দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

দু’মাস-ছ’মাসের কথা নয়, পঁচিশ বৎসরের কাহিনী বলিতেছি। বনমালী প্রাচীন হইয়াছেন। কয়েক বৎসর হইতে রোগে ভুগিয়া ভুগিয়া এইবার শয্যা আশ্রয় করিয়া টের পাইয়াছিলেন, আর বোধ হয় উঠিতে হইবে না। তিনি চিরদিনই ভগবৎপরায়ণ ও ধর্মভীরু। মরণে তাঁহার ভয় ছিল না, শুধু একমাত্র সন্তান বিজয়ার বিবাহ দিয়া যাইবার অবকাশ ঘটিল না মনে করিয়াই কিছু ক্ষুণ্ণ ছিলেন। সেদিন অপরাহ্নকালে … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––তৃতীয় পরিচ্ছেদ

মাস-দুই হইল বনমালীর মৃত্যু হইয়াছে। তাঁহার কলিকাতার এত বড় বাড়িতে বিজয়া এখন একা। তাহার দেশের বিষয়-সম্পত্তির দেখাশুনা রাসবিহারীই করিতে লাগিলেন, এবং সেই সূত্রে তাহার একপ্রকার অভিভাবক হইয়াও বসিলেন। কিন্তু নিজে থাকেন গ্রামে, সেইজন্য পুত্র বিলাসবিহারীর উপরেই বিজয়ার সমস্ত খবরদারির ভার পড়িল। সে-ই তাহার প্রকৃত অভিভাবক হইয়া উঠিল। তখন এই সময়টায়, প্রতি ব্রাহ্মপরিবারে ‘সত্য’, ‘সুনীতি’, ‘সুরুচি’ … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––চতুর্থ পরিচ্ছেদ

বহুকাল-পরিত্যক্ত জমিদার-বাটী বিলাসের তত্ত্বাবধানে মেরামত হইতে লাগিল। কলিকাতা হইতে অদৃষ্টপূর্ব বিচিত্র আসবাব-সকল গরুর গাড়ি বোঝাই হইয়া নিত্য আসিতে লাগিল। জমিদারের একমাত্র কন্যা দেশে বাস করিতে আসিবেন, এই সংবাদ প্রচারিত হইবামাত্র শুধু কেবল কৃষ্ণপুরের নয়, রাধাপুর, ব্জ্রপুর, দিঘ্ড়া প্রভৃতি আশপাশের পাঁচ-সাতটা গ্রামের মধ্যে হৈচৈ পড়িয়া গেল। এমনই ত ঘরের পাশে জমিদারের বাস চিরদিনই লোকের অপ্রিয়, তাহাতে … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––পঞ্চম পরিচ্ছেদ

সে চলিয়া গেলে, মিনিট-খানেক বিজয়া অন্যমনস্ক ও নীরব থাকিয়া সহসা চকিত হইয়া মুখ তুলিতেই, নিতান্ত অকারণেই তাহার কপোলের উপর একটা ক্ষীণ আরক্ত আভা দেখা দিল। বিলাসের দৃষ্টি অন্যত্র নিবদ্ধ না থাকিলে তাহার বিস্ময় ও অভিমানের হয়ত পরিসীমা থাকিত না। বিজয়া মৃদু হাসিয়া কহিল, আমাদের কথাটা যে শেষ হতেই পেলে না। তা হলে তালুকটা নেওয়াই আপনার … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ

দিঘ্‌ড়ায় স্বর্গীয় জগদীশবাবুর বাড়িটা সরস্বতীর পরপারে। ইহা গ্রামান্তরে হইলেও নদীতীরের কতকগুলি বাঁশঝাড়ের জন্যেই বনমালীবাবুর বাটীর ছাদ হইতে তাহা দেখা যাইত না। তখন শরৎকালের অবসানে সরস্বতীর জলধারা শীর্ণতর হইয়া আসিতেছিল, এবং তীরের উপর দিয়া কৃষকদিগের গমনাগমনের পথটিও পায়ে পায়ে শুকাইয়া কঠিন হইয়া উঠিতেছিল। এই পথের উপর দিয়া আজ অপরাহ্নবেলায় বিজয়া বৃদ্ধ দরোয়ান কানহাইয়া সিংকে সঙ্গে করিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– সপ্তম পরিচ্ছেদ

রাসবিহারী বলিলেন, আমরাই নোটিশ দিয়েছি, আবার আমরাই যদি তাকে রদ করতে যাই, আর পাঁচজন প্রজার কাছে সেটা কি-রকম দেখাবে, একবার ভেবে দেখ দিকি মা। বিজয়া কহিল, এই মর্মে একখানা চিঠি লিখে কেন তার কাছে পাঠিয়ে দিন না। আমার নিশ্চয় বোধ হচ্ছে, তিনি শুধু অপমানের ভয়েই এখানে আসতে সাহস করেন না। রাসবিহারী জিজ্ঞাসা করিলেন, অপমান কিসের? … বিস্তারিত পড়ুন

দত্তা– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় –– প্রথম পরিচ্ছেদ

সেকালে হুগলি ব্রাঞ্চ স্কুলের হেডমাস্টারবাবু বিদ্যালয়ের রত্ন বলিয়া যে তিনটি ছেলেকে নির্দেশ করিতেন, তাহারা তিনখানি বিভিন্ন গ্রাম হইতে প্রত্যহ এক ক্রোশ পথ হাঁটিয়া পড়িতে আসিত। তিনজনের কি ভালবাসাই ছিল! এমন দিন ছিল না, যেদিন এই তিনটি বন্ধুতে স্কুলের পথে ন্যাড়া বটতলায় একত্র না হইয়া বিদ্যালয়ে প্রবেশ করিত! তিন জনেরই বাড়ি ছিল হুগলির পশ্চিমে। জগদীশ আসিত … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––সাঁইত্রিশ পরিচ্ছেদ

সতীশের অরণ্যবাসের ব্যবস্থাটা যদিচ আজও তেমনি আছে বটে, কিন্তু তাহার সেই বৈরাগ্যসাধনের ধারাটা ইতিমধ্যেই যে কতখানি বিপথে সরিয়া গিয়াছে, তাহা যে-কেহ তাহাকে মাস-দুই পূর্বে দেখিয়াছে তাহারই চোখে পড়িবে। যে লোক স্বেচ্ছায় নির্বাসন-দণ্ড গ্রহণ করিয়া এই নির্জন নির্বান্ধব পুরীতে একাকী বাস করিতে আসিয়াছে, তাহার এই আকস্মিক বেশভূষার প্রতি অনুরাগের হেতুটাই বা কি এবং কেনই বা পাখির … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––আটত্রিশ পরিচ্ছেদ

সহসা ভ্রাতার অসুখের টেলিগ্রাম পাইয়া জগৎতারিণীকে তাড়াতাড়ি শান্তিপুরে যাইতে হইয়াছিল। সুতরাং সতীশের কাছে প্রস্তাবটা উত্থাপন করিবার তখন সুযোগ পান নাই। আজ তাহাকে ভাল করিয়া খাওয়াইয়া কথাটা পাড়িবেন, মনে মনে এই সঙ্কল্প স্থির করিয়া সকালে উঠিয়াই সরকারকে নিমন্ত্রণ করিয়া আসিতে পাঠাইয়া দিয়াছিলেন। ইতিমধ্যে এই অভাবনীয় কাণ্ড ঘটিল। যাহার আগমন সবচেয়ে অপ্রীতিকর, অকস্মাৎ সেই শশাঙ্কমোহন সকালের ট্রেনে … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––ঊনচল্লিশ পরিচ্ছেদ

যক্ষ্মারোগগ্রস্ত স্ত্রীকে লইয়া উপেন্দ্র মাস পাঁচ-ছয় নৈনিতালে বাস করিয়া মাত্র কয়েকদিন হইল বক্সারে ফিরিয়া আসিয়াছে। এটা সুরবালার শেষ ইচ্ছা। সেদিন, সন্ধ্যার পর স্নিগ্ধ দীপালোকের পানে অনেকক্ষণ চুপ করিয়া চাহিয়া থাকিয়া এই পরলোকের যাত্রীটি ধীরে ধীরে স্বামীর হাতের উপর ডান হাতটি রাখিয়া বলিল, তোমার কথায় আর কখনো কোনদিন সন্দেহ হয় না। আজ আমাকে একটি কথা সত্যি … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!