গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ

একজনের উচ্ছ্বসিত অকপট প্রশংসার মধ্যে যে আর একজনের কত বড় সুকঠোর আঘাত ও অপমান লুকাইয়া থাকিতে পারে, বক্তা ও শ্রোতা উভয়ের কেহই বোধ করি তাহা মুহূর্তকাল পূর্বেও জানিত না। সুরেশ হাতের বাটি হাতে লইয়া আড়ষ্ট হইয়া বসিয়া রহিল, এবং অচলা তাহার ঘরে ঢুকিয়া নিঃশব্দে দ্বার রুদ্ধ করিয়া বালিশে মুখ গুঁজিয়া মর্মান্তিক ক্রন্দনের দুর্নিবার বেগ রোধ … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –ষড়্‌‌বিংশ পরিচ্ছেদ

অচলার সমস্ত কাজকর্ম, সমস্ত ওঠা-বসার মধ্যেও নিভৃত হৃদয়তলে যে কথাটা অনুক্ষণ জ্বালা করিতেই লাগিল, তাহা এই যে সুরেশের মনের মধ্যে একটা প্রকাণ্ড পরিবর্তন কাজ করিতেছে, যাহার সহিত তাহার নিজের কোন সম্বন্ধ নেই। যে উদ্দাম ভালবাসা একদিন তাহারই মধ্যে জন্মলাভ করিয়া বর্ধিত হইয়া উঠিয়াছে, সে আজ জীর্ণ আশ্রয়ের ন্যায় তাহাকে ত্যাগ করিয়া অন্যত্র যাত্রা করিয়াছে। আপনাকে … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –সপ্তবিংশ পরিচ্ছেদ

হাওড়া স্টেশন হইতে পশ্চিমের গাড়ি ছাড়িতে মিনিট-দশেক মাত্র বিলম্ব আছে। বাহিরে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, টিপি-টিপি বৃষ্টির আর বিরাম নাই। লোকের পায়ে পায়ে জলে-কাদায় সমস্ত প্লাটফর্ম ভরিয়া উঠিয়াছে,—যাত্রীরা পিছল বাঁচাইয়া ভিড় ঠেলিয়া কোনমতে মোটঘাট লইয়া জায়গা খুঁজিয়া ফিরিতেছিল; এমনি সময় অচলা চাহিয়া দেখিল, প্রকাণ্ড একটা ব্যাগ হাতে করিয়া সুরেশ আসিতেছে। বিস্ময়ে, দুশ্চিন্তায় কেদারবাবুর মুখ অন্ধকার হইয়া উঠিল, … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– অষ্টাবিংশ পরিচ্ছেদ

সুরেশ পাশের গাড়িতে গিয়া উঠিল সত্য, কিন্তু তিনি? এই ত সে চোখ মেলিয়া নিরন্তর বাহিরের দিকে চাহিয়া আছে—তাঁহার চেহারা, তা সে যত অস্পষ্টই হোক, সে কি একবারও তাহার চোখে পড়িত না? আর এলাহাবাদের পরিবর্তে এই কি-একটা নূতন স্টেশনেই বা গাড়ি বদল করা হইল কিসের জন্য? জলের ছাটে তাহার মাথার চুল, তাহার গায়ের জামা সমস্ত ভিজিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– ঊনত্রিংশ পরিচ্ছেদ

সেই ঘরের সম্মুখে ব্যাগের উপরে বসিয়া আশা ও আশ্বাসের স্বপ্ন দেখিয়া অচলার কোথায় দিয়া যে দুই ঘণ্টা অতিবাহিত হইয়া গেল, তাহা সে জানিতে পারিল না। কিছুক্ষণ সূর্য উঠিয়াছে। শীতের দিনের ধূলি-ধূসরিত তরুশ্রেণী কল্যকার ঝড়-জলে স্নাত ও নির্মল হইয়া প্রভাতসূর্যকিরণে ঝলমল করিতেছে। সিক্ত-স্নিগ্ধ রাজপথের উপর দিয়া বিগত-ক্লেশ পান্থ প্রফুল্লমুখে চলিতে শুরু করিয়াছে; কদাচিৎ দুই-একটা এক্কাগাড়ি ছোট … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – চতুর্দশ পরিচ্ছেদ

আজ অচলার বিবাহ। বিবাহ-সভার পথে পলকের জন্য সুরেশকে দেখা গিয়াছিল। তাহার পরে সে যে কোথায় অন্তর্ধান হইয়া গেল, সারা রাত্রির মধ্যে কেদারবাবুর বাটীতে আর তাহার উদ্দেশ পাওয়া গেল না। বিবাহ হইয়া গেল। দুই-একটা দিন অচলার মনের মধ্যে বিপ্লব বহিতেছিল। সেই নিমন্ত্রণের রাত্রে সুরেশের পিসিমার কথা সে কোনমতেই ভুলিতে পারিতেছিল না; আজ তাহার নিবৃত্তি হইল। মহিমের … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

ওলো সেজদি! অচলা পাশের ঘর হইতে ব্যস্ত হইয়া এ ঘরে আসিয়া পড়িল। মৃণালের কোমরে আঁচল জড়ানো—সে একটা ছোট দেরাজ একলাই টানাটানি করিয়া সোজা করিয়া রাখিতেছিল। অচলা ঘরে ঢুকিতেই, সে মহা রাগতভাবে চেঁচাইয়া উঠিল, ওরে মুখপোড়া মেয়ে, তুমি নবাবের মত হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে, আর আমি তোমার শোবার ঘর গুছিয়ে দেব? নাও বলচি ওই ঝাঁটাটা তুলে—ঐ … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – ষোড়শ পরিচ্ছেদ

একি, সুরেশ যে! এস এস, বাড়ির ভেতরে এস। ভাল ত? মহিমের স্বাগত-সম্ভাষণ সমাপ্ত হইবার পূর্বে সুরেশ সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল। হাতের গ্লাডস্টোন ব্যাগটা নামাইয়া রাখিয়া কহিল, হ্যাঁ, ভাল। কিন্তু কি রকম, একা দাঁড়িয়ে যে? অচলা বধূঠাকুরানী একমুহূর্তে সচলা হয়ে অন্তর্ধান হলেন কিরূপে? তাঁর প্রবল বিশ্রম্ভালাপ মোড়ের ওপর থেকে যে আমাকে এ বাড়ির পাত্তা দিলে। বস্তুতঃ অচলার … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –প্রথম পরিচ্ছেদ

মহিমের পরম বন্ধু ছিল সুরেশ। একসঙ্গে এফ. এ. পাস করার পর সুরেশ গিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি হইল; কিন্তু মহিম তাহার পুরাতন সিটি কলেজেই টিকিয়া রহিল। সুরেশ অভিমান-ক্ষুণ্ণকণ্ঠে কহিল, মহিম, আমি বার বার বলছি, বি. এ., এম. এ. পাস করে কোন লাভ হবে না। এখনও সময় আছে, তোমারও মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি হওয়া উচিত। মহিম সহাস্যে কহিল, … বিস্তারিত পড়ুন

গৃহদাহ– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় – সপ্তদশ পরিচ্ছেদ

আপনাকে সংবরণ করিয়া মহিম ঘরে ঢুকিয়া একখানা চৌকি টানিয়া লইয়া উপবেশন করিল। মানব-চিত্ত যে অবস্থায় সর্বাপেক্ষা অসঙ্কোচে ও অবলীলাক্রমে মিথ্যা উদ্ভাবন করিতে পারে, সুরেশের তখন সেই অবস্থা। সে চট করিয়া হাত দিয়া চোখ মুছিয়া ফেলিল; সলজ্জ হাস্যে, উদারভাবে স্বীকার করিল যে, সে বাস্তবিকই ভারী দুর্বল হইয়া পড়িতেছে। কিন্তু মহিম সেজন্য কিছুমাত্র উদ্বেগ প্রকাশ করিল না, … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!