চার মহিষের ডাক-৩য় পর্ব

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

লাফিয়ে উঠল সে। চারটি মহিষ একসাথে সমান তালে দৌড়াচ্ছে আর চিৎকার করছে। মঈনুলের বুঝতে বাকি রইল না মহিষ চারটা ভারত থেকে পালিয়ে এসছে, অথবা চোরের হাত থেকে ছুটে এসেছে। মুতু বাদ দিয়ে মঈনুল মহিষ চারটাকে আটকানোর চেষ্টা করল। কিন্তু এত বড় বড় মহিষ তার পক্ষে আটকানো সম্ভব না।

আটকাতে পারলে ভালোই হতো। চারটে মহিষের বাজার মূল্য কয়েক লাখ হবে। বর্ডার ক্যাম্পে আর থানা পুলিশের হাতে কিছু টাকা দিতে পারলেই চার মহিষের মালিক বনে যেত সে।

কিন্তু তা সম্ভব নয়। কারণ মঈনুলের হাতে টাকাও নেই, চারটে মহিষ ধরার শক্তিও নেই। সে তার ঘরে গিয়ে বিজিবিকে ফোন দেয়। সীমান্তে বাড়ি, বিপদে আপদে এগিয়ে আসে বিজিবি। তাই নাম্বারটা খুঁজে পেতে সময় লাগে না।
-স্যার চারটা মহিষ
-হ্যাঁ তো কী হয়েছে?
-স্যার আমার বাড়ির সামনে দিয়ে ক্যাম্পের দিকে ছুটে গেল।
দেখছি বলে হাবিলদার ফোনটা রেখে দেয়। মঈনুল বিছানায় বসে। চার চারটে মহিষ, যে ধরতে পারবে সেই মালিক। সে প্রথমে দেখে কিছু করতে পারল না। অবশ্য চেয়ারম্যানকে খবরটা দিলে বকশিস পেতে পারে।

কিন্তু চেয়াম্যান অত্যন্ত ধূর্ত। চারটে মহিষ একাই নিয়ে নেবে। নামমাত্র টাকা দিয়ে। তা হোক, চেয়ারম্যান তো খুশি হবে। ভবিষ্যৎ আছে না। মঈনুল চেয়ারম্যানের নাম্বারে কল দেয়।
প্রায় দুদিন পর এরকম একটু আরাম করছে চারটে মহিষ। কাঁঠাল গাছের ছায়ায় ঠনঠনে মাটিতে পা ছড়িয়ে বেশ আরাম করে বসে আছে তারা।

সামনে অনেক খাবার।

বোরো ধানের খর। ভালোই লাগছে খেতে। কিছুক্ষণ আগে কাঁঠালের মথা দিয়েছিল। আহ কী মিষ্টি। এটা কোথায় তা তারা জানে না। তবে সবুজ জামা আর মোটা বুট জুতো পরা লোকদের খারাপ মনে হয়নি। তাই তারা চারজনই স্বেচ্ছায় তাদের হাতে ধরা দিয়েছিল। তা ছাড়া পেটে কিছু ছিল না বলে দৌড়ানো যাচ্ছিল না।

সব মানুষ তো আর খারাপ নয়। তবে একটু দূরে একটা গোল ঘর। সেই ঘরে কয়েকজন বসে আছে। মহিষদের দিকেই তাকিয়ে তাকিয়ে কথা বলছে তারা। মনে হচ্ছে তাদের নিয়েই। তবে আলাপের ঢং আর ইশারা দেখে মনে হচ্ছে আবার দরকষাকষি চলছে। একটা মোটর সাইকেল এসে থামল।

একজন চিকন আর লম্বা লোক বাইক থেকে নেমে ঘরে ঢুকতে যাচ্ছিলেন। ঘর থেকে কেউ একজন মহিষদের অবস্থান জানালে তিনি ঘরে না ঢুকে মহিষদের কাছে এলেন। চারটে মহিষকেই নিখুঁতভাবে দেখে আরেকজনকে ইশারা দিয়ে বললেন
-দুই আড়াই। কই সুবেদার কই ।
সুবেদার সাহেব ক্যাম্প থেকে বের হলেন। তারপর গোল ঘরে গিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। চেয়ারম্যান স্থানীয়ভাবে আইনের জটিলতায় না গিয়ে ক্যাম্পেই মহিষ চারটার নিলামের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করলেন।

তাহলে তার সুবিধা হয়। কিছুদিন পরেই বোনের বিয়ে। অনেক বড় দাওয়াত হবে। সারা ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ ভোজে অংশ নেবে। দুটো মহিষ লাগবে। অনেকেই মহিষের মাংস খায় না, তাতে কী? গরু বলে চালিয়ে দিলে কেউ টেরও পারবে না।

গল্পের শেষ অংশ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।

দুঃখিত!