চোখের বালি–সাইত্রিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিহারী একলা নিজেকে লইয়া অন্ধকার রাত্রে কখনো ধ্যান করিতে বসে না। কোনোকালেই বিহারী নিজের কাছে নিজেকে আলোচ্য বিষয় করে নাই। সে পড়াশুনা কাজকর্ম বন্ধুবান্ধব লোকজন লইয়াই থাকিত। চারি দিকের সংসারকেই সে নিজের চেয়ে প্রাধান্য দিয়া আনন্দে ছিল, কিন্তু হঠাৎ একদিন প্রবল আঘাতে তাহার চারি দিক যেন বিশ্লিষ্ট হইয়া পড়িয়া গেল; প্রলয়ের অন্ধকারে অভ্রভেদী বেদনার গিরিশৃঙ্গে … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–আটত্রিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বিনোদিনী যখন যাত্রিশূন্য মেয়েদের গাড়িতে চড়িয়া বাতায়ন হইতে চষামাঠ ও ছায়াবেষ্টিত এক-একখানি গ্রাম দেখিতে পাইল, তখন তাহার মনে স্নিগ্ধনিভৃত পল্লীর জীবনযাত্রা জাগিয়া উঠিল। সেই তরুচ্ছায়াবেষ্টনের মধ্যে তাহার স্বরচিত কল্পনা-নীড়ে নিজের প্রিয় বইগুলি লইয়া কিছুকাল নগরবাসের সমস্ত ক্ষোভ, দাহ ও ক্ষতবেদনা হইতে সে শান্তিলাভ করিতে পারিবে, এই কথা তাহার মনে হইতে লাগিল। গ্রীষ্মের শস্যশূন্য দিগন্তপ্রসারিত ধূসর … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–ঊনচল্লিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পাড়ায় ভারি একটা গোলমাল পড়িয়া গেল। পল্লীবৃদ্ধেরা চণ্ডীমণ্ডপে বসিয়া কহিল, “এ কখনোই সহ্য করা যাইতে পারে না। কলিকাতায় কী ঘটিতেছিল, তাহা কানে না তুলিলেও চলিত, কিন্তু এমন সাহস যে মহেন্দ্রকে চিঠির উপর চিঠি লিখিয়া পাড়ায় আনিয়া এমন প্রকাশ্য নির্লজ্জতা ! এরূপ ভ্রষ্টাকে গ্রামে রাখিলে তো চলিবে না।” বিনোদিনী আজ নিশ্চয় আশা করিয়াছিল, বিহারীর পত্রের … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–চব্বিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মহেন্দ্র ভাবিতে লাগিল, ‘আমি বলিয়াছি মিথ্যা কথা, আমি বিনোদিনীকে ভালোবাসি না। অত্যন্ত কঠিন করিয়া বলিয়াছি। আমি যে তাহাকে ভালোবাসি তাহা না-ই হইল, কিন্তু ভালোবাসি না, এ কথাটা বড়ো কঠোর। এ কথায় আঘাত না পায় এমন স্ত্রীলোক কে আছে। ইহার প্রতিবাদ করিবার অবসর কবে কোথায় পাইব। ভালোবাসি এ কথা ঠিক বলা যায় না; কিন্তু ভালোবাসি … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–চল্লিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মহেন্দ্র কোথায় নিরুদ্দেশ হইয়া গেল, সেই আশঙ্কায় রাজলক্ষ্মীর আহারনিদ্রা বন্ধ। সাধুচরণ সম্ভব-অসম্ভব সকল স্থানেই তাহাকে খুঁজিয়া বেড়াইতেছে– এমন সময় মহেন্দ্র বিনোদিনীকে লইয়া কলিকাতায় ফিরিয়া আসিল। পটলডাঙার বাসায় তাহাকে রাখিয়া রাত্রে মহেন্দ্র তাহার বাড়িতে আসিয়া পৌঁছিল। মাতার ঘরে মহেন্দ্র প্রবেশ করিয়া দেখিল, ঘর অন্ধকারপ্রায়, কেরোসিনের লণ্ঠন আড়াল করিয়া রাখা হইয়াছে। রাজলক্ষ্মী রোগীর ন্যায় বিছানায় শুইয়া আছেন … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–পঁচিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সেদিন নূতন ফাল্গুনে প্রথম বসন্তের হাওয়া দিতেই আশা অনেক দিন পরে সন্ধ্যার আরম্ভে ছাদে মাদুর পাতিয়া বসিয়াছে। একখানি মাসিক কাগজ লইয়া খণ্ডশ প্রকাশিত একটা গল্প খুব মনোযোগ দিয়া সেই অল্প আলোকে পড়িতেছিল। গল্পের নায়ক তখন সংবৎসর পরে পূজার ছুটিতে বাড়ি আসিবার সময় ডাকাতের হাতে পড়িয়াছে, আশার হৃদয় উদ্‌‍বেগে কাঁপিতেছিল, এ দিকে হতভাগিনী নায়িকা ঠিক সেই … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–একচল্লিশতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  প্রথম রাতে বিনোদিনীকে পটলডাঙার বাসায় রাখিয়া মহেন্দ্র যখন তাহার কাপড় ও বই আনিতে বাড়ি গেল, বিনোদিনী তখন কলিকাতার বিশ্রামবিহীন জনতরঙ্গের কোলাহলে একলা বসিয়া নিজের কথা ভাবিতেছিল। পৃথিবীতে তাহার আশ্রয়স্থান কোনোকালেই যথেষ্ট বিস্তীর্ণ ছিল না, তবু তাহার এক পাশ তাতিয়া উঠিলে আর-একপাশে ফিরিয়া শুইবার একটুখানি জায়গা ছিল– আজ তাহার নির্ভরস্থল অত্যন্ত সংকীর্ণ। সে যে নৌকায় … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–দশম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  বিহারী নিজে বসিয়া মহেন্দ্রকে দিয়া চিঠি লিখাইয়া এবং সে-চিঠি লইয়া পরদিনই রাজলক্ষ্মীকে আনিতে গেল। রাজলক্ষ্মী বুঝিলেন, এ চিঠি বিহারীই লিখাইয়াছে– কিন্তু তবু আর থাকিতে পারিলেন না। সঙ্গে বিনোদিনী আসিল। গৃহিণী ফিরিয়া আসিয়া গৃহের যেরূপ দুরবস্থা দেখিলেন– সমস্ত অমার্জিত, মলিন, বিপর্যস্ত– তাহাতে বধূর প্রতি তাঁহার মন আরো যেন বক্র হইয়া উঠিল। কিন্তু বধূর এ কী … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–এগারোতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আশার পক্ষে সঙ্গিনীর বড়ো দরকার হইয়াছিল। ভালোবাসার উৎসবও কেবলমাত্র দুটি লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয় না– সুখালাপের মিষ্টান্ন বিতরণের জন্য বাজে লোকের দরকার হয়। ক্ষুধিতহৃদয়া বিনোদিনীও নববধূর নবপ্রেমের ইতিহাস মাতালের জ্বালাময় মদের মতো কান পাতিয়া পান করিতে লাগিল। তাহার মস্তিষ্ক মাতিয়া শরীরের রক্ত জ্বলিয়া উঠিল। নিস্তব্ধ মধ্যাহ্নে মা যখন ঘুমাইতেছেন, দাসদাসীরা একতলার বিশ্রামশালায় অদৃশ্য, মহেন্দ্র বিহারীর … বিস্তারিত পড়ুন

চোখের বালি–বারোতম অংশ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মহেন্দ্র একদিন বিরক্ত হইয়া তাহার মাকে ডাকিয়া কহিল, “এ কি ভালো হইতেছে? পরের ঘরের যুবতী বিধবাকে আনিয়া একটা দায় ঘাড়ে করিবার দরকার কী। আমার তো ইহাতে মত নাই– কী জানি কখন কী সংকট ঘটিতে পারে।” রাজলক্ষ্মী কহিলেন, “ও যে আমাদের বিপিনের বউ, উহাকে আমি তো পর মনে করি না।” মহেন্দ্র কহিল, “না মা, ভালো … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!