কখনো কিছু লিখি না।। তবে একটা সত্য ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা করল।। আমার নিজের গল্প না।। তবে যার কাছ থেকে শোনা তিনি বানিয়ে গল্প বলতে পারেন না এটুকু বলতে পারি।। আমার খালা (লিপি) এবং তার বড় বোনের (জানু) গল্প।। শেয়ার করছি লিপি খালামনির বক্তব্য অনুযায়ী।। প্রায় ২০ বছর আগের তাদের গ্রামের বাড়ির গল্প।। সংক্ষেপে বলছি।।
“আমি আর জানু একবার পাশের গ্রাম থেকে বাড়ি ফিরছিলাম।। অনেক আগের কথা তখন ঘর বাড়ি তেমন ছিল না।। গাছ পালাও ছিল অনেক।। বলতে গেলে গ্রামগুলো প্রায় জঙ্গলের মধ্যে ছিল।। ফিরতে ফিরতে বেশ সন্ধ্যা হয়ে যায়।। আমার বয়স তখন ১২-১৩ হবে।। জানুর হবে ১৫-১৬ এর মত।। বাড়ির কাছাকাছি প্রায় চলেই এসেছিলাম।। হঠাৎ কি হল জানি না, জানু বিকট চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে গড়াতে থাকে।। চোখ উলটে যায় আর মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে।। আমি প্রচণ্ড ভয়ে দিশেহারা হয়ে চিৎকার করতে থাকি।। একসময় আশে পাশ থেকে লোকজন এশে আমাদের উদ্ধার করে বাসায় এনে দিয়ে যায়।।
পরের দিন জানুর জ্ঞান ফিরে।। কিছুটা অপ্রকিতস্থের মত কথা বলে।। ফলে কবিরাজ ডেকে আনা হয়।। কবিরাজ কৌশলে জানুর সাথে কথা বলে।। জানতে পারে জানুকে এক জীন বশ করেছে।। তারপর সে অনেক রকম চিকিৎসা করে।। বিস্তারিত না বলি।। কারন গল্পের মুল অংশ চিকিৎসা নয়।। যাই হোক।। আস্তে আস্তে জানু সুস্থ হয়ে উঠে।। সুস্থ হয়ে জানু জানায় সে সন্ধ্যার কথা।। হাঁটতে হাঁটতে নাকি হঠাৎ দেখে এক লম্বা কিছু একটা তার পথ আগলে দাড়িয়ে আছে।। যার চোখ রক্তের মত লাল আর গায়ে কেমন যেন আগুনের মত আলো।। এটা দেখে সে প্রচণ্ড ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।।
কবিরাজ তখন একটা সমাধান দেন।। একটা তাবিজ জানু কে পড়িয়ে দেন।। আর বলেন আশা করি আর কোন সমস্যা হবে না।। শুধু মাত্র একটা শর্ত পালন করতে হবে।। জানু চাইলে তাবিজ খুলতে পারবে তাতে সমস্যা হবে না।। কিন্তু জানুর শোবার ঘর যেন কোন অবস্থাতেই খালি রাখা না হয়।। অন্তত একজন হলেও যেন কেউ ঘরে থাকে।। সেটা দিনে হোক বা রাতে।। সবাই যেন সাবধান থাকে।। এভাবে সমস্যার সত্যি সমাধান হয়।। বহুদিন পার হয়ে যায়।। জানুর আর কোন সমস্যা হয় না।। আস্তে আস্তে একসময় আমরা ভুলে যেতে থাকি ব্যাপারটা।।
হঠাৎ একদিন জানু একি ভাবে আবার সন্ধ্যায় মাটিতে পড়ে যায় সবার সামনে।। চোখ উলটে মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে।। একসময় অজ্ঞান হয়ে যায়।। তাড়াতাড়ি তাকে ঘরে এনে মাথায় পানি ঢেলে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়।। কিন্তু এমন তো হওয়ার কথা না।। কিভাবে হল?? চারিদিকে খোঁজ পড়ে যায়।। একসময় জানা যায় যে জানু একবার আজকে তাবিজ খুলে রেখেছিল।। আর বাসায় লোক কম থাকায় একটা মুহূর্তের জন্য ঐ শোবার ঘরে কেউ ছিল না।। আর তখনই মনে হয় জীনটা ফিরে এসেছিলো।। এবার সবাই তাবিজের খোঁজ করতে থাকে।। পরের দিন বাড়ি থেকে কিছু দূরে ঝোপ-জঙ্গলের মধ্যে তাবিজটাকে পাওয়া যায়।।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।