মালঞ্চ –সপ্তম পর্ব– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গল্পের অষ্টম অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

“আদিত্য ওর সঙ্গে এল দেখে সরলা বললে, “কেন এলে। ভালো করো নি। ফিরে যাও। আমার সঙ্গে তোমাকে এমন করে দেব না জড়াতে।”

“তুমি দেবে কি না সে তো কথা নয়, জড়িয়ে যে গেছেই। সেটা ভালো হোক বা মন্দ হোক তাতে আমাদের হাত নেই।”

“সে-সব কথা পরে হবে, ফিরে যাও, রোগীকে শান্ত করো গে।”

“আমাদের এই বাগানে আর-একটা শাখা বাড়াব সেই কথাটা—”

“আজ থাক্‌। আমাকে দু-চার দিন ভাববার সময় দাও, এখন আমার ভাববার শক্তি নেই।”

রমেন এসে বললে, “যাও দাদা, বউদিকে ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দাও গে, দেরি কোরো না। কিছুতেই কোনো কথা কইতে দিয়ো না ওঁকে। রাত হয়ে গেছে।”

আদিত্য চলে গেলে পর সরলা বললে, “শ্রদ্ধানন্দ পার্কে কাল তোমাদের একটা সভা আছে না ?”

“আছে।”

“তুমি যাবে না ?”

“যাবার কথা ছিল। কিন্তু এবার আর যাওয়া হল না।”

“কেন।”

“সে কথা তোমাকে বলে কী হবে।”

“তোমাকে ভীতু বলে সবাই নিন্দে করবে।”

“যারা আমায় পছন্দ করে না তারা আমায় নিন্দে করবে বৈকি।”

“তা হলে শোনো আমার কথা, আমি তোমাকে মুক্তি দেব। সভায় তোমাকে যেতেই হবে।”

“আর-একটু স্পষ্ট করে বলো।”

“আমিও যাব সভায় নিশেন হাতে নিয়ে।”

“বুঝেছি।”

“পুলিসে বাধা দেয় সেটা মানতে রাজি আছি কিন্তু তুমি বাধা দিলে মানব না।”

“আচ্ছা বাধা দেব না।”

“এই রইল কথা ?”

“রইল।”

“আমরা দুজন একসঙ্গে যাব কাল বিকেল পাঁচটার সময়।”

“হাঁ যাব, কিন্তু ঐ দুর্জনরা তার পরে আমাদের আর একসঙ্গে থাকতে দেবে না।”

এমন সময় আদিত্য এসে পড়ল। সরলা জিজ্ঞাসা করলে, “ও কী, এখনই এলে যে বড়ো!”

“দুই-একটা কথা বলতে বলতেই নীরজা ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ল, আমি আস্তে আস্তে চলে এলুম।”

রমেন বললে, “আমার কাজ আছে চললুম।”

সরলা হেসে বললে, “বাসা ঠিক করে রেখো, ভুলো না।”

“কোনো ভয় নেই। চেনা জায়গা।” এই বলে সে চলে গেল।

গল্পের অষ্টম অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!