সাম্প্রতিক একটা ঘটনা শেয়ার করছি। ঘটনাটা আমার এক আত্মীয়ার। উনি একজন ষাটোর্ধ মহিলা। হাসিখুশী এবং মিশুক স্বভাবের। সব ঠিকঠাক মতই চলছিল। কিন্তু হঠাত করেই উনি রাতে ভয় পাওয়া শুরু করলেন এবং সেটা নিয়মিতই চলতে লাগলো। কখনো প্রচন্ড ভয় পেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠতেন আবার কখনোবা ঘুমের মধ্যে থিরথির করে কাঁপতেন। কেউ তাকে যেন জোরে ঝাকুনি দিচ্ছে। ঘরের ভিতর নানা কিছু দেখতেন। মৌলানা ডেকে ঘর পবিত্র করা হল,বিছানার পাশে লোহার জিনিস রাখা হল,কিছুতেই কিছু হয়না। উনারা অনেক খুজে শেষে এক কামেল হুজুর এর সাক্ষাত পেলেন। হুজুর সব শুনে তাবিজ দিলেন,পড়া পানি ছিটালেন এবং সারা বাড়ি ঘিড়ে বালি দিয়ে এক ঘোলাকার বৃত্ত একে দিলেন। সেই সাথে বারবার করে বলে দিলেন উনি যেন ৪০ দিন পর্যন্ত ঘরের ভিতর থাকেন যেন বাইরে না যান। আর যদি বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় তবে যাওয়ার আগে একটা এবং আসার পরে একটা মোমবাতি অবশ্যই জ্বালাতে বললেন। এরপর অবস্হার কিছু উন্নতি হল। পার হল ৩৭ দিন।
৩৮ দিনের মাথায় হঠাত করে উনি বাড়ির বাইরে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন,কারো কোনো কথা না শুনে ,হুজুর এর কথা অমান্য করে গ্রাম থেকে শহরে উনার মেয়ের বাসায় চলে গেলেন।
শহরে যাওয়ার পর উনি যেইমাত্র মেয়ের বাসায় প্রবেশ করবেন ঠিক তখনি কিসে যেন উনাকে ভর করল,উনি প্রচন্ড ভয় পেয়ে কাপতে কাপতে মুর্ছা গেলেন। সাথে সাথে উনাকে ক্লিনিকে ভর্তি করা হল। এরপর উনি মাসখানেক এর মত ক্লিনিক এ ছিলেন অচেতন অবস্হায়। মাঝে মাঝে আর্তচিত্কা র,ঘোঙ্গানীর শব্দ,সেই সাথে পেটের ভিতর তীব্র যন্ত্রনা,কেউ যেন খুবলে খুবলে পেটের ভিতর চিরে নিচ্ছে। খাওয়া বলতে শুধু তরল খাবার। ডাক্তাররা সকল রকম টেস্ট করালেন কিন্তু কোনো রোগ ধরা দিলনা। সব স্বাভাবিক। এ এক অবিশ্বাস্য ঘটনা! শেষে উনার পরিবার উপায়ন্তর না দেখে আবার হুজুরের ধারস্ত হলেন। কিন্তু হুজুর ক্লিনিকে যেতে চাইলেন না ক্লিনিক অপবিত্র বলে। এদিকে রোগীর অবস্হা সিরিয়াস দেখে ডাক্তাররা রিলিজ দিতে রাজী নন। শেষে অনেকটা জোর করে তারা উনাকে বাড়ীতে নিয়ে আসলেন অর্ধমৃত অবস্হায়। উনি কাউকে চিনছেন না। শেষে হুজুর পুনরায় হাজিরা দেখে একে খারাপ জ্বিনের আসর বলে শনাক্ত করলেন। পরে সেই হুজুরের চিকিত্সাুথে আমার সেই আত্নীয় এখন পুরোপুরি সুস্হ! কাকতালীয়ভাবে হুজুর ও জ্বিনের হাজিরার মাঝে পড়ে গেলাম আমি। অন্ধকার রাত। কি যে ভয় পেয়েছিলাম সেদিন!
আমার মনে হয়েছিল আমার শরীর যেন কয়েক গুন ভারী হয়ে গেল। কাপতে কাপতে দোয়াদরুদ যা জানি তা পড়তে পড়তে ঘরে গেলাম। মুহুর্তের মধ্যে কাপুনি দিয়ে জ্বর চলে এল। আমার কেবল মনে হচ্ছিল কেউ একজন আমার ভেতর ঢুকে বসে আছে। প্রচন্ড ভয়ে সারারাত ঘুমাতে পারি নি। আমি বাস্তববাদী মানুষ,কিন্তু এই কদিনে চোখের সামনে যা ঘটে গেল তা দেখে আর নিজের মনোবল ঠিক রাখতে পারিনি। আমি ঝাড়ফুঁকে বিশ্বাস করিনা ,কিন্তু চর্মচোখে যা দেখলাম তাই বা অবিশ্বাস করি কিভাবে। ডাক্তাররা যেখানে কিছু ধরতে পারলেন না সেটাই তো অবিশ্বাস্য! এছাড়াও আমার জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে যার কোন বৈঙ্গানিক ব্যাখা নেই। যেগুলো সময় সুযোগ পেলে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।