তালুত ও জালুতের কাহিনী-১ম পর্ব

এমেলেকাদের মনোনীত রাজার নাম ছিল জালুত। সে ছিল অত্যন্ত অত্যাচারি রাজা। বনি ইসরাইলদের প্রতি সে ভয়ানক অত্যাচার করত। তাদের ধন-সম্পদ সবই কেড়ে নিয়েছিল। তাদের উপর নিম্ন মানের কাজ চাপিয়ে দিয়েছিল। বনি ইসরাইলদের মধ্যকার সুন্দরী রমনীদিগকে জোর পূর্বক তার রাজমহলে নিয়ে যেত।  জালুতের অত্যাচারে বনি ইসরাইলরা অধিকাংশই দেশ ত্যাগ করে বাইতুল মোকাদ্দাসে আশ্রয় নিল। হযরত  শামুয়েল (আঃ) সেখানেই ছিলেন। 

বনি ইসরাইলরা এ সময় একজন শক্তি শালী বাদশার আবির্ভাবের জন্য হযরত শামুয়েল (আঃ) নিকট  প্রার্থনা করল। হযরত শামুয়েল (আঃ) বিনি ইসরাইলদের দেখে আর  সহ্য করতে পারলেন না। তাই তিনি আল্লাহর দরবারে একজন  সাহসী, শক্তিশালী ও ধর্মপরায়ণ বাদশার আবির্ভাবের জন্য প্রার্থনা করলেন।

আল্লাহ তায়ালা নবীর দোয়া কবুল করে জিব্রাইল (আঃ) নবীর নিকট  প্রেরণ করে এক খানি মাপ কাটি দিলেন। বনি ইসরাইলদের মধ্যে যিনি  এ মাপ কাটির বরাবর হবে তিনি বনি ইসরাইল এর বাদশা হবে। এ ঘোষণার পরে একাধারে সমস্ত মানুষ মাপতে আরম্ভ করল। 

একদিন এক মেষ রাখাল এসে যখন মাপ দিল তখন তার মাপ কাঠির বরাবর  হল। তার নাম ছিল তালুত।  হযরত শামুয়েল (আঃ) তাকে কিছু প্রশ্ন করে পরীক্ষা করে নিলেন।  অতপর এই ব্যক্তি কে বনি ইসরাইলের বাদশা  বলে ঘোষণা দিলেন। নবী তাকে জালুতের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে যুদ্ধ করার কথা বললেন, তালুত এক বাক্যে তা স্বীকার করে সেই মুহুর্তে  থেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি আরম্ভ করে দিলেন।   

নবী বনি ইসরাইলদেরকে তালুতের সাথে যুদ্ধ যাত্রার জন্য আদেশ দিলেন। অনেকে তালুত কে মেষ রাখাল বলে বিদ্রুপ করল। নবী তাদের কে বললেন, আল্লাহর  তায়ালার পক্ষে থেকে তালুকে তোমাদের নেতা করে পাঠান হয়েছে। অতএব বিনা প্রতিবাদে  তার পিছনে সারি বন্ধ হও। যদি তোমরা এবারের যুদ্ধ যাত্রার কোন রুপে অবহেলা প্রদর্শন কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের কে পুরানায় দুঃখ-কষ্ট নিপতিত করবেন।     

তখন তোমরা একটা পশুর মর্যাদাও লাভ করতে সক্ষম হবে না। মৃগাল শেয়াল এর ন্যায় ঘৃনার পাত্র হিসাবে জঘন্য পরিণতির দিকে অগ্রসর হবে। কেউ তা রোধ করতে পারবে না।

বনি ইসরাইলেরা চিরদিনই টেরা বুদ্ধির লোক ছিল। এবারেও তারা পূর্ব পুরুষের স্বভাব পরিত্যাগ করতে পারল না।  তারা নবী কে বলল, তালুত যে আল্লাহর মনোনীত বাদশা তার কোন উপযুক্ত প্রমান দিন।  তাহলে আমরা তার তাবেদারী করে যাব। কোন দ্বিমত পোষণ করব না।

তালুত ও জালুতের কাহিনী-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

Written By

More From Author

তালুত ও জালুতের কাহিনী-১ম পর্ব

এমেলেকাদের মনোনীত রাজার নাম ছিল জালুত। সে ছিল অত্যন্ত অত্যাচারি রাজা। বনি ইসরাইলদের প্রতি সে ভয়ানক অত্যাচার করত। তাদের ধন-সম্পদ সবই কেড়ে নিয়েছিল। তাদের উপর নিম্ন মানের কাজ চাপিয়ে দিয়েছিল। বনি ইসরাইলদের মধ্যকার সুন্দরী রমনীদিগকে জোর পূর্বক তার রাজমহলে নিয়ে যেত।  জালুতের অত্যাচারে বনি ইসরাইলরা অধিকাংশই দেশ ত্যাগ করে বাইতুল মোকাদ্দাসে আশ্রয় নিল। হযরত  শামুয়েল (আঃ) সেখানেই ছিলেন। 

বনি ইসরাইলরা এ সময় একজন শক্তি শালী বাদশার আবির্ভাবের জন্য হযরত শামুয়েল (আঃ) নিকট  প্রার্থনা করল। হযরত শামুয়েল (আঃ) বিনি ইসরাইলদের দেখে আর  সহ্য করতে পারলেন না। তাই তিনি আল্লাহর দরবারে একজন  সাহসী, শক্তিশালী ও ধর্মপরায়ণ বাদশার আবির্ভাবের জন্য প্রার্থনা করলেন।

আল্লাহ তায়ালা নবীর দোয়া কবুল করে জিব্রাইল (আঃ) নবীর নিকট  প্রেরণ করে এক খানি মাপ কাটি দিলেন। বনি ইসরাইলদের মধ্যে যিনি  এ মাপ কাটির বরাবর হবে তিনি বনি ইসরাইল এর বাদশা হবে। এ ঘোষণার পরে একাধারে সমস্ত মানুষ মাপতে আরম্ভ করল। 

একদিন এক মেষ রাখাল এসে যখন মাপ দিল তখন তার মাপ কাঠির বরাবর  হল। তার নাম ছিল তালুত।  হযরত শামুয়েল (আঃ) তাকে কিছু প্রশ্ন করে পরীক্ষা করে নিলেন।  অতপর এই ব্যক্তি কে বনি ইসরাইলের বাদশা  বলে ঘোষণা দিলেন। নবী তাকে জালুতের বিরুদ্ধে অনতিবিলম্বে যুদ্ধ করার কথা বললেন, তালুত এক বাক্যে তা স্বীকার করে সেই মুহুর্তে  থেকে যুদ্ধের প্রস্তুতি আরম্ভ করে দিলেন।   

নবী বনি ইসরাইলদেরকে তালুতের সাথে যুদ্ধ যাত্রার জন্য আদেশ দিলেন। অনেকে তালুত কে মেষ রাখাল বলে বিদ্রুপ করল। নবী তাদের কে বললেন, আল্লাহর  তায়ালার পক্ষে থেকে তালুকে তোমাদের নেতা করে পাঠান হয়েছে। অতএব বিনা প্রতিবাদে  তার পিছনে সারি বন্ধ হও। যদি তোমরা এবারের যুদ্ধ যাত্রার কোন রুপে অবহেলা প্রদর্শন কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের কে পুরানায় দুঃখ-কষ্ট নিপতিত করবেন।     

তখন তোমরা একটা পশুর মর্যাদাও লাভ করতে সক্ষম হবে না। মৃগাল শেয়াল এর ন্যায় ঘৃনার পাত্র হিসাবে জঘন্য পরিণতির দিকে অগ্রসর হবে। কেউ তা রোধ করতে পারবে না।

বনি ইসরাইলেরা চিরদিনই টেরা বুদ্ধির লোক ছিল। এবারেও তারা পূর্ব পুরুষের স্বভাব পরিত্যাগ করতে পারল না।  তারা নবী কে বলল, তালুত যে আল্লাহর মনোনীত বাদশা তার কোন উপযুক্ত প্রমান দিন।  তাহলে আমরা তার তাবেদারী করে যাব। কোন দ্বিমত পোষণ করব না।

তালুত ও জালুতের কাহিনী-২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন  

Written By

More From Author

You May Also Like

ভাঙ্গা খেলনার গল্প

রাতুল ছিল তার বাবা-মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। তার কোনো কিছুরই অভাব ছিল না। সে যা…

সীতাভোগ খাওয়ার জ্বর

গোপাল আর তার প্রাণের বন্ধু নেপাল নৌকায় করে একবার চাঁদপুর যাচ্ছিল। নৌকোয় ছয়জন মাঝি ছাড়া…

লোকসান দু’পয়সা

গোপাল একবার নদীর ঘাটে ঘাটের ইজারা নিয়েছিল। নদীর ফেরী ঘাটের ইজারাদার গোপাল ভাড়া ছয় পয়সা…