চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––বিয়াল্লিশ পরিচ্ছেদ

অপরাহ্ন সাড়ে-পাঁচটায় কাঠের কারখানার ছুটি হইলে দিবাকর আরাকানের একটা রাস্তা দিয়া চলিয়াছে। ধুলায় ধুলায়, করাতের গুঁড়ায় তাহার সর্বাঙ্গ সমাচ্ছন্ন। গলায় উত্তরীয় নাই, পিরানখানি জীর্ণ মলিন, নানাস্থানে সেলাই করা, পরিধেয় বস্ত্রও তদুপযুক্ত, ডান পায়ের জুতাটার গোড়ালি ক্ষইয়া একপেশে হইয়া গেছে, বাঁ পায়ের বুড়া আঙ্গুলের ডগাটা জুতার সুমুখ দিয়া দেখা যাইতেছে—হঠাৎ দেখিলে যেন চেনাই যায় না,—সারাদিন পেটে … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––তেতাল্লিশ পরিচ্ছেদ

সকাল বেলা কিরণময়ী শ্রান্ত অবসন্ন দেহে কাজ করিতেছিল, কামিনী বাড়িউলী আসিয়া দোরগোড়ায় দাঁড়াইয়া একগাল হাসিয়া কহিল, গেছে ছোঁড়া? বালাই গেছে। কাল আমারে যেন মারমুখী! আরে, তোর কর্ম মেয়েমানুষ রাখা? ছাগলকে দিয়ে যব মাড়ানো গেলে লোকে আর গোরু পুষত না। কিরণময়ী মুখ তুলিয়া প্রশ্ন করিল, কে বললে সে গেছে? বাড়িউলী আসিয়া চোখ ঘুরাইয়া বলিল, নাও আর … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––চুয়াল্লিশ পরিচ্ছেদ

উপেন্দ্র বলিয়াছিলেন, সাবিত্রী, হাড়-ক’খানা আমার গঙ্গায় দিস দিদি—অনেক জ্বালায় জ্বলেচি, তবু একটু ঠাণ্ডা হব। সাবিত্রীকে তিনি আজকাল কখনো ‘তুমি’ কখনো ‘তুই’ যা মুখে আসিত, তাই বলিয়াই ডাকিতেন। সাবিত্রী তাঁহার সেই শেষ ইচ্ছা এবং শেষ চিকিৎসার জন্য কিছুদিন হইল কলিকাতার জোড়াসাঁকোয় একটা বাড়ি ভাড়া লইয়া সিয়াছিল। আজ সন্ধ্যার পর এক পসলা ঝড়বৃষ্টি হইয়া গেলেও আকাশে মেঘ … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––সাঁইত্রিশ পরিচ্ছেদ

সতীশের অরণ্যবাসের ব্যবস্থাটা যদিচ আজও তেমনি আছে বটে, কিন্তু তাহার সেই বৈরাগ্যসাধনের ধারাটা ইতিমধ্যেই যে কতখানি বিপথে সরিয়া গিয়াছে, তাহা যে-কেহ তাহাকে মাস-দুই পূর্বে দেখিয়াছে তাহারই চোখে পড়িবে। যে লোক স্বেচ্ছায় নির্বাসন-দণ্ড গ্রহণ করিয়া এই নির্জন নির্বান্ধব পুরীতে একাকী বাস করিতে আসিয়াছে, তাহার এই আকস্মিক বেশভূষার প্রতি অনুরাগের হেতুটাই বা কি এবং কেনই বা পাখির … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––আটত্রিশ পরিচ্ছেদ

সহসা ভ্রাতার অসুখের টেলিগ্রাম পাইয়া জগৎতারিণীকে তাড়াতাড়ি শান্তিপুরে যাইতে হইয়াছিল। সুতরাং সতীশের কাছে প্রস্তাবটা উত্থাপন করিবার তখন সুযোগ পান নাই। আজ তাহাকে ভাল করিয়া খাওয়াইয়া কথাটা পাড়িবেন, মনে মনে এই সঙ্কল্প স্থির করিয়া সকালে উঠিয়াই সরকারকে নিমন্ত্রণ করিয়া আসিতে পাঠাইয়া দিয়াছিলেন। ইতিমধ্যে এই অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিল। যাহার আগমন সবচেয়ে অপ্রীতিকর, অকস্মাৎ সেই শশাঙ্কমোহন সকালের ট্রেনে … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––তেইশ পরিচ্ছেদ

ঘণ্টা-দুই পরে সতীশ পাথুরিয়াঘাটার উদ্দেশে নিষ্ক্রান্ত হইয়া মনে মনে কহিল, উঃ কি শয়তান! যাক, আমিও বাঁচিয়া গেলাম। আমার কাঁধের উপর হইতে ভূত নামিয়া গেল। পথে চলিতে চলিতে ভাবিতে লাগিল, কিন্তু উপীনদাকে আজ মুখ দেখাইব কেমন করিয়া? কারণ, আগুনে হাত দিলে কি হয়, ইহা যেমন সে নিশ্চিত জানিত, তাহার আবাল্য-সুহৃৎ উপীনদাকে সে ঠিক তেমনি চিনিত। তাঁহার … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––চব্বিশ পরিচ্ছেদ

নারীর সম্বন্ধে উপেন্দ্রর মত পরিবর্তন করিবার সময় আসিয়া উপস্থিত হইল। আজ তাহাকে মনে মনে স্বীকার করিতে হইল, স্ত্রীলোক সম্বন্ধে তাহার জ্ঞানের মধ্যে মস্ত ভুল ছিল। এমন নারীও আছে, যাহার সম্মুখে পুরুষের অভ্রভেদী শির আপনি ঝুঁকিয়া পড়ে। জোর খাটে না, মাথা অবনত করিতে হয়। এমনি নারী কিরণময়ী। সেই প্রথম পরিচয়ের রাত্রে ইহারই সম্বন্ধে উপেন্দ্র সতীশের কাছে, … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––পঁচিশ পরিচ্ছেদ

অস্থি-মাংস-মেদ-মজ্জা-রক্তে গঠিত এই মানব-দেহে সমস্ত বস্তুরই একটা সীমা নির্দিষ্ট আছে। মাতৃস্নেহও অসীম নহে, তাহারও পরিমাণ আছে। গুরুভার অহর্নিশ অবিচ্ছেদে টানিয়া ফিরিয়া রক্ত-চলাচল যখন বন্ধ হইয়া আসিতে থাকে, তখন সেই সীমারেখার একান্তে দাঁড়াইয়া জননীও আর সন্তানকে বহন করিয়া এক পদও অগ্রসর হইতে পারে না। তাহা স্নেহের অভাবে কিংবা ক্ষমতার অভাবে সে মীমাংসার ভার অন্তর্যামীর হাতে, মায়ের … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––ছাব্বিশ পরিচ্ছেদ

প্রায় অপরাহ্নবেলায় কিরণময়ী জ্যোতিষবাবুদের বাটীতে আসিয়া উপস্থিত হইল। পরনে মোটা থানের কাপড়, গায়ে অলঙ্কারের চিহ্নমাত্র নাই, সুদীর্ঘ রুক্ষ কেশরাশি বিপর্যস্তভাবে মাথায় জড়ানো, দুই-একটা চূর্ণকুন্তল কপালে ঝুলিয়া পড়িয়াছে; চোখে তাহার শ্রান্ত উদাস দৃষ্টি। যেন বৈধব্যের অলৌকিক ঐশ্বর্য তাহার সর্বাঙ্গ ঘিরিয়া মূর্তিমতী হইয়াছে। সে মুখের পানে চাহিলেই চক্ষু আপনিই যেন তাহার পদপ্রান্তে নামিয়া আসে। সরোজিনী বাহিরের বারান্দায় … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––সাতাশ পরিচ্ছেদ

দাসীকে বিদায় দিয়া কিরণময়ী স্বস্থানে ফিরিয়া আসিয়া যখন বসিল, উপেন্দ্র ঘাড় তুলিয়া একবার চাহিতে পর্যন্ত পারিল না। কিরণময়ীর তাহা দৃষ্টি এড়াইল না, কিন্তু, সেও কোন কথা না কহিয়া নীরবে কাজ করিয়া যাইতে লাগিল। মিনিট-দশেক এইভাবে যখন গেল, তখন কিরণময়ী ধীরে ধীরে কহিল, আচ্ছা ঠাকুরপো, আড়াল থেকে কেউ যদি আমাদের এই রকম চুপচাপ বসে থাকতে দেখে, … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!