আপনি যখন শিশু ছিলেন, তখন কি আপনি ভূতের উপর বিশ্বাস করতেন না? রাতের বেলায় অদ্ভূত শব্দ শুনে কি ভীত হতেন না? আপনার শিশু বয়সে ভুত নিয়ে ভয়টি ছিল বাস্তব। শিশু বয়সে ভূতের ভয়ে আপনার শারীরিক পরিবর্তনও দেখা যেত। মুখ শুকিয়ে যেত, হার্টবিট বেড়ে যেত, ঘাম দেখা যেত। অথচ এই বয়সে, যখন আপনি শিশুবেলার ভূতের ভয় নিয়ে চিন্তা করেন, তখন নিশ্চয়ই হাসি আসে। কত অবাস্তব ছিল আপনার শিশুবেলার ভয়! অথচ অবাস্তব সেই ভয় তখন আপনার কাছে সত্যিকারের ভয় হয়ে, হার্টবিট বাড়িয়ে, মুখ শুকিয়ে, শরীরে ঘাম দেখা দিত।
আপনার সেই ভূতের ভয়টি একটি ভৌতিক কাহিনী ছাড়া আর কিছুই ছিল না। এটি ছিল শুধুই একটি মায়া, একটি অবাস্তব কল্পনা নির্ভর বিশ্বাস, যার কোনো মূল্য নেই। সেটা ছিল অবাস্তব কাহিনী নির্ভর একটি বাস্তব অনুভূতি। সে ক্ষেত্রে, অবাস্তব কিছু কাহিনী বিশ্বাস করার ফলে আপনার মনের মধ্যে কিছু বাস্তব ভয়ের অনুভূতি জাগ্রত হতো। তাহলে দেখুন, কিছু অবাস্তব কল্পনা গভীর বিশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিভাবে আপনার মধ্যে বাস্তব অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে এবং তার ফলে শারীরিক পরিবর্তনও ঘটাতে পারে।
ঠিক আছে, যখন আপনি শিশু ছিলেন, তখন ভূতের ভয়ে কাতর হলে কেউ আপনাকে দোষ দিত না। শিশুরা ভুতের ভয় পেলে বড়রা তাদেরকে বাহু দিয়ে জড়িয়ে নিত, যা-ও ঠিক।
কিন্তু যারা যথেষ্ট বয়সী হওয়া সত্বেও অহেতুক অনিশ্চয়তা ও ভয়ের কারণে উদ্বেগ ও আশংকায় কাতর হয়ে, তাদের সফলতার স্বপ্ন ত্যাগ করে— তাদেরকে আপনি কি বলবেন? শিশুবেলায় যেমন কল্পিত ভূতের ভয়ে হাত-পা জড়িয়ে আসত, তেমনি ভবিষ্যতের কোনো কাল্পনিক দুর্ঘটনা বা কল্পিত পরাজয়ের ভয়ে সফলতার পথে এগোতে আপনার হাত-পা আর আগ্রহী হয় না।
তাহলে দেখুন, ভবিষ্যতের কল্পিত ভয়ংকর ঘটনার চিন্তায় আপনার শরীর ও মনে যেমন উদ্বেগ, আশংকা ও অস্বস্তির প্রকাশ দেখা দেয়, একইভাবে ভবিষ্যতের সকল সমস্যা অতিক্রম করে সফলতা লাভের চিন্তা ও বিশ্বাস কি আপনাকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে না? ভাবুন তো, সবধরনের আজেবাজে ঘটনা ও দুনিয়ার যাবতীয় ভয়ংকর ঘটনা কল্পনা করার ক্ষমতা যদি আপনার থাকে, তাহলে সমস্যা অতিক্রম করে সফলতা লাভের কল্পনা করার ক্ষমতাও কি আপনার নেই? আপনার অবশ্যই আছে।
তাহলে আপনার ভয় পাওয়ার কু-অভ্যাসটি বদলান এবং আশাবাদী হয়ে, দৃঢ়চিত্তে সফলতার পথে এগিয়ে চলার সু-অভ্যাস গড়ে তুলুন। হতাশ হওয়ার অভ্যাসটি বাদ দিয়ে, আশাবাদী, আত্মবিশ্বাসী ও উদ্যমী হয়ে সফলতার ভাবনায় জেগে উঠুন। সাহস নিয়ে ভয়কে জয় করুন। বিশ্বাস করুন, কোনো ব্যাপারে যত বেশি ভয়, সেই বিষয়টি জয় করতে আনন্দও তত বেশি হবে। কাজেই “ভয়” আর ভয় নয়; ভয় হচ্ছে আপনার সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি পরীক্ষা। যত দ্রুত আমরা বাস্তবতার শিক্ষাটি মেনে জীবন যাপন করব, ততই স্বস্তিতে বাস করতে পারব।
কোনো দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে আবার ঘটতে পারে—এই দুশ্চিন্তায় নিরাপত্তাহীন ও অস্বস্তিকর জীবন যাপন করা কোনো সুবিবেচনার কাজ নয়। পরাজয়, উদ্বেগ, আতঙ্ক, আত্মগ্লানি ও হতাশার মতো ভয়ও একটি অভ্যাস মাত্র। জীবনে আমাদের এমন সময় আসে যখন আমরা নিজের মনেই বলে উঠি—
“আমি আর ভয়ে ভীত হয়ে বসে থাকতে চাই না। ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে আসুক, কণ্ঠে কাঁপুনি উঠুক, পেটের নাড়ী গুলিয়ে উঠুক, তবুও আমি আমার কাজে এগিয়ে যাব।”
ভয় পাওয়া সত্ত্বেও এগিয়ে যাওয়ার এই ছোট্ট সিদ্ধান্তটিই আপনার পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে। আপনার ব্যর্থতাকে সফলতায় পরিণত করতে পারে।
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
"আলোর পথ"-এ প্রকাশিত গল্পসমূহ ও লেখনী মূলত পাঠক, শুভাকাংখী এবং সম্মানিত আবেদনকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এই কনটেন্টগুলোর উপর আমরা কোনো মেধাসত্ত্ব (copyright) দাবি করি না। যদি কোনো গল্প, ছবি বা তথ্যের কপিরাইট সংক্রান্ত বিষয়ে আপনার প্রশ্ন, সংশয় বা আপত্তি থাকে, তাহলে অনুগ্রহ করে আমাদের যোগাযোগ পৃষ্ঠায় যোগাযোগ করুন। আমরা যথাযথ আইনানুগ পদ্ধতিতে বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।