এক ময়ুর ঢাকা শহরে এসে কাক প্রজাতিটিকে দেখে মুগ্ধ হয়ে গেল। এত বড় কম্যুনিটি – কত ভালমন্দ খায়, কি চমৎকার জায়গায় থাকে! এই পাখির মত না হতে পারলে জীবনে আর আছে কি? সে একজন কাককে গিয়ে বলল তার মনের বাসনার কথা।
বিচক্ষণ কাক বলল, আপনাদের জীবন তাহলে আমাদের মত হতে হবে। ময়ুর এক কথায় রাজি। কাকের পরামর্শে অনেক কষ্টে ময়ুর তার লেজের বাহারী পালকগুলো ঠুকরে ঠুকরে তুলে ফেলল।
এরপর মাথার চমৎকার ঝুটিটি ছিড়ে ফেলল। গায়ের লোম ছাটতে ছাটতে প্রায় শেভ করেই ফেলল।
দিন দশেক পর দেখা করল ময়ুর। প্রবীণ কাক ঠোঁট নেড়ে ঠোঁট নিয়ে আপত্তি জানলো। ময়ুর কাতর কণ্ঠে বলল এই ধারাল ঠোঁট দিয়ে আমি শিকার করি, সাপ মারি।
-আরে পঁচা-গলা খেতে এত ধারাল ঠোঁট লাগেনা।
ঠোঁট ঘষে সমান করার প্রেশক্রিপশন নিয়ে বাড়ি গেল ময়ুর। বাড়তি হোমওয়ার্ক হিসেবে কর্কশ কা-কা শব্দে কালোয়াতি প্র্যাকটিস দিয়ে পাড়া মাথায় তুলল।
– এবার চলবে তো?
– নাহ গায়ের রঙটা এখনো আমাদের মত হয়নি। রাস্তা ঠিক করার পিচে এক ডুব দিয়ে আস।
প্রথম কয়দিন বেশ গেল ময়ুরের। কিন্তু ময়ুর কাকদের মত খাবার চুরি করতে পারেনা। এত পঁচা খাবারও তার মুখে রোচেনা। কাকদের কেউই তাকে এখন ভাল চোখে দেখেনা। বিবাদ বাড়তেই লাগল। পিচে ডুব দেবার পর সে আর উড়তে পারেনা বললেই চলে। দু-চারটে লাঠির আঘাত খাবার পরেও সে পালিয়ে যেতে পেরেছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা।
পুরান ঢাকার টেলিফোন-ইন্টারনেট-ডিশ ইত্যাদির তারের জালে ফেঁসে গিয়ে সে বন্দী হল।
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।