গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

বছর-পাঁচেক পরে দুই বন্ধুতে এইরূপ কথাবার্তা হইতেছিল। তোমার উপর আমার যে কত শ্রদ্ধা ছিল মহিম, তা বলতে পারি না। বলবার জন্য তোমাকে পীড়াপীড়ি করচি না সুরেশ। সে শ্রদ্ধা বুঝি আর থাকে না। না থাকলে তোমাকে দণ্ড দেবো, এমন ভয় ত কখনও দেখাই নি। তোমাকে কপটতা দোষ দিতে তোমার অতি-বড় শত্রুও কখনও পারত না। শত্রু পারত … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – অষ্টাদশ পরিচ্ছেদ

যাহারা নূতন জুতার সুতীক্ষ্ণ কামড় গোপনে সহ্য করিয়া বাহিরে স্বচ্ছন্দতার ভান করে, ঠিক তাহাদের মতই সুরেশ সমস্ত দিনটা হাসিখুশিতে কাটাইয়া দিল; কিন্তু আর একজন, যাহাকে আরও গোপনে এই দংশনের অংশ গ্রহণ করিতে হইল, সে পারিল না। স্বামীর অবিচলিত গাম্ভীর্যের কাছে এই কদাকার ভাঁড়ামিতে, এত বেহায়াপনায় তাহার ক্ষোভে অপমানে মাথা খুঁড়িয়া মরিতে ইচ্ছা করিতে লাগিল। তাঁহাকে … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –তৃতীয় পরিচ্ছেদ

সুরেশের একদিকে গায়ে জোর ছিল যেমন অসাধারণ, অন্যদিকে অন্তরটা ছিল তেমনি কোমল, তেমনি স্নেহশীল। পরিচিত—অপরিচিত কাহারও কোন দুঃখ-কষ্টের কথা শুনিলে তাহার কান্না আসিত। সে ছেলেবেলায় কখনো একটা মশামাছি পর্যন্ত মারিতে পারিত না। জৈন মারোয়াড়ীদের দেখাদেখি কতদিন সে পকেট ভরিয়া সুজি এবং চিনি লইয়া, স্কুল কামাই করিয়া, গাছতলায় গাছতলায় ঘুরিয়া পিপীলিকা ভোজন করাইয়াছে। জীবনে কতবার যে … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ

যে শয্যা স্পর্শ করিতেও আজ অচলার ঘৃণা বোধ হওয়া উচিত ছিল, তাহাই যখন সে যথানিয়মে প্রস্তুত করিতে অপরাহ্নবেলায় ঘরে প্রবেশ করিল, তখন সমস্ত মনটা যে তাহার কোথায় এবং কি অবস্থায় ছিল—মানব-চিত্ত সম্বন্ধে যাঁহার কিছুমাত্র অভিজ্ঞতা আছে তাঁহারই অগোচর রহিবে না। যন্ত্র-চালিতের মত অভ্যস্ত কর্ম সমাপন করিয়া ফিরিবার মুখে পাশের ছোট টেবিলটির প্রতি অকস্মাৎ তার চোখ … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –চতুর্থ পরিচ্ছেদ

সুরেশের একবার মনে হইল, তাহার নিষ্ঠুর সত্য অচলার বুকের ভিতর গিয়া যেন গভীর হইয়া বিঁধিল, কিন্তু পিতা সেদিকে দৃক্‌পাতও করিলেন না। বরঞ্চ কন্যাকেই ইঙ্গিত করিয়া বলিতে লাগিলেন, সুরেশবাবু, আপনি যে প্রকৃত বন্ধুর কর্তব্য করতে এসেছেন, এ কথা আমরা কেউ যেন ভ্রমেও না অবিশ্বাস করি। হোক না অপ্রিয়, হোক না কঠোর, কিন্তু তবুও এই যথার্থ ভালবাসা। … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– বিংশ পরিচ্ছেদ

প্রভাতের প্রথম আলোকে স্বামীর মুখের প্রতি চোখ পড়িবামাত্রই অচলার বুকের ভিতরটা হাহা-রবে কাঁদিয়া উঠিল। চোখের জল আর সে কোনমতে সংবরণ করিতে পারিল না। এ কি হইয়াছে! মাথার চুল ধুলাতে, বালুতে, ভস্মে রুক্ষ, বিবর্ণ; শীর্ণ বিরসমুখ অগ্ন্যুত্তাপে ঝলসিয়া একটা রাত্রির মধ্যেই তাহার অমন সুন্দর স্বামীকে যেন বুড়া করিয়া দিয়া গিয়াছে। গ্রামের লোক চারিদিকে ঘুরিয়া ফিরিয়া কলরব … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –পঞ্চম পরিচ্ছেদ

বাহিরে আসিয়া যেন নেশার মত তাহার সমস্ত দেহ-মন টলিতে লাগিল। আকাশের খর রৌদ্র তখন নিস্তেজ হইয়া পড়িতেছিল। সে গাড়ি ফিরাইয়া দিয়া একাকী পদব্রজে বাহির হইয়া পড়িল; ইচ্ছা, কলিকাতার জনাকীর্ণ কোলাহলময় রাজপথের মধ্যে আপনাকে সম্পূর্ণ মগ্ন করিয়া দিয়া অবস্থাটা একবার ভাবিয়া লয়। অচলার মুখ, অবয়ব, ভাষা, ব্যবহার—সমস্তই তাহার শুরু হইতে শেষ পর্যন্ত পুনঃ পুনঃ মনে পড়িয়া … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

সুরেশ মনে মনে অসংশয়ে অনুভব করিতেছিল যে, কথাটা মহিম যেমন করিয়াই উড়াইয়া দিক, সে তাহারই একান্ত অনুরোধ উপেক্ষা করিতে না পারিয়াই এতদিন অচলার সহিত দেখা করিতে পারে নাই। সে যত ভালই বাসুক, এখন পর্যন্ত সে একটা ব্রাহ্মমেয়ের কাছে তাহার শৈশবের বন্ধুকে খাটো করিতে পারে না, এমন কথা কাল শুনিলেও সুরেশের বুকখানা গর্বে দশ হাত ফুলিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –সপ্তম পরিচ্ছেদ

আহারাদির পর কোনমতেই কেদারবাবু এই রৌদ্রের মধ্যে সুরেশকে ছাড়িয়া দিলেন না। বিশ্রামের নামে সমস্ত দুপুরটা একটা ঘরে কয়েদ করিয়া রাখিলেন। সে চোখ বুজিয়া কৌচের উপর পড়িয়া রহিল, কিন্তু কিছুতেই ঘুমাইতে পারিল না। ঘরের বাহিরে মধ্যাহ্ন-সূর্য আকাশে জ্বলিতে লাগিল, ভিতরে আত্মসংযমের আত্মগ্লানি ততোধিক ভীষণ তেজে সুরেশের বুকের ভিতর প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল। এমনি করিয়া সমস্ত বেলাটা অন্তরে-বাহিরে … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –অষ্টম পরিচ্ছেদ

ঘরে নীরবতা ভঙ্গ করিল সুরেশ, কহিল, হঠাৎ আচ্ছা একটা কাণ্ড করে বসলুম। অচলা কথা কহিল না। সুরেশ পুনরায় কহিল, আপনার নিশ্চয়ই আমাকে একটা রাক্ষস বলে মনে হচ্চে। একলা বসে থাকতে বোধ করি আপনার সাহস হচ্চে না, না? বলিয়া টানিয়া টানিয়া হাসিতে লাগিল। অচলা এখনও মুখ তুলিল না; কিন্তু তুলিলে দেখিতে পাইত, সুরেশের ওই একান্ত চেষ্টার … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!