প্রজাপতির নির্বন্ধ–ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  শ্রীশ তাহার বাসায় দক্ষিণের বারান্দায় একখানা বড়োহাতাওআলা কেদারার দুই হাতার উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া শুক্লসন্ধ্যায় চুপচাপ বসিয়া সিগারেট ফুঁকিতেছিল। পাশে টিপায়ের উপর রেকাবিতে একটি গ্লাস বরফ দেওয়া লেমনেড ও স্তূপাকার কুন্দফুলের মালা। বিপিন পশ্চাৎ হইতে প্রবেশ করিয়া তাহার স্বাভাবিক প্রবল গম্ভীর কণ্ঠে ডাকিয়া উঠিল, “কী গো সন্ন্যাসীঠাকুর।” শ্রীশ তৎক্ষণাৎ হাতা হইতে পা নামাইয়া … বিস্তারিত পড়ুন

প্রজাপতির নির্বন্ধ–সপ্তম পরিচ্ছেদ –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  চন্দ্রমাধববাবু যখন ডাকিলেন– “নির্মল”, তখন একটা উত্তর পাইলেন বটে “কী মামা”, কিন্তু সুরটা ঠিক বাজিল না। চন্দ্রবাবু ছাড়া আর যে-কেহ হইলে বুঝিতে পারিত সে অঞ্চলে অল্প একটুখানি গোল আছে। “নির্মল, আমার গলার বোতামটা খুঁজে পাচ্ছি নে।” “বোধ হয় ঐখানেই কোথাও আছে।” এরূপ অনাবশ্যক এবং অনির্দিষ্ট সংবাদে কাহারো কোনো উপকার নাই, বিশেষত যাহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-নিখিলেশের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  পঞ্চুর স্ত্রী যক্ষ্মায় ভুগে ভুগে মরেছে। পঞ্চুকে প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে। সমাজ হিসেব করে বলেছে, খরচ লাগবে সাড়ে তেইশ টাকা। আমি রাগ করে বললুম, নাই বা করলি প্রায়শ্চিত্ত, তোর ভয় কিসের? সে ক্লান্ত গোরুর মতো তার ধৈর্যভারপূর্ণ চোখ তুলে বললে, মেয়েটি আছে, বিয়ে দিতে হবে। আর বউয়েরও তো গতি করা চাই। আমি বলুলুম, পাপই যদি … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-সন্দীপের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  সেদিন অশ্রুজলের বাঁধ ভাঙে আর-কি। আমাকে বিমলা ডাকিয়ে আনলে, কিন্তু খানিকক্ষণ তার মুখ দিয়ে কথা বের হল না, তার দুই চোখ ঝক্‌ঝক্‌ করতে লাগল। বুঝলুম, নিখিলের কাছে কোনো ফল পায় নি। যেমন করে হোক ফল পাবে সেই অহংকার ওর মনে ছিল, কিন্তু সে আশা আমার মনে ছিল না। পুরুষেরা যেখানে দুর্বল মেয়েরা সেখানে তাদের … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –-বিমলার আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এক জন্মে যে এতটা ঘটতে পারে সে মনেও করা যায় না। আমার যেন সাত জন্ম হয়ে গেল। এই কয় মাসে হাজার বছর পার হয়ে গেছে। সময় এত জোরে চলছিল যে, চলছে বলে বুঝতেই পারি নি। সেদিন হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে বুঝতে পেরেছি। বাজার থেকে বিদেশী মাল বিদায় করবার কথা যখন স্বামীর কাছে বলতে গেলুম তখন জানতুম … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –নিখিলেশের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

একদিন আমার মনে বিশ্বাস ছিল ঈশ্বর আমাকে যা দেবেন আমি তা নিতে পারব। এ পর্যন্ত তার পরীক্ষা হয় নি। এবার বুঝি সময় এল। মনকে যখন মনে মনে যাচাই করতুম অনেক দুঃখ কল্পনা করেছি। কখনো ভেবেছি দারিদ্র্য, কখনো জেলখানা, কখনো অসম্মান, কখনো মৃত্যু। এমন-কি, কখনো বিমলের মৃত্যুর কথাও ভাবতে চেষ্টা করেছি। এ-সমস্তই নমস্কার করে মাথায় করে … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –সন্দীপের আত্মকথা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

যেটুকু আমার ভাগে এসে পড়েছে সেইটুকুই আমার, এ কথা অক্ষমেরা বলে আর দুর্বলেরা শোনে। যা আমি কেড়ে নিতে পারি সেইটেই যথার্থ আমার, এই হল সমস্ত জগতের শিক্ষা। দেশে আপনা-আপনি জন্মেছি বলেই দেশ আমার নয় ; দেশকে যেদিন লুঠ করে নিয়ে জোর করে আমার করতে পারব সেইদিনই দেশ আমার হবে। লাভ করবার স্বাভাবিক অধিকার আছে বলেই … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –সন্দীপের আত্মকথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি বুঝতে পারছি একটা গোলমাল বেধেছে । সেদিন তার একটু পরিচয় পাওয়া গেল। নিখিলেশের বৈঠকখানার ঘরটা আমি আসার পর থেকে সদর ও অন্দরে মিশিয়ে একটা উভচরজাতীয় পদার্থ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে বাইরের থেকে আমার অধিকার ছিল, ভিতরের থেকে মক্ষীর বাধা ছিল না। আমাদের এই অধিকার যদি আমরা কিছু-কিছু হাতে রেখে রয়ে-বসে ভোগ করতুম তা হলে হয়তো … বিস্তারিত পড়ুন

পুঁই মাচা-৫ম অংশ–বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর গল্প

ক্ষেত্তি মা’র মুখের দিকে একটুখানি চাহিয়া থাকিয়া একবার ভূপতিত মেটে আলুটার দিকে চাহিল, পরে পুনরায় মা’র মুখের দিকে চাহিয়া লইল, তাহার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখা দিল, কিন্তু মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না। অন্নপূর্ণ কড়া সুরে বলিলেন-কথা বলছিল নে যে বড়? এই মেটে আলু তুই এনেছিস কিনা? ক্ষেত্তি বিপন্ন-চোখে মা’র মুখের দিকেই চাহিয়াছিল, উত্তর … বিস্তারিত পড়ুন

ঘরে-বাইরে –নিখিলেশের আত্মকথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আগে কোনোদিন নিজের কথা ভাবি নি। এখন প্রায় মাঝে-মাঝে নিজেকে বাইরে থেকে দেখি। বিমল আমাকে কেমন চোখে দেখে সেইটে আমি দেখবার চেষ্টা করি। বড়ো গম্ভীর, সব জিনিসকে বড়ো বেশি গুরুতর করে দেখা আমার অভ্যাস। আর-কিছু না, জীবনটাকে কেঁদে ভাসিয়ে দেওয়ার চেয়ে হেসে উড়িয়ে দেওয়াই ভালো। তাই করেই তো চলছে। সমস্ত জগতে আজ যত দুঃখ ঘরে … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!