একটি নিতি গল্প প্লাস আজকের বাস্তবতা

অনেকদিন আগে এক হিন্দু ঋষি তার দুজন শিষ্য সহ নদীর ধার দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা দেখলেন দুজন ব্যাক্তি প্রচন্ড জোরে জোরে একে অপরের সাথে বাকবিতন্ডায় লিপ্ত। ঋষি তার শিষ্যদেরকে প্রশ্ন করলেন, “এরা কি করছে?” শিষ্যরা বলল, “মান্যবর, এরা ঝগড়া করছে।” ঋষি কিছু বললেন না।

ডেরায় ফিরে তিনি তার শিষ্যদেরকে ডেকে বললেন, “আচ্ছা, বলত, পথে যে দুজন ব্যাক্তিকে তোমরা ঝগড়া করতে দেখলে, তারা একে অপরের কাছে থাকার পরেও কেন এত জোরে চিৎকার করে কথা বলছিল?” শিষ্যরা বিভিন্ন রকম উত্তর দিল, কিন্তু কোনটাই ঋষির মনমত হলোনা।

সবশেষে ঋষি বললেন, “যখন দুজন ব্যাক্তি কলহে লিপ্ত হয়, তখন তাদের দুটি হৃদয়ের দুরত্ব অনেক বেড়ে যায়। আর সেই দুরত্বের কারণেই একে অপরের সাথে চিৎকার করে কথা বলতে হয়। পক্ষান্তরে কি ঘটে, যখন একজন ব্যাক্তি অপরজনের ভালোবাসায় আবদ্ধ হয়? তখন আর চিৎকার করতে হয়না, মৃদু ভাষায় বললেই হয়। তাদের দুটি হৃদয়ের দুরত্ব একেবারে কমে যায় অথবা থাকেই না।”

ঋষি বলতে থাকলেন, “আর এই ভালোবাসা যখন উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে, তখন কি ঘটে? তখন ফিসফিস করে বললেও চলে অথবা চোখের চাহনিতেও একজন অন্যজনের কথা বুঝতে পারে।”

তাদের পরবর্তীতে ঋষি বলেন, “তাহলে শিষ্যরা, যখন তোমরা একে অন্যের উপর রেগে যাবে, তখন দুটি হৃদয়ের দুরত্ব বাড়তে দিওনা। এমন কিছু বলোনা যা সেই রাগের আগুনে ঘি ঢেলে দেয়। নইলে এমন এক দিন আসবে, যেদিন দুজনের দুটি হৃদয়ের দুরত্ব এত বেড়ে যাবে, যে কাছাকাছি আসার আর কোন রাস্তা থাকবেনা।”

Written By

More From Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You May Also Like

সততার মূল্য

‘সততাই সর্বোৎকৃষ্ট পন্থা’—এ প্রবাদটি আমরা সবাই জানি। কেবল প্রবাদে নয়, পবিত্র কোরআন ও হাদিসেও সততার…

গাধা ও গরু

মহান আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং অন্যান্য সব প্রাণীকে মানুষের অধীন…

ভজনের কপাল

ভজন বেলপাহাড়ির মানুষ নয়।ওর বাড়ি ঝাড়্গ্রামের ওদিকে।জমিজমা কিছু নেই।জঙ্গলের পাতা কুড়িয়ে নয়তো বাবুইঘাসের দড়ি পাকিয়ে…