প্রাচীনকালে এক সিদ্ধসাধু তার শিষ্যদের নিয়ে একটি নগরে এসেছিল। সেই নগরে একজন ধনী ছির। তার নাম মণিগুপ্ত। তাকে লোকে দাতাকর্ণ নামে অভিহিত করত। সাধু মণিগুপ্তের বাড়িতে গেল। তার আশা ছিল মণিগুপ্ত তাকে নিশ্চয়ই অতিথি হিসেবে গ্রহণ করবে। সাধু দেখল মণিগুপ্তের বাড়ির সামনে হাজার হাজার গরিব মানুষ দাঁড়িযে আছে। তার লোকজন তাদের দান দক্ষিণা দিচ্ছে। একদিন থাকার পর সাধু ফেরা আগে মণিগুপ্তকে বলল,“আমি তোমার অতিথিসেবায় মুগ্ধ হয়েছি।
তুমি যেকোন বর চাইতে পার। তবে নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে পরার্থে যদি বর চাও তবেই আমার সেই বরে তোমার কাজ হবে।’ মণিগুপ্ত সবিনয়ে প্রণাম করে সাধুকে বলল, “প্রভু, আপনি এমন বর দিন যাতে আমি সারাজীবন এভাবে দানধর্ম করে যেতে পারি।” সাধু মনে মনে হেসে মাথা নেড়ে বন দিয়ে শিষ্যসহ ফিরে গেল। ফেরাপথে শিষ্য প্রশ্ন করল, “গুরুদেব, আপনি যে বর মণিগুপ্তকে দিয়েছেন তা কি ফলবতী হবে?” মাথা নেড়ে সাধু বলল, “না।” এই ঘটনার কিছুকাল পরে দেখা গেল মণিগুপ্তের দানধর্ম করার ক্ষমতা নেই। সে তখন কোনরকমে কালযাপন করছে এতই খারাপ অবস্থা।
বেতাল কাহিনী শুনিযে বলল, “রাজা , সাধুর দেওয়া বর ফলল না কেন? সাধুর বর কি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না? আমার এই প্রশ্নের জবাব জানা থাকা স্বত্ত্বেও না দিলে তোমার মাথা ফেটে যাবে।” বেতালের প্রশ্নের জবাবে রাজা বিক্রমাদিত্য বললেন, “মণিগুপ্ত যদি পরার্থে বর চাইত তাহলে সে কামনা করত দেশের সবাই যাতে সুখে থাকে। কিন্তু সে দাতা হিসেবে অমর হয়ে থাকার জন্য বর চাইল। নিজের স্বার্থে চাওয়ায় সাধুর বর ফলবতী হল না।” রাজা এই ভাবে মুখ খোলার সঙ্গে সঙ্গে বেতাল শব নিয়ে আমার ফিরে গেল সেই গাছে।