যিনি মৃত্যু দেন তিনিই জীবন দান করেন-১ম পর্ব

জীবন মৃত্যু মহান আল্লাহর কুদরতি হাতে রয়েছে। অনেক সময় মহান আল্লাহ জীবন মৃত্যু সম্পর্কে এমনে কিছু কুদরত দেখান, যা দেখে বিবেক বুদ্ধি স্তম্ভিত হয়ে যায়।

১৮০৩ সালের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ায় একটি চুরির ঘটনা ঘটলো। একটি টেবিল চুরি হয়েছিল। সেই টেবিলের ড্রয়ারে রৌপ্য মুদ্রার একটি থলে ছিল। টাকার পরিমাণ ছিল এক হাজার। চোরদের ধরার জন্য একজন পুলিশ ধাওয়া করেছিল। চোরেরা সেই পুলিশকে মেরে ফেলেছিল।

সিডনি পুলিশ চোরদের অনুসন্ধান শুরু করল। অনেক সন্ধানের পর তারা একজন লোককে পাকড়াও করল। লোকটির নাম ছিল জোসেক স্যামুয়েল। লোকটির চালচলন ভালো ছিল না। তাছাড়া চুরি যাওয়া মুদ্রার কয়েকটি তার পকেটে পাওয়া গিয়েছিল। এই প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে পুলিশ কনস্টেবলের হত্যাকারী অভিহিত করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হল। লোকটি তার পক্ষে সাক্ষী জোগাড় করল। সাফাই স্বাক্ষীরা জানাল, যে সময় চুরি এবং পুলিশ হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সে সময় জোসেফ স্যামুয়েল ছিল ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। তার পকেট থেকে পাওয়া মুদ্রা সে এক জুয়া খেলায় জিতে পেয়েছিল।

পুলিশকে হত্যার অপরাধ প্রমাণের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির স্বীকারোক্তি প্রয়োজন। এ কারণে তাকে গ্রেফতারকারী পুলিশ এক কৌশল গ্রহণ করল। তারা জোসেফকে বলল তুমি যদি হত্যার অপরাধ স্বীকার কর তাহলে আমরা তোমাকে সহজে ছাড়িয়ে আনতে পারব। স্যামুয়েল পুলিশের কথা বিশ্বাস করে অপরাধ স্বীকার করে আদালতে যবানবন্দী দিল। বিচারক তাকে ফাঁসিতে মৃত্যুর আদেশ দিলেন।

১৮০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের কোন এক দিন জোসেফ স্যামুয়েলকে ফাঁসি দেওয়ার তারিখ, দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হল। সন্দেহবশতঃ পুলিশ আইজাক সিমন্ড নামক অন্য এক ব্যক্তিকেও গ্রফতার করেছিল। পুলিশ ধারণা করল যে, একাধিক ব্যক্তি এ অপরাধ করেছে। একারণে আইজাককেও অপরাধ স্বীকার করতে প্ররোচিত করল। কিন্তু এ ব্যক্তি ছিল জোসেফ স্যামুয়েলের চেয়ে চালাক। সে কিছুতেই হত্যার অপরাধ স্বীকার করল না। পুলিশ চোরদের দলবদ্ধ গ্রেফতার করতে সচেষ্ট ছিল কিন্তু আইজাকের অস্বীকৃতির জন্য সেটা সম্ভব হল না। প্রভোষ্ট মার্শাল আইজাককে হত্যার অপরাধ স্বীকারে অসম্মত দেখে ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি আদেশ দিলেন যে, জোসেফকে যেখানে ফাঁসি দেওয়া হবে সেখানে যেন আইজাককে উপস্থিত রাখা হয়। জোসেফের পরিণতি দেখে আইজাক হয়ত মানসিক ভারসম্য হারিয়ে হত্যার অপরাধ স্বীকার করবে।

যিনি মৃত্যু দেন তিনিই জীবন দান করেন-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন

You may also like...

দুঃখিত, কপি করবেন না।