অবশ্যই দুনিয়া ত্যাগ করতে হবে
সংসার ত্যাগী এক বুজুর্গ বলেছেন, একবার আমি জাহেদের এক কাফেলার সাথে এক বিরান ভূমিতে ভ্রমন করছিলাম। তখন জোহর নামাযের সময়, অযূর কোন ব্যবস্থা ছিল না। আমরা আল্লাহ পাকের দরবারে পানির জন্য দোয়া করলাম। আমাদের দোয়া শেষ হওয়ার আগেই দূরে কি যেন একটা দেখতে পেলাম। তারপর সেদিকে যাওয়ার ইচ্ছা করলাম।
আল্লাহ পাক আমাদের জন্য পথকে সংক্ষিপ্ত করে দিলেন যার দরুন আমরা সেখানে মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে গেলাম। অতঃপর আমরা দেখতে পেলাম, সেখানে একটি সুবিশাল প্রাসাদ এবং এর চতুর্পাশে সুন্দর সুন্দর বাগান এবং প্রবাহমান কয়েকটি নহর বা নদী।
আমরা আল্লাহ পাকের শুকরিয়া আদায় করে সে নহর বা নদীতে অযূ করে নামায আদায় করে নিলাম। নামায শেষে প্রাসাদের নিকট গিয়ে দেখলাম এর গায়ে নিম্নের দুটি ছন্দ শোভা পাচ্ছে-
অনুবাদঃ এই সকল ভবনে যারা বসবাস করত, আমি তাদের সাক্ষাত পেয়েছি। তারা বিলাসিতায় নিমগ্ন ছিল এবং কোন কিছুরই আশঙ্কা করছিল না। কিন্তু একদিন সময়ের বিবর্তন তাদেরকে আহ্বান করলে তারা কবরে চলে গেল। আজ তারাও নেই এবং তাদের কোন চিহ্নও নেই। মহলের ভেতর ঢুকে স্বর্ণের পাটাতনে দেখতে পেলাম সেখানে লিখা ছিল-
ভাবার্থঃ একদিন এ মহলের অধিবাসীরা মানুষের ঈর্ষার পাত্র ছিল। পরম সুখে তারা দিনযাপন করেছে আর তাদের ভয়ে মানুষ ছিল কম্পমান। কিন্তু একদিন যখন মৃত্যু এসে তাদের দুয়ারে হাজির হল তখন তাকে কেউই বাধা দিয়ে রাখতে পারল না। অবেশেষে সে মৃত্যুবরণ করল এবং তার মাথার মুকুট খসে পড়ল। একদিন এ মহল বন্ধু-বান্ধবে সরগরম ছিল। কিন্তু আজ তাদের অন্তর্ধানের ফলে এখানে ভীতি বিরাজ করছে।
বুজুর্গ বললেন, আমি আরও একটু এগুলাম, সামনে দেখলাম একটি গম্বুজের মধ্যস্থলে অবস্থিত একটি কবরের গায়ে লেখা ছিল-
ভাবার্থঃ এসব লোকেরা পাহাড়ের চূড়ায় থাকত এবং শক্তিশালী লোকেরা তাদেরকে হেফাজত করত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পাহাড়ের চূড়া তাদের কোন কাজে আসল না। হায়! তারা তাদের আশ্রয়স্থল হতে কেমন খারাপ গহ্বরে অবতরণ করল। দাফন করার পর এক ব্যক্তি চিৎকার করে তাদেরকে জিজ্ঞেস করল।
তোমাদের মূল্যবান পোষাক ও মুকুট সিংহাসনের কি হল? তোমাদের সে চেহারার কি হল যা বিভিন্ন নাজ নেয়ামতে প্রতিপালিত হয়ে পর্দার বেষ্টনীতে থাকত। তার প্রশ্নের পর কবর জবাব দিল এখন তার চেহারায় কিড়া কিলবিল করছে। জীবনে তারা বহু নাজ নেয়ামত ভোগ করেছে। এখন তাদেরকে ভোগ করছে।