►রক্তমাখা হাত◄

প্রচণ্ড শীত।। আমি আর আমার জামাই এবং আমার জামাইয়ের এক বন্ধু উনার মিসেস নিয়ে বেড়াতে এসেছেন ময়মনসিংহে।। আমাদের এক আত্মীয়ের বাসা ফাঁকা পরে আছে।। সেখানেই উঠলাম আমরা।। বাসাটা ছিল খুবই নিরিবিলি।। পাশে একটা পুকুর আর চারিদিকে অনেক গাছপালা।। বাসার পিছনে অনেক দূর পর্যন্ত ফাঁকা মাঠ।। আশেপাশে কোন বাড়িঘর নেই।। সেদিন রাতে আমার জামাইয়ের আরেক বন্ধু রাজীব আসলো বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে।। সে ময়মনসিংহেই থাকতো।। বিজনেস করে।। আমরা আড্ডা দিতে দিতে রাত প্রায় ১০ টা বেজে গেলো।। তখন রাজিব বলল, আমাদেরকে তার একটা প্রোজেক্টে নিয়ে যাবে।। বের হলাম।। মেইন রোড দিয়ে রাস্তা নেই।। তাই মাটির রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলছিলো।। চারপাশে শুধু ফসলের ক্ষেত আর পুকুর।। মানুষজনের অস্তিত্ব চোখে পড়লো নাহ।। যাই হোক, অবশেষে উনার প্রোজেক্টে পৌঁছলাম।। সেখানে একজন দারোয়ান আর একজন কাজের লোক নিয়ে তিনি থাকতেন।। উনার রুমে বসে আবার আড্ডা জমে উঠলো।। কথায় কথায় জীন ভুতের প্রসঙ্গ আসলো।। একজন একজন তাদের জানা সত্য ভুতের ঘটনাগুলো বলছিল।। পরিবেশটা এমন ছিল যে, সামান্য কথাতেই অনেক বেশি ভয় লাগছিল।। আর রাজিব কারো কথাই বিশ্বাস করছিলেন নাহ।। আমরা যেই গল্পই বলছিলাম উনি হেসে উড়িয়ে দিচ্ছিলেন।। এভাবে তর্কে বিতর্কে রাত কখন ২ টো বেজে গেছে আমরা কেউ খেয়াল করিনি।। বাসায় ফেরার কথা মাথায় আসলো।। রাজিব আমাদেরকে পৌঁছে দেয়ার জন্য গাড়ি বের করলো।।

রাজিব গাড়ি চালাচ্ছে।। প্রচণ্ড কুয়াশায় ২হাত দুরের জিনিসও ভালো করে দেখা যাচ্ছিল নাহ।। হটাত ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ি থেমে গেলো।। স্পষ্ট দেখতে পেলাম, রাজিবের পাশের গ্লাসে একটা রক্তমাখা হাত আঁচড়িয়ে আঁচড়িয়ে গ্লাসটা খোলার চেষ্টা করছে।। অসম্ভব ভয়ে আমার হৃদপিণ্ড যেনও থেমে গেছে।। চিৎকার দিতে ভুলে গেছি।। সেই রক্তমাখা হাতটার নখের আঁচড়ে যেনও গ্লাসটা ফেটে যাবে।। রাজিব একনাগাড়ে গাড়ি স্টার্ট করার চেষ্টা করছিলো।। হটাত গাড়ি স্টার্ট নেয় এবং রাজিব একটানে গাড়িটি বের করে ঝড়ের বেগে ছোটাতে লাগলো।। কোনোরকমে সে রাতে বাসায় পৌঁছেছিলাম।। রাজিবকে সেই রাতে আর বাসায় ফিরতে দেইনি আমরা।। পরদিন সকালে ঢাকার উদ্দেশে রউনা হয়ে যাই সবাই।।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!