বংকা স্যারের ব্যঙ্গচিত্র — শৈবাল চক্রবর্তী -৩য় পর্ব

গল্পের চতুর্থ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

সবে বোর্ডে একটা আঁচড় টেনেছে এমন সময় চক্কোতিপাড়ার বিম্ব বলে ওঠে, এই কি করছিস?’

চাপা গলায় ধমক দেয় তাকে ভোম্বল, ‘তুই চুপ কর। হাতের লেখা কর মন দিয়ে।

‘ দু বন্ধুর আলোচনা তখন একটু অন্যদিকে মোড় নিয়েছে। খানিক আগে এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে, সঙ্গে ঝড়। এখন বৃষ্টি থেমে গেলেও মাঝে মাঝে দমকা বাতাস বইছে।

রাজেন জিজ্ঞেস করেন, আজ কটায় উঠবে তুমি ? আজ অমাবস্যা জানো তো?

আকাশের অবস্থাও সুবিধের নয়। এমন দিনেই তো ওঁদের- বলেই ঢোঁক গেলেন তিনি।

বংকিম-স্যার তাড়াতাড়ি রাজেন ভটচাজের কাছে সরে আসেন।

বড় বড় চোখ করে প্রশ্ন করেন, ‘বলছ কি রাজু? নতুন কিছু দেখলে নাকি?

এই এক জায়গায় দুই বন্ধুর ভারি মিল। দুজনেরই বেজায় ভূতের ভয় ।

রাজেন ডাকসাইটে হাফব্যাক ছিলেন কিন্তু অন্ধকার রাস্তায় যদি পেছন থেকে ওঁর পিঠে কেউ হাত রাখে তবে উনি পেছনে না তাকিয়ে সোজা সামনে দৌড় মারেন।

ড়াহনে-বায়ে দেখে নিয়ে গলা নামিয়ে রাজেন বলেন, এই তো একটু আগে, রায়েদের বাঁশঝাড়ে পাশ দিয়ে আসছি—’

‘কি ? কি দেখলে ?” বংকুবাবুর চোখ দুটো ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চায় যেন, সেই তালগাছের সমান উচু?যেটি তোমাকে প্রায়ই ধাওয়া করে?

রাজেন মাথা নাড়েন, “না হে সে না। এর অন্য একজন। আগে কখনও মোলাকাত হয়নি। মনে হয় বেপাড়ার ; কেমন করে এ গাঁয়ে চলে এসেছে। ঘোমটা মাথায়, আসশেওড়া গাছটার নিচে দাড়িয়ে আছে যেন ভদ্রঘরের বৌটি ।

যেই আমি সামনে এসেছি আমনি খোলা গলায় বলে ওঠে, কি তাস খেলতে যাওয়া হয়েছিল?

শোনামাত্তর আমি তো পাঁই পাঁই করে ছুট দিয়েছি। পেছনে শুনতে পাচ্ছি খিল খিল হাসি .এই দ্যোখো, এখনও গায়ে ঘাম দিচ্ছে।”

বংকিমবাবু দেখবেন কি, তার হাত-পা পেটের ভেতর সেধিয়ে গেছে। কঁদো কাঁদো গলায় বলে একি উৎপাত বল দিকি? আমাদের গ্রামের কটি ভূত নিয়েই হিমশিম খাচ্ছি আমরা তার ওপর অন্য গাঁয়ের ভূত। এখন তো বেঁচে থাকাই দায় হয়ে গিয়েছে দেখছি।

‘সেই কথাই তো বলছি, এক রামে রক্ষা নেই, সুগ্ৰীব দোসর, রাজেন ডিবে খুলে এক টিপ নস্যি নেন, তো তোমার সেই দেড়েবুড়ে? তার দেখা পচ্ছে ইদানীং?

‘রোজ রোজ, একদিনও বাদ নেই,

বংকিম-স্যার ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলেন একটা, এই যে ছাত্র পড়িয়ে ফিরব, দেখব তিনি ঠিক বসে আছেন পাঁচিলের ওপর—’

‘ওটি কে জানো তো? রাজেন বিজ্ঞের মতো মাথা নাড়েন, ‘তুমি যেমন বর্ণনা দিচ্ছ তাতে আমার ঘোরতর সন্দেহ ইনি স্বয়ং ব্রহ্মদৈত্য। ওঁকে দেখে বুড়ো বলে অশ্রদ্ধা করা ঠিক নয়। দুটি হাত জোড়া করে ভক্তিভরে কপালে ঠেকান রাজেন ।

 

গল্পের চতুর্থ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সম্পর্কিত পোস্ট

দুঃখিত!