সম্পত্তি-সমর্পণ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-প্রথম পরিচ্ছেদ

বৃন্দাবন কুণ্ড মহাক্রুদ্ধ হইয়া আসিয়া তাহার বাপকে কহিল, ‘আমি এখনই চলিলাম।’ বাপ যজ্ঞনাথ কুণ্ড কহিলেন, ‘বেটা অকৃতজ্ঞ, ছেলেবেলা হইতে তোকে খাওয়াইতে পরাইতে যে ব্যয় হইয়াছে তাহার পরিশোধ করিবার নাম নাই, আবার তেজ দেখো না।’ যজ্ঞনাথের ঘরে যেরূপ অশনবসনের প্রথা তাহাতে খুব যে বেশি ব্যয় হইয়াছে তাহা নহে। প্রাচীন কালের ঋষিরা আহার এবং পরিচ্ছদ সম্বন্ধে অসম্ভব … বিস্তারিত পড়ুন

সম্পত্তি-সমর্পণ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

একদিন এইরূপে আম্রতরুচ্ছায়াশীতল গ্রামের পথে যজ্ঞনাথ মধ্যাহ্নে বেড়াইতেছিলেন, দেখিলেন একজন অপরিচিত বালক গ্রামের ছেলেদের সর্দার হইয়া উঠিয়া একটা সম্পূর্ণ নূতন উপদ্রবের পন্থা নির্দেশ করিতেছে, অন্যান্য বালকেরা তাহার চরিত্রের বল এবং কল্পনার নূতনত্বে অভিভূত হইয়া কায়মনে তাহার বশ মানিয়াছে। অন্য বালকেরা বৃদ্ধকে দেখিয়া যেরূপ খেলায় ভঙ্গ দিত এ তাহা না করিয়া চট্‌ করিয়া আসিয়া যজ্ঞনাথের গায়ের … বিস্তারিত পড়ুন

সম্পত্তি-সমর্পণ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-তৃতীয় পরিচ্ছেদ

যজ্ঞনাথের ঘরে নিতাই পালের এই অভাবনীয় সমাদর দেখিয়া গ্রামের লোক আশ্চর্য হইয়া গেল। বুঝিল, বৃদ্ধ আর বেশি দিন বাঁচিবে না এবং কোথাকার এই বিদেশী ছেলেটাকেই সমস্ত বিষয় দিয়া যাইবে। বালকের উপর সকলেরই পরম ঈর্ষা উপস্থিত হইল এবং সকলেই তাহার অনিষ্ট করিবার জন্য কৃতসংকল্প হইল। কিন্তু বৃদ্ধ তাহাকে বুকের পাঁজরের মতো ঢাকিয়া বেড়াইত। ছেলেটা মাঝে মাঝে … বিস্তারিত পড়ুন

স্বর্ণমৃগ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

আদ্যানাথ এবং বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী দুই শরিক। উভয়ের মধ্যে বৈদ্যনাথের অবস্থাই কিছু খারাপ। বৈদ্যনাথের বাপ মহেশচন্দ্রের বিষয়বুদ্ধি আদৌ ছিল না, তিনি দাদা শিবনাথের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করিয়া থাকিতেন। শিবনাথ ভাইকে প্রচুর স্নেহবাক্য দিয়া তৎপরিবর্তে তাঁহার বিষয়সম্পত্তি সমস্ত আত্মসাৎ করিয়া লন। কেবল খানকতক কোম্পানির কাগজ অবশিষ্ট থাকে। জীবনসমুদ্রে সেই কাগজ-কখানি বৈদ্যনাথের একমাত্র অবলম্বন। শিবনাথ বহু অনুসন্ধানে তাঁহার … বিস্তারিত পড়ুন

স্বর্ণমৃগ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় অংশ

মোক্ষদা নিতান্ত বিরক্ত হইয়া স্বামীকে জানাইলেন যে, পুরুষমানুষের মাথায় যে মস্তিষ্কের পরিবর্তে এতটা গোময় থাকিতে পারে, তাহা তাঁহার পূর্বে ধারণা ছিল না। বলিলেন, “একটু নড়িয়াচড়িয়া দেখো। হাঁ করিয়া বসিয়া থাকিলে কি আকাশ হইতে টাকা বৃষ্টি হইবে।” কথাটা সংগত বটে এবং বৈদ্যনাথের একান্ত ইচ্ছাও তাই, কিন্তু কোন্‌ দিকে নড়িবেন, কিসের উপর চড়িবেন, তাহা যে কেহ বলিয়া … বিস্তারিত পড়ুন

স্বর্ণমৃগ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-৩য় অংশ

দেখিলেন, নদীর দিকে দেয়ালের এক জায়গা ভাঙা; সেইখান দিয়া জল প্রবেশ করিতেছে, এবং তাহার পূর্ববর্তী যে-ব্যক্তির কোষ্ঠীতে দৈবধনলাভ লেখা ছিল, সেও সম্ভবত এই ছিদ্র দিয়া প্রবেশ করিয়াছিল। অবশেষে সম্পূর্ণ হতাশ হইয়া ‘মা’ বলিয়া মস্ত একটা মর্মভেদী দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিলেন— প্রতিধ্বনি যেন অতীতকালের আরো অনেক হতাশ্বাস ব্যক্তির নিশ্বাস একত্রিত করিয়া ভীষণ গাম্ভীর্যের সহিত পাতাল হইতে স্তনিত হইয়া … বিস্তারিত পড়ুন

সুভা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম অংশ

মেয়েটির নাম যখন সুভাষিণী রাখা হইয়াছিল তখন কে জানিত সে বোবা হইবে। তাহার দুটি বড়ো বোনকে সুকেশিনী সুহাসিনী নাম দেওয়া হইয়াছিল, তাই মিলের অনুরোধে তাহার বাপ ছোটো মেয়েটির নাম সুভাষিণী রাখে। এখন সকলে তাহাকে সংক্ষেপে সুভা বলে। দস্তুরমত অনুসন্ধান ও অর্থব্যয়ে বড়ো দুটি মেয়ের বিবাহ হইয়া গেছে, এখন ছোটোটি পিতামাতার নীরব হৃদয়ভারের মতো বিরাজ করিতেছে। … বিস্তারিত পড়ুন

করুণা –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-পঞ্চম অংশ

দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ কাশীর স্টেশনে করুণা-সংক্রান্ত যে-সমস্ত ঘটনা ঘটিতেছিল, একজন ভদ্রলোক তাহা সমস্ত পর্যবেক্ষণ করিতেছিলেন। স্বরূপকে দেখিয়া তিনি কেমন লজ্জিত ও সংকুচিত হইয়া সরিয়া গিয়াছিলেন। যখন দেখিলেন সকলে চলিয়া গেল এবং করুণা মূর্ছিত হইয়া পড়িল তখন তিনি তাহাকে একটা গাড়িতে তুলিয়া তাঁহার বাসাবাড়িতে লইয়া যান—তাঁহার কোথায় যাইবার প্রয়োজন ছিল কিন্তু যাওয়া হইল না। করুণার মুখ দেখিয়া, … বিস্তারিত পড়ুন

করুণা –রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-ষষ্ঠ অংশ

পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ আজকাল রজনী ভারি গিন্নি হইয়াছে। এখন তাহার হাতে টাকাকড়ি আসে। পাড়ার অধিকাংশ বৃদ্ধা ও প্রৌঢ়া গৃহিণীরা রজনীর শাশুড়ির সঙ্গ পরিত্যাগ করিয়া শিঙ ভাঙিয়া রজনীর দলে মিশিয়াছেন। তাঁহারা ঘণ্টাখানেক ধরিয়া রজনীর কাছে দেশের লোকের নিন্দা করিয়া, উঠিয়া যাইবার সময় হাই তুলিতে তুলিতে পুনশ্চ নিবেদনের মধ্যে আবশ্যকমত টাকাটা-শিকিটা ধার করিয়া লইতেন এবং রজনীর স্বামীর, রজনীর … বিস্তারিত পড়ুন

রাজবন্দীর চিঠি-কাজী নজরুল ইসলাম-১ম অংশ

প্রেসিডেন্সি জেল, কলিকাতা মুক্তি-বার, বেলা-শেষ প্রিয়তমা মানসী আমার। আজ আমার বিদায় নেবার দিন। একে একে সকলেরই কাছে বিদায় নিয়েছি। তুমিই বাকি। ইচ্ছা ছিল, যাবার দিনে তোমায় আর ব্যথা দিয়ে যাব না, কিন্তু আমার যে এখনও কিছুই বলা হয়নি। তাই ব্যথা পাবে জেনেও নিজের এই উচ্ছৃঙ্খল বৃত্তিটাকে কিছুতেই দমন করতে পারলুম না। তাতে কিন্তু আমায় দোষ … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!