হাবশী এক গোলামের দোয়ায় বৃষ্টি
কথিত আছে যে, একবার বনী ইস্রাইলে ক্রমাগত সাত বছর অনাবৃষ্টির ফলে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। পরে হযরত মূসা (আঃ) বনী ইস্রাইলের সত্তর হাজার মানুষ নিয়ে রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করলেন। আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে হযরত মূসা (আঃ) কে জানালেন, আমি কেমন করে তাদের দোয়া কবুল করব। তারা প্রকাশ্যে আমার নাফরমানী ও পাপচারে ডুবে রয়েছে। আমার আজাব ও গজব হতে একবারেই বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে। আমি যে বৃষ্টি দিতে পারি এ বিশ্বাস ও তাদের নেই। শুধু মুখে মুখেই তারা আমার নিকট প্রার্থনা করছে। হে মূসা! তুমি অমুক হাবসী গোলামের নিকট যাও। সে যদি এসে বৃষ্টির জন্য দোয়া করে তবে তার দোয়া কবূল করা হবে।
হযরত মূসা (আঃ) পথে বের হয়ে সেই হাবশী গোলামের সন্ধান করতে লাগলেন। কিন্তু কেউই তার সন্ধান বলতে পারল না। তিনি সেই গোলামের সন্ধান করে ফিরছেন। এমন সময় দেখতে পেলেন, একজন হাবশী গোলাম এদিকে আসছে। সেজদার কারণে তার কপালে মাটি লেগেছিল এবং তার গলায় ছিল একটি চাদর জড়ানো। হযরত মূসা (আঃ) খোদায়ী নূরের সাহায্য তাকে চিনতে পারলেন। তিনি এগিয়ে গিয়ে তার নাম জিজ্ঞেস করলেন। সে তার নাম বললেন, হযরত মূসা (আঃ) বললেন, আমি দীর্ঘ দিন যাবত তোমাকে সন্ধান করে ফিরছি। তুমি আমার সাথে চল, রহমতের বৃষ্টির জন্য দোয়া করবে। সে কোন প্রকার দ্বিমত না করে হযরত মূসা (আঃ) এর সাথে নিম্নরুপ দোয়া করল।
এলাহী! এটাতো তোমার কাজ নয়, তোমার স্বভাবও নয়। তোমার কি হল যে, মানুষকে শুকিয়ে ফেলছো? তোমার পানির ভান্ডারে কি ঘাটতি দেখা দিয়েছে, নাকি বায়ুমন্ডল তোমার আনুগত্য করছে না। তোমার ভান্ডার কি ফুরিয়ে গেছে। নাকি গুনাহগারদের উপর তোমার ক্রোধ আরো কঠোর হয়েছে? গুনাহগারদেরকে সৃষ্টি করার পূর্বে তুমি কি গাফফার ছিলে না? আর এখন তুমি এমন ভাব দেখাচ্ছ যেন কেউই তোমার রহমতের দারস্থ হতে পারবে না। নাকি আমরা কোথাও পালিয়ে যাব, এ আশঙ্কার আগেভাবেই আমাদেরকে শাস্তি দিতে চাচ্ছ?
অতঃপর হাবশী গোলামের দোয়ার রহমতে বৃষ্টি বর্ষন শুরু হল এবং সাথে সাথেই আল্লাহ পাকের হুকুমে সশ্য ক্ষেত্রগুলোতে ফসলের চারা অঙ্কুরিত হয়ে দ্বিপ্রহরের মধ্যেই তা প্রায় হাটু সমান হয়ে গেল। পরে সেই হাবশী হযরত মূসা (আঃ) এর সাথে সাক্ষাত করে বলল, দেখলেন আমি আল্লাহ পাকের সাথে কেমন ঝগড়া করলাম। আর তিনিও আমার সাথে কি ইনসাফ করলেন । আল্লাহ পাক ওহীর মাধ্যমে হযরত মূসা (আঃ) কে জানালেন যে, ঐ হাবশী গোলাম প্রতিদিন তিনবার আমার সাথে হাসে।