নামের খেলা– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

প্রথম বয়সেই সে কবিতা লিখতে শুরু করে। বহু যত্নে খাতায় সোনালি কালির কিনারা টেনে, তারই গায়ে লতা এঁকে, মাঝখানে লাল কালি দিয়ে কবিতাগুলি লিখে রাখত। আর, খুব সমারোহে মলাটের উপর লিখত, শ্রীকেদারনাথ ঘোষ। একে একে লেখাগুলিকে কাগজে পাঠাতে লাগল। কোথাও ছাপা হল না। মনে মনে সে স্থির করলে, যখন হাতে টাকা জমবে তখন নিজে কাগজ … বিস্তারিত পড়ুন

পট– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

যে শহরে অভিরাম দেবদেবীর পট আঁকে, সেখানে কারও কাছে তার পূর্বপরিচয় নেই। সবাই জানে, সে বিদেশী, পট আঁকা তার চিরদিনের ব্যবসা। সে মনে ভাবে, ‘ধনী ছিলেম, ধন গিয়েছে, হয়েছে ভালো। দিনরাত দেবতার রূপ ভাবি, দেবতার প্রসাদে খাই, আর ঘরে ঘরে দেবতার প্রতিষ্ঠা করি। আমার এই মান কে কাড়তে পারে।’ এমন সময় দেশের রাজমন্ত্রী মারা গেল। … বিস্তারিত পড়ুন

পরীর পরিচয়– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রাজপুত্রের বয়স কুড়ি পার হয়ে যায়, দেশবিদেশ থেকে বিবাহের সম্বন্ধ আসে। ঘটক বললে, “বাহ্লীকরাজের মেয়ে রূপসী বটে, যেন সাদা গোলাপের পুষ্পবৃষ্টি।” রাজপুত্র মুখ ফিরিয়ে থাকে, জবাব করে না। দূত এসে বললে, “গান্ধাররাজের মেয়ের অঙ্গে অঙ্গে লাবণ্য ফেটে পড়ছে, যেন দ্রাক্ষালতায় আঙুরের গুচ্ছ।” রাজপুত্র শিকারের ছলে বনে চলে যায়। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, ফিরে আসে না। … বিস্তারিত পড়ুন

পায়ে চলার পথ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

এই তো পায়ে চলার পথ। এসেছে বনের মধ্যে দিয়ে মাঠে, মাঠের মধ্যে দিয়ে নদীর ধারে, খেয়াঘাটের পাশে বটগাছতলায়। তার পরে ও পারের ভাঙা ঘাট থেকে বেঁকে চলে গেছে গ্রামের মধ্যে; তার পরে তিসির খেতের ধার দিয়ে, আমবাগানের ছায়া দিয়ে, পদ্মদিঘির পাড় দিয়ে, রথতলার পাশ দিয়ে কোন্‌ গাঁয়ে গিয়ে পৌঁচেছে জানি নে। এই পথে কত মানুষ … বিস্তারিত পড়ুন

পুনরাবৃত্তি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

সেদিন যুদ্ধের খবর ভালো ছিল না। রাজা বিমর্ষ হয়ে বাগানে বেড়াতে গেলেন। দেখতে পেলেন, প্রাচীরের কাছে গাছতলায় বসে খেলা করছে একটি ছোটো ছেলে আর একটি ছোটো মেয়ে। রাজা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কী খেলছ।” তারা বললে, “আমাদের আজকের খেলা রামসীতার বনবাস।” রাজা সেখানে বসে গেলেন। ছেলেটি বললে, “এই আমাদের দণ্ডকবন, এখানে কুটীর বাঁধছি।” সে একরাশ … বিস্তারিত পড়ুন

পুরোনো বাড়ি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

১ অনেক কালের ধনী গরিব হয়ে গেছে, তাদেরই ঐ বাড়ি। দিনে দিনে ওর উপরে দুঃসময়ের আঁচড় পড়ছে। দেয়াল থেকে বালি খসে পড়ে, ভাঙা মেঝে নখ দিয়ে খুঁড়ে চড়ুইপাখি ধুলোয় পাখা ঝাপট দেয়, চণ্ডীমণ্ডপে পায়রাগুলো বাদলের ছিন্ন মেঘের মতো দল বাঁধল। উত্তর দিকের এক-পাল্লা দরজা কবে ভেঙে পড়েছে কেউ খবর নিলে না। বাকি দরজাটা, শোকাতুরা বিধবার … বিস্তারিত পড়ুন

প্রথম চিঠি– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বধূর সঙ্গে তার প্রথম মিলন, আর তার পরেই সে এই প্রথম এসেছে প্রবাসে। চলে যখন আসে তখন বধূর লুকিয়ে কান্নাটি ঘরের আয়নার মধ্যে দিয়ে চকিতে ওর চোখে পড়ল। মন বললে, ‘ফিরি, দুটো কথা বলে আসি।’ কিন্তু, সেটুকু সময় ছিল না। সে দূরে আসবে বলে একজনের দুটি চোখ বয়ে জল পড়ে, তার জীবনে এমন সে আর-কখনো … বিস্তারিত পড়ুন

প্রথম শোক– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বনের ছায়াতে যে পথটি ছিল সে আজ ঘাসে ঢাকা। সেই নির্জনে হঠাৎ পিছন থেকে কে বলে উঠল, “আমাকে চিনতে পার না? ” আমি ফিরে তার মুখের দিকে তাকালেম। বললেম, “মনে পড়ছে, কিন্তু ঠিক নাম করতে পারছি নে।” সে বললে, “আমি তোমার সেই অনেক কালের, সেই পঁচিশ বছর বয়সের শোক।” তার চোখের কোণে একটু ছলছলে আভা … বিস্তারিত পড়ুন

একটি চাউনি— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

  গাড়িতে ওঠবার সময় একটুখানি মুখ ফিরিয়ে সে আমাকে তার শেষ চাউনিটি দিয়ে গেছে। এই মস্ত সংসারে ঐটুকুকে আমি রাখি কোন্‌খানে। দণ্ড পল মুহূর্ত অহরহ পা ফেলবে না, এমন একটু জায়গা আমি পাই কোথায়। মেঘের সকল সোনার রঙ যে সন্ধ্যায় মিলিয়ে যায় এই চাউনি কি সেই সন্ধ্যায় মিলিয়ে যাবে। নাগকেশরের সকল সোনালি রেণু যে বৃষ্টিতে … বিস্তারিত পড়ুন

কর্তার ভূত– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

বুড়ো কর্তার মরণকালে দেশসুদ্ধ সবাই বলে উঠল, “তুমি গেলে আমাদের কী দশা হবে।” শুনে তারও মনে দুঃখ হল। ভাবলে, “আমি গেলে এদের ঠাণ্ডা রাখবে কে?” তা ব’লে মরণ তো এড়াবার জো নেই। তবু দেবতা দয়া করে বললেন, “ভাবনা কী। লোকটা ভূত হয়েই এদের ঘাড়ে চেপে থাক্‌-না। মানুষের মৃত্যু আছে, ভূতের তো মৃত্যু নেই।” ২ দেশের … বিস্তারিত পড়ুন

দুঃখিত!