
গোপাল একবার একটি বিয়ের ঘটকালি করেছিল। মেয়েটি খোড়া, ছেলেটি কানা। কনে পক্ষ পাত্র পক্ষ গোপালের মুখের কথার উপর নির্ভর করেই বিয়ে পাকাপাকি করে ফেলেছিল। কনে পক্ষ জানে না যে বর কানা, আবার পাত্র পক্ষ জানে না যে মেয়ে খোড়া। গোপালের ভীষণ নামডাকের জন্য কেউ কাউকে অবিশ্বাস করতে পারেনি। সব কাজ গোপালের উপরই ছেড়ে দিয়েছে।
নির্বিঘ্নে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর পাত্রপক্ষের কর্তা গোপালকে ডেকে বললেন, ‘কনে পক্ষের লোকেরা জানতেই পারেনি যে বর কানা। বরকে কানা দেখলে কোনো পাগল মেয়েই দিত না। এর জন্য আপনার কাছে বেশ কৃতজ্ঞ আমরা।’ এই বলে পাত্র পক্ষের লোকেরা পুরস্কার বাবদ কিছু টাকা দিল। গোপাল মুখটি চেপে নির্বিঘ্নে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিল।
এদিকে কন্যা পক্ষের লোক এল। ‘মেয়েটি যে খোড়া, পাত্রপক্ষের লোকেরা জানতেই পারেনি, কী বল গোপাল।’ এই বলে কন্যা পক্ষের লোকেরাও গোপালকে কিছু পুরস্কার দিল।
দুই পক্ষের কাছ থেকে মোটা বকশিশ পেয়ে পুলকে গোপাল মনে মনে হাসতে হাসতে বলল, ‘আপনারা মহাশয় ব্যক্তি। তাহলে সব কথা খুলে বলি, শুনুন—আপনার মেয়েটি খোড়া আর বরও কানা। এতে অবশ্য দুই পক্ষের চিন্তা-ভাবনার কোনো কারণ নেই।’
গোপালের কথা শুনে বরপক্ষের আক্কেল গুড়ুম। বললেন, ‘অ্যা, বলো কী! পাত্রী খোড়া? আগে এ কথা আমাদের বলেননি কেন?’
গোপাল বললেন, ‘নইলে মানাবে কেন, দাদা? না মানালে আমারই যে বদনাম। আমি তো কারও কাছে বদনাম শুনতে রাজি নই। এখন আপনাদের আর কারও কিছু বলার থাকল না।’