নীল দরিয়ার রাস্তা
যখন সত্য ও মিথ্যা, মু’যিযা ও যাদুর চুড়ান্ত লড়াই ফেরআউন ও তার বংশীয়দের কোমড় ভেঙ্গে দিল এবং হযরত মূসা (আঃ)ও হযরত হারূন (আঃ) এর নেতৃত্ব গোটা বনী ঈসরাইল ঐক্যবন্ধ হয়ে গেল। তখন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে তারা কোন এক রাতে হিজরতের উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন। অতঃপর হযরত মূসা (আঃ) তাঁর লক্ষ লক্ষ অনুসারী নিয়ে ভুমধ্যসাগর তীরে উপনিত হলেন, তখন ফেরআউন তার বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাঁদেরকে ধরার জন্য দূর্বার গতিতে অগ্রসর হচ্ছিল। বনী ইসরাইল সম্প্রদায় চিৎকার করে বলতে লাগল এই বুঝি আমাদেরকে ধরে ফেলল, এখন আর বাচার কোন পথ নেই। এ মুহুর্তে হযরত মূসা (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে ভূমধ্যসাগরের প্রবাহমান পানিতে হাতের লাঠি দ্বারা আঘাত করলেন, সাথে সাথে সমূদ্রের প্রবাহ স্তব্দ হয়ে পর্বতের মত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। তিনি বনী ইসরাইল সম্প্রদায়কে নিয়ে সাগরের অভ্যন্তরের পথে অবতরণ করলে মহান রব্বুল আলামীনের কুদরতে রাস্তাগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে পর্বতসম দণ্ডায়মান পানি স্বচ্ছ স্ফটিকের ন্যায় হয়ে যায়। ফলে তারা এক গোত্র অন্যগোত্রের নির্বিগ্নে ভুমধ্যসাগর পার হয়ে অপর প্রান্তে পাড়ি জমায়। ফেরআউন ও তার সৈন্য বাহিনী সেখানে পৌছে এ বিস্ময়কর দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হয়ে গেল। কিন্তু ফেরআউন স্বগর্বে সৈন্যদেরকে বলল এগুলো সবই আমার প্রতিপত্তির লীলা। একারণেই সমুদ্রের প্রবাহ স্তব্দ হয়ে রাস্তা তৈরি হয়ে গেছে। একথা বলে সে তৎক্ষণাৎ সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে নিজের ঘোড়া সমুদ্রের পথে চালিয়ে দিল এবং গোটা বাহিনীকে পশ্চতে আসার আদেশ দিল। যখন ফেরাউন তার সৈন্য বাহিনী সহ সামুদ্রিক পথের মাঝখানে এসে গেল এবং একটি লোকও তীরে রইল না, আর অপরদিকে হযরত মূসা (আঃ) তাঁর অনুসারীদের নিয়ে তীরে উঠল ঠিক এ মুহূর্তে সমুদ্রের সব অংশ পরস্পর মিলিত হয়ে গেল।
ফলে ফেরআউন ও তাঁর সৈন্য বাহিনী চিরদিনের জন্যে সাগরের অতল গহবরে হারিয়ে গেল।