হযরত ইদরীস (আঃ)

হযরত ইদরীস (আঃ) একদিকে যেমন জ্ঞান সম্পন্ন ছিলেন, তেমনি তিনি নানা গুণে গুণান্বিত ছিলেন। বেশির ভাগ সময়ই তিনি মানবিক শিক্ষা প্রদান এবং তাদের মাঝে ওয়াজ নসিহত করে কাটাতেন এবং ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকতেন। তিনি নিজের জামা-কাপড় নিজেই সেলাই করে পরতেন। অন্যের জামা-কাপড়ও সেলাই করে দিতেন কিন্তু সেজন্য তিনি কোন পারিশ্রমিক নিতেন না। তিনি সারা দিন দর্জির কাজ করতেন আর নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে আল্লাহর নামে জিকির করতেন।

হযরত ইদরীস (আঃ) এর জন্মস্থান সম্পর্কে ইতিহাসবিদদের মতপার্থক্য রয়েছে। কারো কারো মতে তিনি মিসরের কারিয়া মানফ, নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

ইউরোপীয় ঐতিহাসিকদের কারো কারো মতে তার নাম  আরমিস। কিন্তু তাদের এ অভিমতের সপক্ষে তার যথার্থ প্রামাণ উপস্থাপণ করতে পারিনি। কারো কারো মতে গ্রীক ভাষায় তার নাম তারসীম, ইবরানী ভাষায় তার নাম খনুখ এবং আরবী ভাষায় তার নাম মাখনুখ। তিনি জ্ঞান বিস্তারে খুব বেশি নিয়োজিত থাকতেন বলে তাঁকে ইদরীস নামে অভিহিত করা হয়েছে।

কেননা, ইদরিস শব্দের মূল ধাতুরুপ হচ্ছে দারসুন, যা জ্ঞানের অর্থ বহন করে। পবিত্র কোরআনে তাঁকে ইদরীস বলা হয়েছে। শেষোক্ত দলের মতানুসারে হযরত ইদরীস  (আঃ) এর শিক্ষকের নাম ছিল গাওসা যায়মুন। গাওসা  ছিলেন মিসরের অধিবাসী। ইতিহাসবিদরা এ সম্পর্কে অধিক কিছু না বললেও একথা দৃড়তার সাথে স্বীকার করেন যে, তিনি মিসরে প্রেরিত নবীদের একজন। তারা গাওসা যায়মুনকে দ্বিতীয় ইদরীস এবং হযরত ইদরীসকে তৃতীয় ইদরীস নামে উল্লেখ করেন তাদের মতে, গাওসা যায়মুন অর্থ নেককার পূণ্যবান। তাদের আলোচনার ধারাবাহিকতা দৃষ্টে ইদরীন ইদরীস শব্দের উচ্চারণ বিভ্রাট বলেই অনুভূত হয়।

ইতিহাসবিদরা তৃতীয় দলের মতানুসারে ইদরীস (আঃ) এর জন্ম ইরাক দেশের বাবেল শহরে হয়। এ শহরটি দজলা ও ফোরাত নদীর তীরে অবস্থিত। এটি প্রাচীন ইরাকের একটি শহর। এখানেই তিনি লালিত-পালিত হন  এবং হযরত শীস (আঃ) এর নিকট শিক্ষা লাভ করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা শাহরেস্তনীর মতানুসারে ইউরোপীয় একজন ঐতিহাসিক উল্লিখিত গাওসা যায়মুন এবং হযরত শীস (আঃ) একই বক্তি।

Written By

More From Author

You May Also Like

শেয়াল ও মুরগি

এক বাগানের একটি খাঁচায় একপাল মুরগিছানা থাকত ওদের মায়ের সঙ্গে। ওরা ছিল বেশ শান্ত-সুবোধ। কেউ…

ছাগল ও সিংহ

ক্লাসে কিছু ছাত্র থাকে যারা- যেমন বুদ্ধিমান তেমনি জ্ঞানী। আবার কিছু ছাত্র আছে যাদের স্মৃতি…

হাতেম তাঈ’র মহানুভবতা

হাতেম তাঈ ছিলেন তৎকালীন আরবের ইয়েমেন প্রদেশের একজন অত্যন্ত জ্ঞানী ও নিরহংকারী ব্যক্তি। সাধারণ জীবন-যাপনকারী…

হযরত ইদরীস (আঃ)

হযরত ইদরীস (আঃ) একদিকে যেমন জ্ঞান সম্পন্ন ছিলেন, তেমনি তিনি নানা গুণে গুণান্বিত ছিলেন। বেশির ভাগ সময়ই তিনি মানবিক শিক্ষা প্রদান এবং তাদের মাঝে ওয়াজ নসিহত করে কাটাতেন এবং ইবাদত-বন্দেগীতে লিপ্ত থাকতেন। তিনি নিজের জামা-কাপড় নিজেই সেলাই করে পরতেন। অন্যের জামা-কাপড়ও সেলাই করে দিতেন কিন্তু সেজন্য তিনি কোন পারিশ্রমিক নিতেন না। তিনি সারা দিন দর্জির কাজ করতেন আর নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে আল্লাহর নামে জিকির করতেন।

হযরত ইদরীস (আঃ) এর জন্মস্থান সম্পর্কে ইতিহাসবিদদের মতপার্থক্য রয়েছে। কারো কারো মতে তিনি মিসরের কারিয়া মানফ, নামক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

ইউরোপীয় ঐতিহাসিকদের কারো কারো মতে তার নাম  আরমিস। কিন্তু তাদের এ অভিমতের সপক্ষে তার যথার্থ প্রামাণ উপস্থাপণ করতে পারিনি। কারো কারো মতে গ্রীক ভাষায় তার নাম তারসীম, ইবরানী ভাষায় তার নাম খনুখ এবং আরবী ভাষায় তার নাম মাখনুখ। তিনি জ্ঞান বিস্তারে খুব বেশি নিয়োজিত থাকতেন বলে তাঁকে ইদরীস নামে অভিহিত করা হয়েছে।

কেননা, ইদরিস শব্দের মূল ধাতুরুপ হচ্ছে দারসুন, যা জ্ঞানের অর্থ বহন করে। পবিত্র কোরআনে তাঁকে ইদরীস বলা হয়েছে। শেষোক্ত দলের মতানুসারে হযরত ইদরীস  (আঃ) এর শিক্ষকের নাম ছিল গাওসা যায়মুন। গাওসা  ছিলেন মিসরের অধিবাসী। ইতিহাসবিদরা এ সম্পর্কে অধিক কিছু না বললেও একথা দৃড়তার সাথে স্বীকার করেন যে, তিনি মিসরে প্রেরিত নবীদের একজন। তারা গাওসা যায়মুনকে দ্বিতীয় ইদরীস এবং হযরত ইদরীসকে তৃতীয় ইদরীস নামে উল্লেখ করেন তাদের মতে, গাওসা যায়মুন অর্থ নেককার পূণ্যবান। তাদের আলোচনার ধারাবাহিকতা দৃষ্টে ইদরীন ইদরীস শব্দের উচ্চারণ বিভ্রাট বলেই অনুভূত হয়।

ইতিহাসবিদরা তৃতীয় দলের মতানুসারে ইদরীস (আঃ) এর জন্ম ইরাক দেশের বাবেল শহরে হয়। এ শহরটি দজলা ও ফোরাত নদীর তীরে অবস্থিত। এটি প্রাচীন ইরাকের একটি শহর। এখানেই তিনি লালিত-পালিত হন  এবং হযরত শীস (আঃ) এর নিকট শিক্ষা লাভ করেন। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক আল্লামা শাহরেস্তনীর মতানুসারে ইউরোপীয় একজন ঐতিহাসিক উল্লিখিত গাওসা যায়মুন এবং হযরত শীস (আঃ) একই বক্তি।

Written By

More From Author

You May Also Like

বাঁদর আর পাতিহাঁস

একদিন একটা বাঁদর গাছের ডালে বসে ছিল। হঠাৎ এক পাতিহাঁস এসে বলল,— প্যাঁক প্যাঁক, বাঁদর…

নামাজের মাহাত্ম্য

এক বিবাহিত সুন্দরি মহিলা ছিলেন। তার শশুর-শাশুড়ী ছিলেন না। তার স্বামী ছিলেন ব্যবসায়ী। তাই ব্যবসার…

সদ্য বিবাহিত সাদ (রা) -এর শাহাদাত বরণ

সাদ আল আসওয়াদ আস-সুলুমী (রা) ছিলেন গরীব, গায়ের রঙ কালো। কেউ তাঁর কাছে নিজের মেয়েও…