এক বুজুর্গ মেয়ের ঘটনা
হযরত আবুল কাশেম জোনায়েদ (রহঃ) বর্ণনা করেন, একবার আমি গভীর রাতে একাকী বাইতুল্লাহ শরীফ তিলাওয়াত করছিলাম, হঠাৎ দেখতে পেলাম, একটি যুবতী মেয়ে আরবী ভাষায় বয়াত গেয়ে তাওয়াফ করছে। বয়াত গুলোর অর্থ হল।
হে পরওয়ারদিগার! এতকাল আমি আমার অন্তরের মোহাব্বত ও ভালোবাসা লুকিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন আর আমি লুকিয়ে রাখতে পারছি না। তোমার স্মরণে আমার অন্তরে সর্বদা বেকারার হচ্ছে। আমি যখনই তোমার নৈকট্যের ইচ্ছা করি, তখনই আমি তোমাকে কাছে পাই। আর তোমার নূরের তাজাল্লীতে আমি ফানা ও আত্মাহারা হয়ে যাই।
হযরত জোনায়েদ (রহঃ) বলেন, আমি ঐ মেয়েকে ডেকে বললাম, বেটী! তুমি বাইতুল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে ভালোবাসার কবিতা পাঠ করছ? তুমি কি আল্লাহকে ভয় কর না। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, জোনায়েদ! আল্লাহর ভয় না হলে কি এই গভীর রাতে সুখনিদ্রা ত্যাগ করে আল্লাহর ঘর জিয়ারতে আসতে পারতাম? আল্লাহর ভয়ই তো আমাকে স্বদেশ ত্যাগ করিয়ে এখানে টেনে এনেছে? তার এশক ও মোহাব্বতেই আমি পাগলিনীর মত ঘুরে ফিরছি। বল জোনায়েদ! তুমি কি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ কর, নাকি বাইতুল্লাহর রবের তাওয়াফ কর? আমি বললাম, আমি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করি। এটা শুনে সে আকাশের দিকে মুখ তুলে বলল, সুবহানাল্লাহ। হে পরওয়ারদেগার! তোমার কি শান; মাটির তৈরি মানুষ মাটিরই তাওয়াফ করছে। হযরত জোনায়েদ (রহঃ) বলেন, তার এই বক্তব্য শুনে আমার মনে এমন আসর হল যে, আমি হুশ হারিয়ে ফেললাম। জ্ঞান ফিরে পাওয়ার পর আর সেই মেয়েকে দেখতে পেলাম না।