অভিশপ্ত ক্লিনিকে

আমাদের গ্রামে একটা সরকারী ক্লিনিক

আছে, ১৯৯৮ইং সালের দিকে এটা নির্মাণ

করা হয়। এই ক্লিনিক টাকে ঘিরে অনেক

অলৌকিক ঘটনা আছে। আসলে ক্লিনিক

টা যেখানে নির্মাণ করা হয়েছে সেই

জায়গাটা ভালো ছিল না। একটা সময়

সেখানে রাতে তো দূরের

কথা এমনকি দিনের বেলায়ও মানুষ-জন

যেতে ভয় পেতো। কারণ সেখানে অনেক

ভয়ংকর ঘটনা ঘটতো। আজ আমি সেই

ক্লিনিকের নির্মাণের সময়

ঘটা একটি ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার

করব।

ক্লিনিক টা নির্মাণের জন্য একটা সময়

সরকারী ভাবে ১০জন

রাজমিস্ত্রিকে পাঠানো হল। ক্লিনিক

নির্মাণের জন্য ঐ জঙ্গল টাকে নির্বাচন

করা হল। জঙ্গলে অনেক গাব গাছ, তেঁতুল গাছ,

তাল গাছ, বট গাছ এবং আরও অন্যান্য গাছ

ছিল। ক্লিনিক নির্মাণের জন্য

আসা রাজমিস্ত্রি গুলো তাদের থাকার জন্য

ঐ জঙ্গলের কিছু গাছ কেঁটে পরিষ্কার

করে এবং সেখানে একটা ছোট ঘর বানায়।

এতে কিছু ছোট বট গাছ আর কিছু গাব গাছও

কাঁটা পড়েছিল। গাছ গুলোকাঁটার সময়

তারা কিছুই বুঝতে পারে না। কিন্তু

রাতে তারা সবাই যখন ঘুমাতে যাবে ঠিক

তখন অনেক গুলো বাচ্চা শিশুর কাঁন্নার

আওয়াজ শুনতে পায়। তারা আওয়াজ

শুনে যখন ঘর থেকে বেড় হয় দেখার জন্য

তখন সেই আওয়াজটি থেমে যায়। আবার

ঘরে ঢুকলে সেই আওয়াজটি শুরু হয়ে যায়।

এইঘটনায় তারা একটু ভয় পেয়ে যায়। তখন

তারা সবাই দোয়া-দূরুদ পড়ে ঘুমাতে যায়।

তারা যখন সবাই গভীর ঘুমে তখন তারা সবাই

স্বপ্নে দেখলো তাদের ঘরে একটা অপরিচিত

মানুষ ঘোমটা দিয়ে দাড়িয়ে আছে। সেই

মানুষটির চোখ গুলো অনেক ভিতরে ছিল, যেন

চোখ গুলো গলা। আর সেখান থেকে কি যেন

বের হচ্ছিল, অনেকটা জেলী ধরণের। তার মুখ

টা থেতলানো ছিল। যেন

হাতুরী পিটিয়ে মুখক্ষানা চুর্ণ-বিচুর্ণ

করে দেয়া হয়েছে। আর সেখান থেকে চির-

চির করে রক্ত পরছিল। মাথার খুলিটা এক

পাশ থেকে নেই। আর সেখানে কিযেন কিল-

বিল করছে। তার পা গুলোর সাথে পায়ের

পাতা নেই। সেই লোকটা বলতে লাগলো যে-

চলে যা.. কেন এসহেছিস তোরা..? চলে যা..

আমাদের থাকার জায়গা পরিষ্কার

করে তোরা থাকছিস? যা.. চলে যা।

বাচঁতে চাইলে চলে যা এখান থেকে। তখন

সবার ঘুম ভেঙ্গে গেল এক সাথে।

তারা সবাই খুব অবাক হলো কারণ একই স্বপ্ন

তারা সবাই এক সাথে কিভাবে দেখলো!!

একটু পর তারা আরও অবাক

এটা দেখে যে তাদের ঘরের যেই

জায়গাটাতে ঐ ভয়ংকর মানুষ

টাকে দেখেছিল সেখানে রক্ত আর জেলীর

মত কি যেন পরে আছে। তখন

তারা বুঝতে পারে এটা ভৌতিক কোন কিছু

হবে। তাই সারা রাত তারা আর

ঘুমাতে পারলো না। সকাল হতেই তারা এই

বেপারটি গ্রামের একজন

মুরব্বী কে জানালো। তখন সেই

মুরব্বী লোকটি একজন হুজুর ডেকে আনেন।

হুজুর এসে বললো- কি ধরণের

ঘটনা ঘটে আমি রাতে আপনাদের

সাথে থেকে দেখতে চাই। তারপর

দ্বিতীয়রাতে হুজুর তাদের সাথে থাকলো।

রাতে সবাই ঘুমিয়ে পরলো। মাঝ

রাতে একটা ভয়ংকর হাসিতে সবার ঘুম

ভেঙ্গে গেল। তারপর তারা দেখলো যে যেই

হুজুর কে তারা নিয়ে এসেছিল সে তার

বিছানায় নেই। সে তাদের

সামনে দাড়িয়ে হা… হা.. হা. করে হাসছে।

আর সেই সাথে তার রূপ পরিবর্তন হচ্ছে।

ধিরে ধিরে সে আগের

রাতে স্বপ্নে দেখা সেই ভয়ংকর মানুষ টির

মত রূপ নিল। তারপর সে তার

থেতলে যাওয়া মুখ দিয়ে বলতে লাগলো-

তোরা কি ভেবেছিলি আমার জায়গায়

এসে হুজুর দিয়ে আমাকে তাড়াবি!

আমি তোদের কে আগেই সাবধান

করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তোরা আমার

কথা শুনিশনি। তাই আমি হুজুর

সেজে তোদের কাছে আসলাম। আজ

তোদের আর ক্ষমা করবো না। তারা এটা দেখে সবাই

জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। সকালে তাদের

কে ঘরের ভিতর থেকে বের

করে হসপিটালে নেওয়া হয়। আর তারা যেই

ঘরে ছিল তা সম্পূর্ণ এলো-মেলো অবস্থায়

ছিল। তারা সুস্থ হলে সবাই ঢাকায়

ফিরে যায়। কিছুদিন পর আবারও ক্লিনিকের

কাজ করার জন্য লোক পাঠানো হয়।

তারা রাতে আমাদের বাড়িতে থেকে সেই

ক্লিনিকের কন্সট্রাকশনের কাজ করে।

এখানেই শেষ নয়, ক্লিনিক নির্মাণের পরও

অনেক ভয়ংকর ঘটনা ঘটে..।।

 

"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভানুধ্যায়ী এবং সম্মানিত অবদানকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দুঃখিত!