নৈ

জেলেপাড়ার হাড় জিরজিরে কুকুরগুলোর রক্তে আগুন জ্বালিয়ে একনাগাড়ে ডেকে ডেকে কাশবনের হতচ্ছাড়া শিয়ালগুলো ক্লান্ত হলে, ভোঁস-ভোঁস, ফোঁস-ফোঁস, শীৎকার করতে করতে অবশেষে রাত্রি দ্বিপ্রহরে গগনবাবুর রতিপাত হলো! তাতে আমার শুষ্ক নিস্ফলা জঠর ক্ষণিকের জন্য কিছুটা আর্দ্র হলেও নতুন প্রাণের সঞ্চার হলো না। চৈত্র-বোশেখের তীব্র দাবদাহে আমার বুকটা ভীষণ জ্বলে গো বাবুমশাই। আমি সইতে পারি না। সূর্যদেবের … বিস্তারিত পড়ুন

তিনটি কঙকাল ও আমরা (যুদ্ধ বিষয়ক গল্প)

সোনার জমিনে সোনাঝরা ধান, হাওয়া ঘাতে দুলে-ওঠা প্রাণ, সাত-পুরুষের রক্ত-রক্ত খেলা, বিলের জলে জলপরীদের জলগাহন বা শুক্লা যামিনীর ধবল ছায়ায় অপশরীদের নৃত্যকলা বিষয়ক আরো-আরো পৌরাণিক উপাখ্যান আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকলেও এবারের অনুষঙ্গ খানিকটা অন্যরকম- অন্তত আশরাফের কাছে তো বটেই! তাই আর অপেক্ষা করেনা; নৈঃশব্দের বুকে পদাঘাত করে ধপাধপ পা চালায়; বুনোফুলের ঘ্রাণ মেখে নির্জনতার আরো গভীরে … বিস্তারিত পড়ুন

চরিত্রহীন– শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ––পঁয়তাল্লিশ পরিচ্ছেদ

সাবিত্রীর দুই চক্ষু দিয়া শ্রাবণের ধারা নামিয়া ভাসিয়া যাইতেছে। আজ তাহারই ক্রোড়ের উপর উপেন্দ্র মৃত্যুশয্যা বিছাইয়াছে। শীর্ণশীতল পা-দুখানির উপর মুখ গুঁজিয়া দিবাকর নিঃশব্দ-রোদনে অন্তরের অসহ্য দুঃখ নিবেদন করিয়া দিতেছে। তাহার পরিতাপ, তাহার ব্যথা, অন্তর্যামী ভিন্ন আর কে জানিবে! ও ঘরে মহেশ্বরী ভূমিশয্যায় পড়িয়া বিদীর্ণ কণ্ঠে কাঁদিতেছেন। এই সর্বগ্রাসী শোকের মধ্যে শুধু একা সতীশই একা স্থির … বিস্তারিত পড়ুন

মরা ক্ষেতের গল্প

নিজের ক্ষেতের কাছে আলোর বুকে পা রেখে মনটা কেমন মুষড়ে যায় জয়নাল মণ্ডলের। নিজের চোখকে শত্রু মনে হয় এখন। বিরান জমিন খাঁ-খাঁ করছে, কাঠফাটা গরমে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়, জয়নাল মণ্ডলের বুক হাপড়ের মতো ওঠানামা করে। আগুন ঝরা রোদে পুড়ে-পুড়ে অঙ্গার হচ্ছে জগতের মাটি, বাতাসে বইছে যেন আগুনের ফুলকি। জয়নাল মণ্ডলের মনে শান্তি নেই, পুড়ছে … বিস্তারিত পড়ুন

রস

কার্তিকের মাঝামাঝি চৌধুরীদের খেজুর বাগান ঝুরতে শুরু করল মোতালেফ। তারপর দিন পনের যেতে না যেতেই নিকা করে নিয়ে এলো পাশের বাড়ির রাজেক মৃধার বিধবা স্ত্রী মাজু খাতুনকে। পাড়া-পড়শি সবাই তো অবাক। এই অবশ্য প্রথম সংসার নয় মোতালেফের। এর আগের বউ বছরখানেক আগে মারা গেছে। তবু পঁচিশ-ছাবি্বশ বছরের জোয়ান পুরুষ মোতালেফ। আর মাজু খাতুন ত্রিশে না … বিস্তারিত পড়ুন

পরবাসী —- হাসান আজিজুল হক

কান পেতে কিছু শোনার চেষ্টা করল সে। কিছু একটা শব্দ। কিন্তু কিছুই শোনা গেল না। বাতাস কিংবা পাতা ঝরার শব্দ … কোনো কিছুই তার কানে এলো না। এই এতটুকু সময়ের মধ্যেই মাটি বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে এসেছে। নিঃশব্দ শিশিরের হিমে স্নান করে বিবর্ণ পাতাগুলো ভিজে। শীতের শেষ বলে সারাদিন ধরে উত্তর দিক থেকে ঝড়ের বেগে … বিস্তারিত পড়ুন

দেখা হবে— শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

নকশি কাঁথার মতো বিচিত্র এক পৃথিবী ছিল আমাদের শৈশবে। এখনও পায়ের তলায় পৃথিবীর মাটি, চারিদিকে গাছপালা, মাথার ওপর আকাশ। বুক ভরে শ্বাস টেনে দেখি। না, শীতের সকালে কুয়াশায় ভেজা বাগান থেকে যে রহস্যময় বন্য গন্ধটি পাওয়া যেত তা আর পাওয়া যায় না। আমাদের সাঁওতাল মালি বিকেলের দিকে পাতা পুড়িয়ে আগুন জ্বালত। সেই গন্ধ কতবার আমাকে … বিস্তারিত পড়ুন

উকিলের চিঠি — শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়

মিছরি, তোর নামে একটা চিঠি এসেছে দেখগে যা। এই বলে মিছরির দাদা ঋতিশ টিয়ার ঝাঁক তাড়াতে খেতের মধ্যে নেমে গেল। গোসাবা থেকে দুই নৌকা বোঝাই লোক এসেছে অসময়ে। লাট এলাকার ভিতর বাগে কোনও বিষয়কর্মে যাবে সব। এই অবেলায় তাদের জন্য খিচুড়ি চাপাতে বড় কাঠের উনুনটা ধরাতে বসেছিল মিছরি। কেঁপে উঠল। তার ভরন্ত যৌবন বয়স। মনটা … বিস্তারিত পড়ুন

আলমারি – নরেন্দ্রনাথ মিত্র

স্ত্রীর সঙ্গে রোজ ঝগড়া হয় পরিতোষ সরকারের। দামি কাপড়চোপড় রাখবার মতো একটা আলমারি নেই ঘরে। ট্রাঙ্কে সুটকেসে অতি কষ্টে জিনিসপত্র গুঁজে গুঁজে রাখতে হয়। একটা কিছু বার করতে হলে একেবারে লণ্ডভণ্ড, কুরুক্ষেত্র কাণ্ড। সুপ্রীতি বলে, “আমি আর পারব না তোমার ঘর গোছাতে। আর এই দামি দামি জিনিসগুলি যদি নষ্ট হয় তার জন্যেও আমাকে দায়ী করতে … বিস্তারিত পড়ুন

বেদেনী — তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

শম্ভু বাজিকর এ মেলায় প্রতি বৎসর আসে। তাহার বসিবার স্থানটা মা কঙ্কালীর এস্টেটের খাতায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মতো কায়েমি হইয়া গিয়াছে। লোকে বলে, বাজি; কিন্তু শম্ভু বলে ‘ভোজবাজি-ছারকাছ’। ছোট তাঁবুটার প্রবেশপথের মাথার উপরেই কাপড়ে আঁকা একটা সাইনবোর্ডেও লেখা আছে ‘ভোজবাজি-সার্কাস’। লেখাটার একপাশে একটা বাঘের ছবি, অপরদিকে একটা মানুষ, তাহার এক হাতে রক্তাক্ত তরবারি, অপর হাতে একটি … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!