►অন্ধকারের যাত্রাসঙ্গি◄

আমি আজকে যে গল্পটা বলব,অদ্ভুতভাবে সেই গল্প আমি বেশ কয়েকজনের কাছে শুনেছি।। তাদের মাঝে একজন আবার দাবী করেছে যে গল্পের নায়ক আজিমপুরে থাকেন(সত্যি মিথ্যা জানি না)।।

যাই হোক গল্পটা শুরু করছি।।

ঘটনাটা ঘটেছে ঈশ্বরদী রুটে।। প্রায় মধ্যরাতে।। সেই রূটের দূরপাল্লার একটি বাস রাত আনুমানিক ১২-১২.৩০ টার দিকে শহর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।। বাসে যাত্রী ছিল একজন (গল্পের নায়ক), ড্রাইভার আর একজন হেল্পার।। পথে বেশ কয়েকটা স্টপেজ থেকে যাত্রী উঠানামা করার কথা।। কিন্তু কেন জানি সেদিন কোন স্টপেজ থেকে কোন যাত্রী উঠেনি।। বাসটি শহর ছেড়ে আরো দূরে ছলে গেল এবং একটি জায়গাতে (খারাপ জায়গা,লোকের মুখে শোনা) থামল।। সেখানে দুইজন লোক দাড়িয়ে আছে দেখা গেলো।। তারা বেশ লম্বা চওড়া এবং সাদা আলখেল্লা পরা।। মুখ অন্ধকারে ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না।। তাদের মধ্যে একজনের হাতে ছোট বাচ্চার কাফনে মোড়া লাশ!! তারা ড্রাইভার কে বলল, “আমাদের সামনের কবরস্থানে নামিয়ে দিবেন।।” ড্রাইভার এবং হেল্পার একটু ভয় পেলেও কিছু বলল না।। তারা বাসে উঠে এলো।। তখন মনে হলো বাসে বেশ মিষ্টি একটা গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।। রাতের বাস, তাই লাইটগুলো সব অফ করা।। ড্রাইভারের কাছে বাসটা বেশ ভারি হয়ে গেছে বলে মনে হলো।। যতই স্পীড বাড়ায় বাস আর তেমন এগোয়না।। অদ্ভুত লোকগুলো সারা বাসে এত জায়গা থাকতে গিয়ে বসলো একদম পিছনের সিটে।। বাসের অন্য তিন জনের ততক্ষণে কাহিল অবস্থা।। ভয়ে যেন সিটের সাথে আটকে গিয়েছে।। নড়াচড়া করতে পারছে না।।

হঠাৎ মনে হলো, পিছনের সিট থেকে “কড়মড়” করে হাড় চাবানোর শব্দ আসছে!! তিন জনের বুঝতে আর বাকি থাকে না যে এরা সাধারন মানুষ না, এরা অন্যকিছু।। তারা বাচ্চাটাকে শান্তিতে খাওয়ার জন্য এই নির্জন বাসে উঠে এসেছে।। অনেকক্ষন পরে বাসটা অবশেষে কবরস্থানে এসে পৌছাল।। তখন ড্রাইভার তাদেরকে নেমে যেতে বলল।। সেই এক মাত্র যাত্রীটা এরইমধ্যে নিজের সিট ছেড়ে ড্রাইভারের পাশে, দরজার কাছের সিটে এসে বসেছে।। তার এবং ড্রাইভারের মধ্যে কোন কথা হয়ে থাকতে পারে।। ঠিক জানিনা।। লোক দুইটা যখন নেমে যাবে, দরজার কাছে আসা মাত্রই ড্রাইভার লাইট জ্বলিয়ে দিল(সেই যাত্রীর খুব কৌতহোল ছিল যেঁ তারা দেখতে কেমন!!)।।

তখন দেখা গেল, তারা মানুষের মতই দেখতে কিন্তু চোখের জায়গায় বিশাল বড় বড় গর্ত।। সেটাই তাদের অশরীরি ভাবটা ফুটিয়ে তুলেছে।। তাদের হাতে আগের মতই ছোট বাচ্চার লাশ (কাফনে মোড়া)।।

তারা সেই যাত্রীর দিকে তাকিয়ে বলল, “তোর মায়ের বুকের দুধের অনেক তেজ!! তাই আজকের মত বেঁচে গেলি।।” এই বলে তারা কবরস্থানে নেমে গেল।।

(লিখতে গিয়ে আমার নিজেরই গা ছমছম করছিল।। যদিও আমি বেশ সাহসী এবং যুক্তিবাদী মানুষ।। জানিনা আপনাদের কেমন লেগেছে!!)

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!