দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —আটাশ অংশ

অকস্মাৎ দিনকয়েকের অবিশ্রান্ত বারিপাতে সংসারের যাবতীয় কাজকর্ম এমন অচল হইয়া গেল যে, অপ্রতিহত-গতি জেলার ম্যাজিস্ট্রেটও তাঁহার তদন্তের চাকাটাকে ঠেলিয়া আনিতে পারিলেন না। তবে তাঁহার হুকুম ছিল, বর্ষণ কমিলেই তিনি চণ্ডীগড়ে পদার্পণ করিবেন, এবং সেই হুকুম তামিলের দিন পড়িয়াছে আজ। খবর পৌঁছিয়াছে, গ্রামের বাহিরে বারুইয়ের তীরে তাঁহার তাঁবু খাটানো হইতেছে, মুরগী, আণ্ডা, দুধ, ঘি প্রভৃতি যোগান … বিস্তারিত পড়ুন

দেবদাস – শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়– ষোড়শ পরিচ্ছেদ

কলিকাতা ত্যাগ করিয়া কিছুদিন যখন দেবদাস এলাহাবাদে বাস করিতেছিল, তখন হঠাৎ একদিন সে চন্দ্রমুখীকে চিঠি লিখিয়াছিল, বৌ, মনে করেছিলাম, আর কখনো ভালবাসব না। একে তো ভালবেসে শুধু হাতে ফিরে আসাটাই বড় যাতনা, তার পরে আবার নূতন করে ভালবাসতে যাওয়ার মতো বিড়ম্বনা সংসারে আর নেই। প্রত্যুত্তরে চন্দ্রমুখী কি লিখিয়াছিল, তাহাতে আবশ্যক নাই; কিন্তু এই সময়টায় দেবদাসের … বিস্তারিত পড়ুন

দেবদাস – শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় — প্রথম পরিচ্ছেদ

একদিন বৈশাখের দ্বিপ্রহরে রৌদ্রেরও অন্ত ছিল না, উত্তাপেরও সীমা ছিল না। ঠিক সেই সময়টিতে মুখুয্যেদের দেবদাস পাঠশালা-ঘরের এক কোণে ছেঁড়া মাদুরের উপর বসিয়া, শ্লেট হাতে লইয়া, চক্ষু চাহিয়া, বুজিয়া, পা ছড়াইয়া, হাই তুলিয়া, অবশেষে হঠাৎ খুব চিন্তাশীল হইয়া উঠিল; এবং নিমিষে স্থির করিয়া ফেলিল যে, এই পরম রমণীয় সময়টিতে মাঠে মাঠে ঘুড়ি উড়াইয়া বেড়ানোর পরিবর্তে … বিস্তারিত পড়ুন

দেবদাস – শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় — দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

দেবদাসকে পরদিন খুব মারধর করা হইল,—সমস্তদিন ঘরে রুদ্ধ করিয়া রাখা হইল। তাহার পর, তাহার জননী যখন ভারী কান্নাকাটি করিতে লাগিলেন, তখন দেবদাসকে ছাড়িয়া দেওয়া হইল।পরদিন ভোরবেলায় সে পলাইয়া আসিয়া পার্বতীর ঘরের জানালার নিকট দাঁড়াইল—ডাকিল, পারু! আবার ডাকিল, পারু! পার্বতী জানালা খুলিয়া কহিল, দেবদা! দেবদাস ইশারা করিয়া বলিল, শিগগির আয়। দু’জনে একত্র হইলে দেবদাস বলিল, তামাক … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় — পনর অংশ

চৈত্রের সংক্রান্তি আসন্ন হইয়া উঠিল। চড়ক ও গাজন-উৎসবের উত্তেজনায় দেশের কৃষিজীবীর দল প্রায় উন্মত্ত হইয়া উঠিয়াছে—এতবড় পর্বদিন তাহাদের আর নাই। নরনারী-নির্বিশেষে যাহারা সমস্ত মাস ব্যাপিয়া সন্ন্যাসের ব্রত ধারণ করিয়া আছে, তাহাদের পরিধেয় বস্ত্রে ও উত্তরীয়ের গৈরিক দেশের বাতাসে যেন বৈরাগ্যের রঙ ধরিয়া গেছে। পথে পথে ‘শিব-শম্ভু’ নিনাদের বিরাম নাই, চণ্ডীর দেউলে তাহাদের আসা-যাওয়া শেষ হইতেছে … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —ষোল অংশ

চৈত্রের সংক্রান্তি নিরুপদ্রবে কাটিয়া গেল—’শিব-শম্ভু’র গাজন-উৎসবে কোথাও কিছুমাত্র বিঘ্ন ঘটিল না। দর্শকের দল ঘরে ফিরিল, দোকানীরা দোকান ভাঙ্গিতে প্রবৃত্ত হইল, বাতাসে তেলে-ভাজা খাবারের গন্ধ ফিকা হইয়া আসিল, এবং গেরুয়াধারীরাও চীৎকার ছাড়িয়া গৃহকর্মে মন দিবার প্রয়োজন অনুভব করিল। চিরদিনের অভ্যস্ত সুরে চারিদিকের আবহাওয়ায় সুখ-দুঃখের আবার সেই পরিচিত স্রোত দেখা দিল, কেবল চণ্ডীগড়ের ভৈরবীর দেহের মধ্যে কি … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —সতর অংশ

ষোড়শীর যখন চেতনা ফিরিয়া আসিল, তখন সাগর চলিয়া গেছে। মন্দিরের ভৃত্য ডাকিয়া কহিল, মা, এবার দোর বন্ধ করি? কর, বলিয়া সে চাবির জন্য দাঁড়াইয়া রহিল। ছেলেবেলা হইতে জীবনটা তাহার যথেষ্ট সুখেরও নয়, নিছক আরামেও দিন কাটে নাই; বিশেষ করিয়া যে অশুভ মুহূর্তে বীজগ্রামের নূতন জমিদার চণ্ডীগড়ে পদার্পণ করিয়াছিলেন, তখন হইতে উপদ্রবের ঘুর্ণিহাওয়া তাহাকে অনুক্ষণ ঘেরিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —আঠার অংশ

অলকা? বলুন। তোমার এখানে তামাক-টামাকের ব্যবস্থা নেই বুঝি? ষোড়শী একবার মুখ তুলিয়াই আবার অধোমুখে স্থির হইয়া রহিল। জবাব না পাইয়া জীবানন্দ সজোরে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস মোচন করিয়া বলিল, ব্রজেশ্বরের কপাল ভাল ছিল; দেবী-রানী তাকে ধরে আনিয়েছিল সত্যি, কিন্তু অম্বুরী তামাক খাইয়েছিল, এবং ভোজনান্তে দক্ষিণা দিয়েছিল। বিদায়ের পালাটা আর তুলব না, বলি, বঙ্কিমবাবুর বইখানা পড়েচ ত? ষোড়শী … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —উনিশ অংশ

জীবানন্দের উচ্ছিষ্ট ভোজনপাত্র ও ভুক্তাবশেষ প্রভৃতি ফেলিয়া দিতে এবং রান্নাঘরের কিছু কিছু কাজ সরিয়া দ্বার বন্ধ করিয়া আসিতে ষোড়শী বাহিরে চলিয়া গেলে, তাহার সেই চিঠির ছেঁড়া টুকরাখানি জীবানন্দের চোখে পড়িল। হাতে তুলিয়া লইয়া সেই মুক্তার মত সাজানো অক্ষরগুলির প্রতি মুগ্ধচক্ষে চাহিয়া সে প্রদীপের আলোকে রাখিয়া সমস্ত লেখাটুকু একনিঃশ্বাসে পড়িয়া ফেলিল। অনেক কথাই বাদ গিয়াছে, তথাপি … বিস্তারিত পড়ুন

দেনা-পাওনা– শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় —কুড়ি অংশ

সেদিন প্রাতঃকালটা হঠাৎ একটা ঘন কুয়াশায় সমস্ত অস্পষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল। রায়মহাশয় সেইমাত্র শয্যাত্যাগ করিয়া বাহিরে আসিয়াছিলেন; একজন ভদ্রব্যক্তিকে প্রবেশ করিতে দেখিয়া কহিলেন, কে ও? আমি নির্মল, বলিয়া জামাতা কাছে আসিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিল। এই আকস্মিক আগমনে তিনি কোনরূপ বিস্ময় বা হর্ষ প্রকাশ করিলেন না। চাকরদের ডাকিয়া বলিলেন, কে আছিস রে, নির্মলের জিনিসপত্রগুলো সব হৈমর ঘরে … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!