কৃপণের রক্ত

আলম সাহেব বিরাট ধনকুবের। একবার পড়লেন কঠিন এক অসুখে। অপারেশনের জন্ডায অনেক রক্তের দরকার। আলম সাহেবের রক্তের গ্রুপের সাথে মেলে এমন রক্ত হাওপাতালে নেই। তার গ্রুপের রক্ত খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। ডাক্তার আলম সাহেবের চিকিৎসার জন্য তার পরিবারকে যেভাবেই হোক রক্ত সংগ্রহ করতে বললেন। তারা অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর একজন লোক খুঁজে পেলেন যার রক্তের সাথে আলম সাহেবের রক্ত মেলে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে লোকটি বেজায় হাড়কিপটে। রক্ত দিতে চায় না। তাকে অনেক রকমের প্রলোভন দেখিয়ে, ভুলিয়ে ভালিয়ে অনেক কষ্টে রাজি করানো হলো।

অবশেষে আলম সাহেব সুস্থ হলেন। হাড়কিপটে লোকটিকে কথা অনুযায়ী আলম সাহেবের পরিবার যা যা দিবে বলেছিলেন তার সবই দিলেন। আলম সাহেব খুশি হয়ে সাথে একটি দামি মার্সিডিজ গাড়ি উপহার দিয়ে দিলেন। এত কিছু পেয়ে লোকটি তো মহা খুশি। অনেক দিন পর আলম সাহেব আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হলেন। আবার তার অপারেশনের জন্য রক্তের প্রয়োজন। কৃপণ লোকটিকে খবর দেয়ার সাথে সাথে সে দৌড়ে এলো এবং রক্ত দিয়ে গেলো। কারণ তিনি তো জানেনই আলম সাহেব সুস্থ হয়েই তাকে আবার ধন-রত্নে ভরিয়ে দিবেন।

আলম সাহেব সুস্থ হয়ে লোকটির বাসায় এক প্যাকেট মিষ্টি ও শুকরীয়া জানিয়ে একটি কার্ড পাঠিয়ে দিলেন। মিষ্টি সাথে আর কিছু না পেয়ে লোকটির গেলো মেজাজ বিগড়ে। তিনি তখনি ছুটলেন আলম সাহেবের বাড়ি। সেখানে পৌছেই রেগে মেগে অস্থির। তিনি বলতে লাগলেন, ‘আগের বার যখন রক্ত দিয়েছিলাম তখন কত কিছু দিলেন, আর এইবার শুধু মিষ্টি। কেনো এমন হলো তা কি জানতে পারি’। আলম সাহেব মৃদু হেসে বললেন, ‘এখন আমার শরীরেও যে কৃপণ এর রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে‘।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো পড়তে পারেন...

ইচ্ছাপূরণ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-১ম পাঠ

সুবলচন্দ্রের ছেলেটির নাম সুশীলচন্দ্র । কিন্তু সকল সময়ে নামের মতো মানুষটি হয় না । সেইজন্যই…

ইচ্ছাপূরণ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-২য় পাঠ

সুশীল ভাবিয়াছিল, বাপের মতো স্বাধীন হইলে তাহার সমস্ত ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে সমস্তদিন ধরিয়া কেবলই ডুডু…

একটী পাঁঠার গল্প

একলোকের একটি পাঁঠা ছিলো। পাঁঠা ছিলো অত্যন্ত চাপাবাজ আর ভিতু প্রকৃতির। পাঁঠা রোজ রোজ ঘাস…