
আসসালামু আলাইকুম। সবাই কেমন আছেন? আজকে আপনাদের সাথে সবথেকে কমন এবং ট্রেন্ডিং একটি টপিক নিয়ে কথা বলবো। ফেসবুক খুললেই কি ডিজিটাল মার্কেটিং-এই টার্মটি দেখতে দেখতে চোখ ব্যথা হয়ে যাচ্ছে? বন্ধুরা সবজায়গায় ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোর্স করছে- শুনতে শুনতে হাঁপিয়ে যাচ্ছেন? ইয়েস,তাহলে আজকের ব্লগটি আপনারই জন্য।সাথে কিন্তু থাকছে ইম্পরট্যান্ট সব ট্রিক্স & ট্রিপ্স।শেষ পর্যন্ত না পড়লে কিন্তু মিস করবেন।স্টে টিউন্ড!🤎
প্রথমেই আসা যাক মার্কেটিং কি-এই বিষয় নিয়ে? মার্কেটিং বলতে মূলত আমরা কি বুঝি? মার্কেটিং বলতে কোন পণ্য অথবা সেবা বাণিজ্যিক ভাবে কিভাবে প্রচার এবং প্রসার করা যায় সেই বিষয়ক স্ট্র্যাটেজি বা কৌশল কে বলা হয়।আরো সোজা করে বলতে গেলে,একটি পণ্য বা সেবা আপনি কেন কিনবেন বা গ্রহণ করবেন-এই প্রশ্নের উত্তরই হলো মার্কেটিং। ধরুন আপনি আমের ব্যবসা করছেন। আপনার থেকে আম কিনতে হলে সবার আগে আমাকে জানতে হবে আপনি আম বিক্রি করেন কিনা। আপনি যদি আপনার ব্যবসার কথা চারিদিকে প্রচার করতে পারেন,তখনই আমি এবং আমার মতো আরো অনেক মানুষ আপনার কাছে যেয়ে আম কিনতে পারে।এখন প্রশ্ন হলো,আমের মতো এমন সহজলভ্য ফল কেনই বা আপনার থেকে আমাকে কিনতে হবে? এটা তো আমি আমার বাড়ির পাশের বাজার থেকেও কিনতে পারি। এক্ষেত্রে আপনি আপনার পন্যটিকে যদি আকর্ষণীয় এবং ইউনিক ওয়েতে আমার কাছে প্রচার করতে পারেন,তাহলে সেটাই হবে আপনার মার্কেটিং,এবং আপনি যেসকল কৌশল অবলম্বন করে প্রচার এবং প্রসার করবেন,সেটাকে বলবো আমরা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি।
তাহলে তো বোঝা গেলো মার্কেটিং কি।এবার তাহলে আমরা আমাদের মূল টপিক “ডিজিটাল মার্কেটিং কি”-সেটা নিয়ে আলোচনা করি।
বর্তমান যুগ সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। প্রফেশনাল,একাডেমিক ব্যবসা -বানিজ্য,এমনকি চিকিৎসা-সবকিছুর ক্ষেত্রেই এখন সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে করোনা মহামারীর পর থেকে সবকিছুই অনেকটা অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়ে।সারাদিন ঘরে বন্দী থাকার কারণে অনেকেই তাদের অলস সময় কাটাতে ফেসবুক পেইজ খোলেন এবং ব্যবসা শুরু করেন।তাদের মধ্যে থেকে এখন অনেকেই আছেন,যারা রমরমা ব্যবসা করে উঠে এসেছেন বড় প্ল্যাটফর্মে। আবার অনেকেই ঝরে পড়েছে কনসিসটেন্ট না থাকার কারণে। তাহলে এখন প্রশ্ন হলো, অনলাইনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে পণ্য নিয়ে কিভাবে তারা মার্কেটিং করেছেন? অবশ্যই তারা মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করে ইউনিক ওয়েতে মার্কেটিং করেছেন,এবং এটাকেই আমরা বলবো ডিজিটাল মার্কেটিং। কি? ঘাপলা লাগলো? তাহলে এককথায় বলি,
অনলাইনের মাধ্যমে আপনার ব্যবসা বা ব্র্যান্ডকে প্রচার করার পদ্ধতিই হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। সোশ্যাল মিডিয়া বলতে বর্তমানের সবথেকে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফেসবুক। ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত হাজার হাজার ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তাদের ব্যবসার প্রচার এবং প্রসার করছে। ফেসবুক কমিউনিটি থেকে কিছু সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে যার কারণে অনেকে শুধুমাত্র কন্টেন্ট মেক করে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে টাকা উপার্জন করতে পারছে। বেকার না থেকে শুধুমাত্র ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসা করে বা কন্টেন্ট বানিয়ে উপার্জন করার এই স্ট্র্যাটেজি সত্যিই প্রশংসনীয়। শূণ্য থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র অনলাইন ব্যবসা থেকে বড় পরিসরে লাখ লাখ টাকার বিজনেস অনেকেই গড়ে তুলেছেন।বাংলাদেশের স্বনামধন্য কয়েকটি অনলাইন ব্র্যান্ড যেমন :
এসএ কর্পোরেশন পেইজের ওনারের সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়,উনি মাত্র ১/২টি কসমেটিক্স প্রোডাক্ট দিয়ে ফেসবুক পেইজ ওপেন করেছিলেন ২০১৫ সালে এবং পরবর্তীতে পরিশ্রম এবং নিয়মিত থাকার কারণে বর্তমানে ২০২৪ সালে উনারা “পোজো বিউটি” মানে একটি কসমেটিক্স ব্র্যান্ড চালু করেছেন।মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে শুরু করা জামা কাপড়ের পেইজ ডোপলুক এখন চট্টগ্রামে তাদের আউটলেট উদ্বোধন করেছে৷ নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাক্টিভ থাকার কারণে এবং ভাল মানের পন্য সরবারহ করে তারা এতদূর পর্যন্ত আসতে পেরেছে মানুষের মন জয় করে। এখন বলুনতো,ফেসবুকে তো চারিদিকে তাকালেই শত শত উদ্যোক্তাদের ছড়াছড়ি। ফ্রেন্ডলিস্টের ১০০ জন বন্ধুর মধ্যে ৬০ জনেরই একটি করে ফেসবুক পেইজ আছে বলে ধরা যায়। ফেসবুক জুড়ে ট্রেন্ডি প্রোডাক্টের ছড়াছড়ি। একই প্রোডাক্ট বিক্রি করছে তাদের মতো আরো ১০০টি অনলাইন পেইজ।তাহলে এত পেইজ থাকতেও,সবাই কেন তাদের পেইজ থেকেই পন্য কিনছে? কেন তারাই এগিয়ে যেতে পারছে এবং বাকিরা পারছে না?
শুরু করি একটি কেস স্টাডি দিয়ে।বছর পাঁচেক আগে,শখের বসে আমি আর আমার বান্ধবী মিলে ছোট্ট একটি হাতে বানানো গয়নার পেইজ ওপেন করেছিলাম।গয়নাগুলো ছিল হাতে বানানো,তাই বেশ ইউনিক ও ছিল। ইউনিভার্সিটি পড়ার কারণে আশোপশের মানুষজনের মধ্যে আমাদের পেইজটা একটু পরিচিত হলো। কয়েকটি অর্ডারও পেলাম।মন ভালো হয়ে গেলো এবং আস্তে আস্তে সব প্রোডাক্টগুলোই বিক্রি হয়ে গেলো। কিন্তু পড়াশোনার চাপ বাড়ার কারণে এবং বাজেটে সংকুলান না হওয়ায় ছেড়ে দিতে হয় আমাদের ছোট্ট বিজনেসটি।এখন ভাবুন,পেইজটি যদি সেভাবেই চলতে থাকতো,তাহলে পাঁচ বছর পর,আজকের এই দিনে হয়তো,আমরাও বড় কোন প্ল্যাটফর্মে চলে যেতে পারতাম। তাহলে প্রশ্ন আসে, আমাদের সবথেকে বড় সমস্যাটি কোথায় ছিল? উত্তর একটাই-সেটা হলো ল্যাক অব কনসিস্টেন্সি অর্থাৎ নিয়মিত না হওয়া।আমাদের মতো এমন সিচুয়েশনে পড়ে অনেকেই হয়তো তার শখের বিজনেসটি ছেড়ে দিয়েছেন।অথবা চাইলেও হয়তো পেইজের মেইনটেইনেন্সের জন্য সময় দিয়ে উঠতে পারেন না, তাই ঠিকঠাক রিচ ও হয়না আপনার পোস্ট। হ্যাঁ,এটা ঠিক যে বুস্টিং এর বিকল্প নাই আপনার পেইজের রিচের জন্য,কিন্তু বুস্টিং যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ। অর্গানিকভাবে রিচ পাওয়া গেলে সেটা হবে আপনার পেইজের জন্য একটি ব্লেসিং।কারণ মানুষ আপনার পণ্য পছন্দ করলে কিনবে,এবং সাথে আরো ১০জনকে রিকমেন্ড ও করবে।কাজেই পেইজ খোলার পর,সবথেকে প্রথম কাজগুলো আপনার পেইজের জন্য অর্গানিক রিচ গেইন করা। এখন কথা হলো,ফেসবুকে ১০০টা পেইজ থাকার পরেও কেন আপনার পেইজে মানুষ আসবে? হ্যাঁ এর জন্যই আজকে আমি আপনাদেরকে সহজ কতগুলো ট্রিক শেখাবো যেগুলো আমি বিভিন্ন পেইজ ঘাটাঘাটি করে রিসার্চ করে জেনেছি।
প্রোডাক্ট সিলেকশন: আপনি কোন প্রোডাক্ট টি নিয়ে ব্যবসা করতে চান,সেটা প্রথমে ঠিকঠাক সিলেক্ট করুন। একসাথে যদি ২/৩ধরনের প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করতে থাকেন,তাহলে ফেসবুক সেটার রিচ কমিয়ে দেয়।যেমন: আপনি যদি ফলের ব্যবসা করতে চান,তাহলে শুধু ফল সংক্রান্ত তথ্যই শেয়ার করবেন।কিন্তু ফল এবং কাপড়-দুটোর ব্যবসাই করতে চান একই পেইজে,তখন ফেসবুক অ্যালগরিদমের কারণে সেটার রিচ শুরুতেই কমে যায়।তাই পেইজ খোলার শুরুতেই ঠিকঠাক ভাবে মনস্থির করে প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন।
প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি: প্রোডাক্টের ফটোগ্রাফি একটি বড়সড় ভূমিকা পালন করে এক্ষেত্রে।বাংলায় একটি কথা প্রচলিত আছে-“আগে দর্শনধারী,পরে গুণবিচারী”।কথাটি ক্ষেত্রবিশেষে সত্য হলেও এই ক্ষেত্রের জন্য যথাযথভাবে যোগ্য।আচ্ছা একবার ভাবুন তো,কোন একটি পেইজে গেলেন আপনার পছন্দের একটি ওয়ালেট কিনতে,কিন্তু পেইজে ঢুকেই দেখলেন,ছবিগুলো কেমন জানি ম্যাড়ম্যাড়া,ঝাপসা,অথবা ব্যাকগ্রাউন্ড আপনার অগোছালো ঘরের মতোই নোংরা :p। তখন কেমন লাগবে? অবশ্য অনেক পেইজ এই পদ্ধতির সুবিধাও নেয়।দেখা যায়,যেমন তেমন একটি বাজে পণ্য ইফেক্ট দিয়ে সুন্দর করে পেইজে আপলোড করে।কেনার পর কেলেঙ্কারি! না না,আমি কিন্তু মোটেও আপনাদের বাজে আইডিয়া সাজেস্ট করছিনা,শুধু সতর্ক করে রাখছি।কাজেই বলবো,সৎ হোন এবং সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে মানুষের সামনে আপনার প্রোডাক্টটি সাজিয়ে রাখুন।বলা তো যায় না,অনেকের কেনাকাটার ইমপাল্সিভ শখ থেকে শুধুমাত্র আউটার লুক দেখেই জাস্টিফাই করে কিনেই ফেলতে পারে আপনার প্রোডাক্ট। তাতে তো আপনারই লাভ,লালে লাল! :p
টাইম মেইনটেইনেন্স: জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো সময়।সময়কে যদি সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়,তাহলে জীবন হয়ে ওঠে সেরা।আর যদি কাজে না লাগানো যায়,খুঁটির একটি দড়ি খুলে গেলে যেমন সবগুলো খুঁটি পড়ে যায়,সেভাবে জীবনের প্রত্যেকটা ধাপই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।অনেক লেকচার দিয়ে ফেললাম, তাইনা? যাক,এবার তাহলে কাজের কথায় আসি।ফেসবুক পেইজের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ট্রিক্স টা হলো টাইম মেইনটেইন করা।এখন প্রশ্ন হলো এখানে টাইমের ব্যাপার আসে কিভাবে? কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে আমরা এটার ব্যাখ্যা টানতে পারি:
১. মনে করুন,আপনি একটি পেইজ খুললেন।চিন্তা করলেন,অনেক তো প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি করলাম,এখন তাহলে সবগুলোর ছবি একসাথে দিয়ে দেই।না! সবথেকে বড় ভুল আপনি এখানে করবেন যদি এই ধরনের কাজ করে থাকেন।ফেসবুক একটি নির্দিষ্ট অ্যালগরিদমে চলে, কাজেই আপনি যদি একবারে টানা কয়েকদিন ছবি আপলোড করে বসে থাকে এবং পরে পেইজ আপডেট না রাখেন,তাহলে হাজার দুঃখ করলেও আপনার পেইজের প্রোডাক্ট মানুষের কাছে পৌঁছাবে না। কাজেই আপনার পেইজকে গতিশীল রাখুন।সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে আপটুডেট রাখুন।যদি আপনার প্রোডাক্ট সংখ্যা ১০টি হয়,তাহলে ঘুরিয়ে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ১০*৩=৩০ টি ছবি তুলুন এবং মাসের ৩০দিনে ৩০রকম ক্যাপশন দিয়ে ছবিগুলো পোস্ট করুন।
২. কিছু নির্দিষ্ট সময় থাকে যখন মানুষ ফেসবুকে বেশি থাকে এবং নিউজফওড স্ক্রল করে।সেই সময়গুলোতে বেশি বেশি পোস্ট করুন।তাহলে মানুষের চোখে পড়বে। ইফেক্টিভ সময়গুলো হলো:
* সকাল ৭.০০-৯.০০,কারণ এ সময় মানুষ ঘুম থেকে উঠে নিউজফিড চেক করে,অনেকে যার যার গন্তব্যস্থলে যাওয়ার সময় ব্যস্তরাস্তার ট্রাফিকে বসে নিউজফিডে চোখ বুলায়।মানুষের হাতে তখন করার কিছু থাকেনা,তাই পোস্ট পড়ে সময় অতিক্রম করে। সেক্ষেত্রে এই সময়গুলোতে পোস্ট করলে আপনার পেইজ অর্গানিক রিচ পাবে বলে আশা করা যায়।
*দুপুর ১.০০-৩.০০।এ সময় থাকে লাঞ্চ ব্রেক। স্কুলগোয়িংদের জন্য স্কুল ছুটির সময়, কলেজ এবং ভার্সিটি গোয়িং দের জন্য ব্রেকআওয়ার।অলস এই সময়ে দুপুর লাঞ্চ করে বাঙালির মনে একটু ভাতঘুম দেবার বাসনা জেগে ওঠে।কিন্তু ক্যালানি খাওয়ার ভয়ে জেগে তো থাকতেই হবে।তাই জোর করে জেগে থাকার জন্য অনেকে ডুব দেয় ফেইসবুকে,আর মেয়ে মানুষ হলে তো কথাই নেই,ঘাপটি মেরে বসে থাকে কখন নিউ প্রোডাক্ট আপলোড হবে এই আশায়।
*বিকাল ৫.০০-৭.০০-বিকালের সময়,বাড়ি ফেরার সময়।ক্লান্ত চোখে একঘেয়েমি এই লাইফে বন্ধুদের সাথে কফি শেয়ার করতে করতে স্ক্রল করা হয় ফেসবুক।এর মধ্যে যদি আপনার পেইজটি পড়ে যায়,তাহলে ইউ আর দ্যা লাকি ওয়ান।আপনার প্রোডাক্ট দেখে যদি কারোর ভালো লাগে,পাশের মানুষটির সাথে শেয়ার করার মোক্ষম সময় ঠিক তখনি।
*সবশেষে রাত ৮.০০-১১.০০।এই সময়ে মানুষ সবথেকে বেশি ফ্রি টাইম কাটায়। কাজেই আপনার প্রোডাক্টটি দেখে ভালো মন্দ যাচাই করে অর্ডার প্লেস করার সময় ঠিক তখনি।
তবে,টার্গেট কাস্টোমার সিলেক্ট করে পেইজের ফলোয়ারদের অ্যাক্টিভ টাইম বুঝে পোস্ট করুন।বর্তমানে ইয়াং জেনারেশানের মধ্যে রাত জাগার প্রবণতা খুবই বেশি।আপনার টার্গেটেড কাস্টমার যদি ঢাকা বেস্ড হয় এবং ১৬-৩০ বছর বয়সী মেয়ে হয়, তাহলে অবশ্যই রাত ১২/১টায় পোস্ট করলে সর্বোচ্চ রিচ পেতেই পারেন।এগুলো নির্ভর করবে আপনার প্রোডাক্ট টাইপ,এবং টার্গেটেড অডিয়েন্সের উপরে।
রিল মেকিং: এবার কথা বলবো রিল নিয়ে।রিল দেখিনা এমন মানুষ আমরা খুবই কম।একবার ফেসবুকে ঢুকলে রিল দেখতে দেখতেই কেটে যায় ১-২ঘন্টা! রিলের মতে অ্যাডিক্টিভ জিনিস খুব কমই আছে।বর্তমানে রিল্স ভিডিও থেকেই মূলত রিচ আসে।সময় অনেক কম থাকায়,এখন অনেকেই বড় পোস্ট স্কিপ করেন এবং শর্টকাটে রিল দেখে। রিল মেকিং এর এই আইডিটা বিগিনারদের জন্য খুবই ইউজফুল।কারণ আপনি যদি টাইম মেইনটেইন করে নিয়মিত পোস্ট ও করেন,তাতেও খুব একটা রিচ হবেনা যদি না আপনি রিল আপলোড করেন। কারণ দিনকেদিন আমরা এমনই অলস হয়ে পড়ছি যে,সবকিছুতেই শুধু শর্টকাট খুঁজি।কাজেই রিল কে রিচ বাড়ানোর একটি শর্টকাট প্রসেস ও বলা যায় বটে।আপনি পোস্ট বা পিকচার আপলোড না করেও শুধুমাত্র রিলের সাহায্যে রিচ করতে পারেন,কিন্তু সেক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, আগের পয়েন্ট ফলো করে অবশ্যই, অবশ্যই এবং অবশ্যই(তিনবার বললাম মানে মাস্ট হ্যাভ কিন্তু :p) টাইমটেবিল ফলো করে রিল আপলোড করবেন।যত বেশি ভিউ,তত বেশি রিচ। রিল অবশ্যই ৩ সেকেন্ডের বেশি হতে হবে। দ্রুত রিচ পাওয়ার জন্য ট্রেন্ডিং কোন অডিও ব্যবহার করা যেতে পারে।আর যদি টার্গেট হয় মনিটাইজেশন তাহলে অথেনটিক অডিও ব্যবহার করতে হবে।অর্থাৎ ফেসবুকের কোন অডিও ব্যবহার করা যাবেনা।করলেও রিচ হলেও মনিটাইজেশন পাওয়া সম্ভব হবেনা।রিলের মধ্যে আপনার প্রোডাক্টের ডিটেইলিং যত কাছ থেকে সম্ভব দেখানোর চেষ্টা করবেন এবং দৃষ্টিনন্দন রাখার চেষ্টা করবেন।
ফেসবুক লাইভ: আপনি যদি আপনার পেইজ থেকে লাইভে আসেন,তাহলে অবশ্যই রিচ বাড়বে। লাইভে আসার কারণে আপনি আপনার ফলোয়ারদের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন।আপনার প্রোডাক্টের গুনগত মান নিয়ে আলোচনা এবং সমালোচনা দুটোই পাবেন।মানুষ যখন পেইজওনারকে চোখের সামনে দেখতে পাবে, প্রোডাক্টের মান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাবে।মনে রাখবেন,ব্যবহারে বংশের পরিচয়।কাজেই আপনার ব্যবহার যখন সুন্দর হবে, ক্রেতারা আপনার থেকে প্রোডাক্ট কিনে স্বস্তি বোধ করবে।বারবার আপনার থেকেই কিনতে আসবে।তাদেরকে আমরা বলতে পারি রিপিটেড কাস্টমার।এই রিপিটেড কাস্টমাররাই তাদের আশেপাশের মানুষকে আপনার সম্পর্কে জানাবে,রিভিউ দিবে।এরপর তারা আবার তাদের আশেপাশের মানুষকে জানাবে।ভেবে দেখুনতো, ক্রেতা বিক্রেতার পারস্পারিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে যেই প্রচার এবং প্রসার আপনি করতে পারবেন,সেটা কি শুধুমাত্র বুস্টিং দিয়ে সম্ভব? সম্ভব না।কাজেই আপনার পেইজের স্বার্থে কাস্টমারের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখা আপনার পেশাগত দায়িত্ব।
যাকগে,অনেক তো প্যাঁচাল পাড়লাম।আপনাদের শুনে বোরিং লাগেনি আশা করি।ইজি টিপ্স তো দিয়েই দিলাম।নিউ সেলার হিসেবে এসমস্ত টিপ্স কাজে লাগালে একদম হাতেনাতে রেজাল্ট পাবেন।তবে একটাই প্রধান শর্ত,অনিয়ম করা যাবেনা। যদি অনিয়মিত হন,তাহলে ফেসবুক আপনাকে পাত্তা দিবেনা।এককোণে চুপচাপ বসে বাতাস খাওয়া ছাড়া আর লাভ হবেনা যতই বুস্টিং করুন না কেন। তাই সময় থাকতে নিয়মিত হন।আর একটা কথা সবসময় মাথায় রাখবেন, “গুড থিংস টেক টাইম”! কাজেই অধৈর্য্য হওয়া যাবেনা। আপনার কন্টেন্ট যদি ভালো হয় এবং প্রোডাক্টের মান যদি ভালো থাকে,সঠিক সময়ানুবর্তি হন এবং অবশ্যই আপনার ব্যবসা একদিন গ্রো করবে।
এবার আসা যাক,এই ডিজিটাল মার্কেটিং আপনি শিখবেন কিভাবে? ওকেই, সেল্ফ লার্নিং ইজ আ বেস্ট থিং।যদি আপনি নিজেই আগ্রহী থাকেন,ইউটিউব ঘেটে প্রচুর শিখতে পারবেন। আপনি যদি আগ্রহী না হন, তাহলে ১০-২০হাজার টাকার কোর্স করেও আপনি কিছুই শিখতে পারবেন না।ফেসবুক ও বিভিন্ন গ্রুপ আছে যেখান থেকে আপনি বিভিন্ন মানুষের সাথে ইন্টারকানেক্টেড হয়ে অনেক কিছু শিখতে পারবেন। Digital Marketing Skills for Bangladesh -Connect Firm হলো এর মধ্যে অন্যতম একটি গ্রুপ।এটি অনলাইন বেস্ড একটি গ্রুপ যেখানে বিনামূল্যে আপনি যুক্ত হতে পারবেন।এটির মাধ্যমে আপনি আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং এর দক্ষতাকে বাড়াতে পারবেন।সাথে সাথে বাস্তবে এটি কিভাবে ব্যবহার করবেন সেটাতেও পারদর্শী হয়ে উঠতে পারবেন। এটি বাংলাদেশি তরুণদের জন্য অন্যতম সেরা একটি প্ল্যাটফর্ম।
এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন গ্রুপ যারা আপনার ফেসবুক পেইজটিকে বুস্টিংসহ আরো অন্যান্য সহায়তা করাতে সক্ষম।
নিচে কয়েকটি পেইজের নাম সহ লিংক দেওয়া হলো:
১. Sarkar It
৩.eManager
এখন বলুন? কেমন লাগলো আমার ব্লগ? নেক্সট কেন টপিক নিয়ে আলোচনা করবো জানাবেন কাইন্ডলি! সমালোচনা বা আলোচনা,যেটাই করবেন,জানাবেন।আজকে আসি,আল্লাহ হাফেজ।😃