রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর বংশধর
হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর পিতা আবদুল মুত্তালেব তাঁর পিতা হাশেম তাঁর পিতা আবদে মুনাফ তাঁর পিতা কছাই তাঁর পিতা কেলাব তাঁর পিতা মুররা তাঁর পিতা কা’ব তাঁর পিতা লুওয়াই তাঁর পিতা গালেব তাঁর পিতা ফেহের তাঁর পিতা মালেক তাঁর পিতা নজর তাঁর পিতা কেনানা তাঁর পিতা খোজাইমা তাঁর পিতা মুদরেকা তাঁর পিতা ইলিয়াছ তাঁর পিতা মুজার তাঁর পিতা ছালামান তাঁর পিতা আদনান তাঁর পিতা আদু তাঁর পিতা হোসাইছা তাঁর পিতা ছালামান তাঁর পিতা নাশেদ তাঁর পিতা হাজা তাঁর পিতা মাখী তাঁর পিতা আঈফী তাঁর পিতা আকবর তাঁর পিতা জাহেম তাঁর পিতা নাশেদ তাঁর পিতা মাখী তাঁর পিতা হামদালান তাঁর পিতা ছাম্বার তাঁর পিতা ইয়াসরিরব তাঁর পিতা ইয়াহজান তাঁর পিতা ইয়ালহান তাঁর পিতা আরওয়া তাঁর পিতা আয়েজ তাঁর পিতা দীশান তাঁর পিতা আয়ছর তাঁর পিতা সুমাই তাঁর পিতা মুজাই তাঁর পিতা এওজ তাঁর পিতা এরাম তাঁর পিতা কায়জার তাঁর পিতা ইসমাইল (আঃ) তাঁর পিতা ইব্রাহিম তাঁর পিতা আজর তাঁর পিতা নাহুর তাঁর পিতা ছাম তাঁর পিতা নুহ (আঃ) তাঁর পিতা লামুক তাঁর পিতা মুতাওয়াশেহ তাঁর পিতা আখুনুহ (ইদরীস) (আঃ) তাঁর পিতা ইয়ারদ তাঁর পিতা মাহলায়েল তাঁর পিতা কায়নান তাঁর পিতা গানুশ তাঁর পিতা শীষ তাঁর পিতা আদম (আঃ) তাবাকে ইবন সায়াদ নামক ছীরাত গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, জৈনক ব্যক্তি মহানবী (আঃ) এর দরবারে আরজ করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কখন নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, আমার নিকট হতে যখন নবুওয়াতের প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করা হয়েছে তখন আদম রুহও দেহের মধ্যে ছিল।
হযরত ইমাম বাকের (রাঃ) কে এক ব্যক্তি প্রশ্ন করল, কি ভাবে আমাদের নবী সর্বপ্রথম নবী হলেন? অথচ তাকে সর্বশেষ বানানো হয়েছে। ইমাম বাকের উত্তরে বললেন, রোজে আযলে যখন রাব্বুল আলামীন আদম সন্তানদের নিকট অংগীকার হতে মীছাক গ্রহণ করেন তখন তিনি জিজ্ঞেস করেছিলেন, আমি কি তোমাদের রব নেই। তদুত্তরে সকলে বলেছিল, হ্যাঁ। সর্বাগ্রে যিনি হ্যাঁ বলেছিলেন তিনি ছিলেন হযরত সাইয়্যেদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবীয়ীন মুহাম্মদ (সাঃ)। এই জন্যে তিনি সর্ব প্রথম নবী।
হাদীসঃ হযরত আদম (আঃ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নাম আরশে আজীমে লিপিবব্ধ দেখতে পেয়ে আল্লাহকে সুবহানাহু তাআলাকে এ সম্বন্ধে প্রশ্ন করলে আল্লাহ তাআলা বলেন, হে আদম! যদি মুহাম্মদ না হত, তবে আমি তোমাকে সৃষ্টি করতাম না। (মুসতাদরিকে হাকীম)
হাদীসঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যখন আদম (আঃ) নিষিদ্ধ গাছের ফল আহার করে অপরাধী হলেন তখন তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন। হে আমার রব! আমি তোমার সমীপে পাক আদমকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আদম! মুহাম্মদের নাম তুমি আমার গুনাহ মার্জনা করে দাও।
আল্লাহপাক আদমকে জিজ্ঞেস করলেন, হে আদম! মুহাম্মদের নাম তুমি জানলে কি করে। অথচ এখনও আমি তাকে বাহ্যিক দুনিয়ার সৃষ্টি করিনি। হযরত আদম (আঃ) আরজ করলেন, হে রব। আপনি আপন কুদরতে আমাকে সৃষ্টি করে যখন রুহ দিয়েছিলেন তখন উপরের দিকে তাকিয়ে আরশে আজীমের পাতায় লিখিত অবস্থায় দেখতে পেলাম। এতে আমি বুঝতে পারলাম যে, আপনার নিকট যে ব্যক্তি সবচেয়ে প্রিয় তাঁর নামই আপনার নামের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।
আল্লাহ পাক ইরশাদ করলেন- হে আদম! তুমি সত্যই বলছ। নিশ্চয় সমগ্র মাখলুক হতে তিনি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। তুমি যখন তাঁর ওছিলা দিয়ে প্রর্থনা করছ আমি তোমার প্রার্থনা কবূল করলাম। যদি মুহাম্মদ না হত তবে তোমাকেও সৃষ্টি করতাম না।
হাদীসঃ আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করে এ প্রার্থনা করার জন্য তাঁর হৃদয়ে এলহাম করলেন। হে আমার রব! আপনি আমার কুনিয়াত আবু মুহাম্মদ রেখেছেন কেন?
আদম (আঃ) উক্ত প্রার্থনা করলে আল্লাহ পাক বলেন, হে আদম! তুমি শির তোল। আদম শির তুলে আরশে আজীমের পর্দায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর নুর মুবারক দর্শন করেন। তিনি প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহ! এ কিসের নূর? ইরশাদ হল। এ নূর তোমার আওলাদের মধ্যে একজন নবীর। তাঁর নাম আছমানে আহমদ এবং যমীনে মুহাম্মাদ। তিনি না হলে তোমাকে দৃষ্টি করতাম না এবং আসমান যমীনও সৃষ্টি করতাম না।
আদম (আঃ) দেখতে পেলেন আরশের পায়ায় জান্নাতের বালাখানায় হুরদের কণ্ঠদেশে তুব বৃক্ষের পত্র ছিদরাতুল পত্রে, পর্দা সমূহে এবং ফেরেশতাদের চোখের মধ্যবর্তী স্থানে আল্লাহর নামের সাথে মুহাম্মদ (সাঃ) এর নাম আঁকা রয়েছে। অর্থাৎ কালামায়ে তৈয়্যেবা লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু মাহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর নবুওয়াত লাভের প্রায় ৩৬০ বছর পূর্বে কা’ব বিন লওয়াই তাঁর লোকদেরকে উপদেশ দিতেন যে, আমাদের বংশে একজন মহান নবী জন্মগ্রহণ করবেন।
তোমরা তাঁর যুগ পেলে অবশ্যই তাঁর আনুগত্য মেনে নিবে। কানান বিন খোজাইমাও তদ্রুপ উপদেশ দিয়েছিলেন এবং বলেছেন তাঁর নাম আহমদ। তিনি এক আল্লাহর বন্দেগী করবেন। নেককাজ, সদাচার প্রভৃতি প্রতি আহবান করবেন। তিনি সত্য দ্বীন প্রচার করবেন।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর ঊর্ধ্ব পূর্বপুরুষ ইলিয়াছ তাঁর পিতা মুজার স্বীয় পৃষ্ঠদেশ হতে হযরত ছাইয়্যেদুল আম্বিয়া তলবিয়া শুনতে পেতেন।
এমনিভাবে খোজায়মা, মুদরেকা, নাজার পূর্বপুরুষ স্ব-স্ব চোখে মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ) এর নূর মোবারক দর্শন করেন। বর্ণিত আছে যে, নাজার জন্ম লাভ করার পর তাহার পিতা নবজাত শিশুর পেশানীতে সাইয়্যেদুল মুরসালীন এর নূর মুবারক দর্শন করে অতিশয় আনন্দিত হলেন এবং উট জবেহ করে অতি ধুমধামের সাথে মেহমানদারী করেন।
ব্যাবিলনের রাজা নাচ্ছার যখন আরবের উপর আক্রমণ চালিয়েছিল তখন আল্লাহ পাক হযরত আরমিয়া (আঃ)-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন মায়াদ বিন আদনানকেও তিনি সাথে নিয়ে আরব চলে যেতে। যেন বুখতে নাচ্ছারের অত্যাচার হতে তিনি রক্ষা পান। আমি শীঘ্রই তাঁর পোশত হতে একজন নবী সৃষ্টি করব যার দ্বারা রাসূলদের আবির্ভাবের পরিসমাপ্তি ঘটাব।
আল্লাহর আদেশক্রমে মায়াদ বিন আদনান শামদেশে চলে যান। পরে বখতে নাচ্ছারের মৃত্যুর পর আরবে প্রত্যাবর্তন করেন।