যোগাযোগ–৩৯ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  যে ভিক্ষুকের ঝুলিতে কেবল তুষ জমেছে চাল জোটে নি, তারই মতো মন নিয়ে আজ সকালে মধুসূদন খুব রুক্ষভাবেই বাইরে চলে গিয়েছিল। কিন্তু অতৃপ্তির আকর্ষণ বড়ো প্রচণ্ড। বাধাতেই বাধার উপর টেনে আনে। ওকে দেখেই হাবলুর মুখ শুকিয়ে গেল, বুক উঠল কেঁপে, পালাবার উপক্রম করলে। কুমু জোর করে চেপে ধরলে, উঠতে দিলে না। সেটা মধুসূদন বুঝতে … বিস্তারিত পড়ুন

পুঁই মাচা-১ম অংশ–বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর গল্প

সহায়হরি চাটুজ্যে উঠোনে পা দিয়েই স্ত্রীকে বলিলেন—“একটা বড় বাটি কি ঘটি, যা হয় কিছু দাও তো। তারক খুড়ো গাছ কেটেছে, একটু ভালো রস আনি।” স্ত্রী অন্নপূর্ণা খড়ের রান্নাঘরের দাওয়ায় বসিয়া শীতকালের সকালবেলা নারকেল তেলের বোতলে ঝাঁটার কাঁটি পুরিয়া দুই আঙুলের সাহায্যে কাটার কাটিলগ্ন জমা তেলটুকু সংগ্রহ করিয়া চুলে মাখাইতেছিলেন। স্বামীকে দেখিয়া তাড়াতাড়ি গায়ের কাপড় একটু … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৫ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  ইতিমধ্যে শ্যামাসুন্দরী হাঁপাতে হাঁপাতে মধুকে এসে জানালে, ‘বউ মুর্ছো গেছে।’ মধুসূদনের মনটা দপ করে জ্বলে উঠল; বললে, “কেন, তাঁর হয়েছে কী?” “তা তো বলতে পারি নে, দাদা দাদা করেই বউ হেদিয়ে গেল। তা একবার কি দেখতে যাবে?” “কী হবে! আমি তো ওর দাদা নই।” “মিছে রাগ করছ ঠাকুরপো, ওরা বড়োঘরের মেয়ে, পোষ মানতে সময় … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৬ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পরদিন ভোরে যখন কুমু বিছানায় উঠে বসেছে তখন ওর স্বামী ঘুমোচ্ছে। কুমু তার মুখের দিকে চাইলে না, পাছে মন বিগড়ে যায়। অতি সাবধানে উঠে পায়ের কাছে প্রণাম করলে, তার পরে স্নান করবার ঘরে গেল। স্নান সারা হলে পর পিছন দিকের দরজা খুলে গিয়ে বসল ছাদে, তখন কুয়াশার ভিতর দিয়ে পূর্ব-আকাশে একটা মলিন সোনার রেখা … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৭ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  সন্ধে হয়ে এল, সেদিন কুমুকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। শেষকালে দেখা গেল, ভাঁড়ারঘরের পাশে একটা ছোটো কোণের ঘরে যেখানে প্রদীপ পিলসুজ তেলের ল্যাম্প প্রভৃতি জমা করা হয় সেইখানে মেজের উপর মাদুর বিছিয়ে বসে আছে। মোতির মা এসে জিজ্ঞাসা করলে, “এ কী কাণ্ড দিদি?” কুমু বললে, “এ বাড়িতে আমি সেজবাতি সাফ করব, আর এইখানে … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৮ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  মোতির মা যখনই কুমুকে অকৃত্রিম ভালোবাসার সঙ্গে আদরযত্ন করতে প্রবৃত্ত হয়েছিল তখনই নবীন বুঝেছিল এটা সইবে না; বাড়ির মেয়েরা এই নিয়ে লাগালাগি করবে। নবীন ভাবলে সেই রকমের একটা কিছু ঘটেছে। কিন্তু মধুসূদনের আন্দাজি অভিযোগ সম্বন্ধে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নেই; তাতে জেদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যাপারটা কী হয়েছে মধুসূদন তা স্পষ্ট করে বললে না— … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–২৯ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  যথানিয়মে মধুসূদন বেলা একটার পরে অন্তঃপুরে খেতে এল। যথানিয়মে আত্মীয়-স্ত্রীলোকেরা তাকে ঘিরে বসে কেউ-বা পাখা দিয়ে মাছি তাড়াচ্ছে, কেউ-বা পরিবেশন করছে। পূর্বেই বলেছি, মধুসূদনের অন্তঃপুরের ব্যবস্থায় ঐশ্বর্যের আড়ম্বর ছিল না। তার আহারের আয়োজন পুরানো অভ্যাসমতই। মোটা চালের ভাত না হলে না মুখে রোচে, না পেট ভরে। কিন্তু পাত্রগুলি দামি। রুপোর থালা, রুপোর বাটি, রুপোর … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩০ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  নবীন ঘরে গিয়ে মুখ শুকনো করে মোতির মাকে বললে, “মেজোবউ, আর কেন?” “হয়েছে কী?” “এবার জিনিসপত্রগুলো বাক্সয় তোলো।” “তোমার বুদ্ধিতে যদি তুলি, তা হলে আবার কালই বের করতে হবে। কেন? তোমার দাদার মেজাজ ভালো নেই বুঝি?” “আমি তো চিনি ওঁকে। এবার বোধ হচ্ছে এখানকার বাসায় হাত পড়বে।” “তা চলোই-না। অত ভাবছ কেন? সেখানে তো … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩১ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  দুপুরবেলা আহারের পর দরজা বন্ধ করে কুমু বসে পণ করতে লাগল, মনের মধ্যে কিছুতে সে ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠতে দেবে না। কুমু বললে, ‘আজকের দিনটা লাগবে মনকে স্থির করে নিতে; ঠাকুরের আশীর্বাদ নিয়ে কাল সকাল থেকে সংসারধর্মের সত্যপথে প্রবৃত্ত হব।’ মধ্যাহ্নে আহারের পর তার কাঠের ঘরে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিয়ে চলল নিজের … বিস্তারিত পড়ুন

যোগাযোগ–৩২ তম অংশ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  সিঁড়ির তলা থেকে মধুসূদন ফিরল, বুকের মধ্যে রক্ত তোলপাড় করতে লাগল। একটা কোন্‌ রুদ্ধ ঘরের সামনে কেরোসিনের লণ্ঠন জ্বলছিল। সেইটে তুলে নিয়ে চুপি চুপি তেলবাতির কুঠরির বাইরে এসে দাঁড়াল। আস্তে আস্তে দরজা ঠেলতে গিয়ে দেখলে দরজা ভেজানো; দরজা খুলে গেল। সেই মাদুরের উপর গায়ে একখানা চাদর দিয়ে কুমু গভীর ঘুমে মগ্ন— বাঁ হাতখানি বুকের … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!