, তারা বুক ফুলিয়ে বলত—‘আমাদেরই কলেজের ছেলে এরা’। সরস্বতী পুজো তারা এমনি ধূম করে করত যে, বাজারে গাঁদা ফুলের আকাল পড়ে যেত। এ ছাড়া চোখ-টেপাটেপি … বিস্তারিত পড়ুন

প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় অংশ

এই রকম কথা-কাটাকাটির পালা চলত যখন তখন। সুরীতি অস্থির হয়ে উঠল—তার স্বাভাবিক গাম্ভীর্য আর টেকে না। সে ঠাট্টা করতে জানে না, অথচ কড়া জবাব করবার ভাষাও তার আসে না। সে মনে মনে জ্বলে পুড়ে মরে। সুরীতির এই দুর্গতিতে দয়া হয় এমন পুরুষও ছিল ওদের মধ্যে, কিন্তু তারা ঠাঁই পায় না। আর-একদিন হঠাৎ কী খেয়াল গেল, … বিস্তারিত পড়ুন

প্রগতিসংহার-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৩য় অংশ

হাসিমুখে মেনে নেবেন। ওঁরা তো আর ইংরেজ নন, ইংরেজরা বিদেশীদের কাছ থেকেও নিজেদের আদবকায়দার স্খলন সইতে পারেন না, এমন ওঁদের অহংকার। কিন্তু ফরাসীদের তা নয়, বরঞ্চ যদি কিছু অসম্পূর্ণ থাকে সেটা হেসে গ্রহণ করবে। দেখা যাক্‌-না—নীহাররঞ্জনের বিদ্যের দৌড় কতদূর। শুনেছি ও ঘরে বসে বসে ফরাসী পড়ার চর্চা করে।” নীহাররঞ্জনের বাড়ি চন্দননগরে। প্রথম বয়সে ফরাসী স্কুলে … বিস্তারিত পড়ুন

নিশীথে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

“ডাক্তার! ডাক্তার! ” জ্বালাতন করিল। এই অর্ধেক রাত্রে— চোখ মেলিয়া দেখি আমাদের জমিদার দক্ষিণাচরণবাবু। ধড়্ফ্ড় করিয়া উঠিয়া পিঠভাঙা চৌকিটা টানিয়া আনিয়া তাঁহাকে বসিতে দিলাম এবং উদ্‌বিগ্নভাবে তাঁহার মুখের দিকে চাহিলাম। ঘড়িতে দেখি, তখন রাত্রি আড়াইটা। দক্ষিণাচরণবাবু বিবর্ণমুখে বিস্ফারিত নেত্রে কহিলেন, “আজ রাত্রে আবার সেইরূপ উপদ্রব আরম্ভ হইয়াছে— তোমার ঔষধ কোনো কাজে লাগিল না।” আমি কিঞ্চিৎ … বিস্তারিত পড়ুন

নিশীথে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় অংশ

গম্ভীরভাবে তাঁহার নিকট কবিত্ব ফলাইতে যাইতাম তিনি এমন সুগভীর স্নেহ অথচ অনিবার্য কৌতুকের সহিত হাসিয়া উঠিতেন। আমার নিজের অগোচর অন্তরের কথাও অন্তর্যামীর ন্যায় তিনি সমস্তই জানিতেন এ কথা মনে করিলে আজও লজ্জায় মরিয়া যাইতে ইচ্ছা করে। হারান ডাক্তার আমাদের স্বজাতীয়। তাঁহার বাড়িতে আমার প্রায়ই নিমন্ত্রণ থাকিত। কিছুদিন যাতায়াতের পর ডাক্তার তাঁহার মেয়েটির সঙ্গে আমার পরিচয় … বিস্তারিত পড়ুন

ঠাকুরদা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম পরিচ্ছেদ

নয়নজোড়ের জমিদারেরা এককালে বাবু বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবুয়ানার আদর্শ বড়ো সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করিতে অনেক খানা নাচ ঘোড়দৌড় এবং সেলাম-সুপারিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনো সাধারণের নিকট হইতে বাবু উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত। আমাদের নয়নজোড়ের বাবুরা পাড় ছিঁড়িয়া ফেলিয়া ঢাকাই কাপড় পরিতেন, কারণ পাড়ের … বিস্তারিত পড়ুন

ঠাকুরদা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় পরিচ্ছেদ

নিজের অতীত মনোভাব বিশ্লেষণ করিয়া যতটা মনে পড়ে তাহাতে বোধ করি, কৈলাসবাবুর প্রতি আমার আন্তরিক বিদ্বেষের আর-একটি গূঢ় কারণ ছিল। তাহা একটু বিবৃত করিয়া বলা আবশ্যক। আমি বড়োমানুষের ছেলে হইয়াও যথাকালে এম. এ. পাস করিয়াছি, যৌবন সত্ত্বেও কোনোপ্রকার কুসংসর্গ কুৎসিত-আমোদে যোগ দিই নাই, এবং অভিভাবকদের মৃত্যুর পরে স্বয়ং কর্তা হইয়াও আমার স্বভাবের কোনোপ্রকার বিকৃতি উপস্থিত … বিস্তারিত পড়ুন

দুরাশা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-প্রথম অংশ

দার্জিলিঙে গিয়া দেখিলাম , মেঘে বৃষ্টিতে দশ দিক আচ্ছন্ন । ঘরের বাহির হইতে ইচ্ছা হয় না , ঘরের মধ্যে থাকিতে আরো অনিচ্ছা জন্মে । হোটেলে প্রাতঃকালের আহার সমাধা করিয়া পায়ে মোটা বুট এবং আপাদমস্তক ম্যাকিন্টশ পরিয়া বেড়াইতে বাহির হইয়াছি । ক্ষণে ক্ষণে টিপ্‌ টিপ্‌ করিয়া বৃষ্টি পড়িতেছে এবং সর্বত্র ঘন মেঘের কুজ্ঝটিকায় মনে হইতেছে , … বিস্তারিত পড়ুন

দুরাশা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় অংশ

কেশরলালঠাকুর কাহারো অন্নগ্রহণ বা দানপ্রতিগ্রহ করেন না । ‘ এইরূপে প্রত্যক্ষে বা পরোক্ষে কেশরলালকে কোনোরূপ ভক্তিচিহ্ন দেখাইতে না পারিয়া আমার চিত্ত যেন ক্ষুব্ধ ক্ষুধাতুর হইয়া থাকিত । আমাদের পূর্বপুরুষের কেহ-একজন একটি ব্রাক্ষ্মণকন্যাকে বলপূর্বক বিবাহ করিয়া আনিয়াছিলেন , আমি অন্তঃপুরের প্রান্তে বসিয়া তাঁহারই পুণ্যরক্তপ্রবাহ আপন শিরার মধ্যে অনুভব করিতাম , এবং সেই রক্তসূত্রে কেশরলালের সহিত একটি … বিস্তারিত পড়ুন

দুরাশা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-তৃতীয় অংশ

কিন্তু জীবনের এই কয়টা দিনে বুঝিয়াছি যে , অসাধ্য অসম্ভব কিছুই নাই । নবাব-অন্তঃপুরের বালিকার পক্ষে বাহিরের সংসার একান্ত দুর্গম বলিয়া মনে হইতে পারে , কিন্তু তাহা কাল্পনিক ; একবার বাহির হইয়া পড়িলেই একটা চলিবার পথ থাকেই । সে পথ নবাবি পথ নহে , কিন্তু পথ ; সে পথে মানুষ চিরকাল চলিয়া আসিয়াছে — তাহা … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!