
আমার ইচ্ছেগুলো শুরু হয়েছিল বড় আজবভাবে। ছোট্টবেলার সেই ঘুড়ি হয়ে যাবার ইচ্ছেটা ছিল সবার চেয়ে আলাদা এবং কিছুটা অন্যরকমও বৈকি। আমি ঘুড়ি হতে পারিনি। আমার সীমানা ছিল আমাদের পুরানো ঢাকার দোতলা বাসার ছাদে দাড়িয়ে, লাটাই হাতে রঙ বেরঙের ঘুড়ি উড়ানো পর্যন্তই। নিজ হাতে ঘুড়ি বানিয়ে, সেই ঘুড়ি আকাশে উড়িয়ে, চোখের পলক না ফেলে সেদিকে তাকিয়ে থেকে ভীষণ আনন্দ পেতাম।
আর সেই আনন্দের নিচেই চাপা দিয়ে রেখেছিলাম আমার ঘুড়ি হয়ে যাবার ইচ্ছেটাকে। ইচ্ছে ছিল রাজকন্যাকে সাথে নিয়ে সাত সমুদ্র তের নদী পারি দেবার। কিন্তু হয়নি। রাজকন্যাও পাইনি আর জাহাজ কেনার সামর্থ্যও আমার ছিল না। তাই আমার দিন কেটে গিয়েছিল একা একা পুকুর পাড়ে বসে সেই পুকুরের অপর পারের দিকে ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে। ইচ্ছে ছিল কোন এক শীতের শেষ বিকেলে, গায়ে চাদর জড়িয়ে, তোমার ছোট্ট হাতটি ধরে, হাটব কোন এক নির্জন রাস্তায়। আমার চাদর, নির্জন রাস্তা, শীত এবং শেষ বিকেল সবই আছে। তবুও এই ইচ্ছেটাও পুরন হয়নি শুধু তুমি ছিলেনা বলে। কলেজে পড়ার সময় একদিন ইচ্ছে হয়েছিল বিমানের পাইলট হবার। হতে পারিনি।
আমার সাধ্য ছিল মটর সাইকেলের ড্রাইভার হওয়া পর্যন্তই। তাইতো মাঝে মাঝে যখন মটর সাইকেল চালাই, তখন মটর সাইকেলের পিচঢালা পথ আর বিমানের রানওয়ের মাঝে মিল খুজে বেড়াই মনেরই অজান্তে! ইচ্ছের ফানুস কোন বাধা না মেনে, আজও ছুটে চলেছে অজানা গন্তব্যে। জানিনা সেই ফানুসকে ছুয়ে দেখার সামর্থ্য কোনদিনো হবে কি না। —-সংগৃহীত